বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: রাজ্যজুড়ে মিড ডে মিলে পড়ুয়াদের বঞ্চনার ছবি প্রায়শই উঠে আসে সংবাদ মাধ্যমের পাতায়। এবারও সেই নিয়মে ছেদ পড়ল না। স্কুলে ঢালাও সাজানো মিড ডে মিলের চাল, ডাল থেকে শুরু করে অন্যান্য রান্নার সরঞ্জাম! তা সত্ত্বেও খুদে পড়ুয়াদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে 5 টাকার বিস্কুটের প্যাকেট। মূলত এমন অভিযোগকে কেন্দ্র করেই কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নিল হাওড়া দাসনগরের বালটিকুড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্বর (Howrah Mid Day Meal)। জানা যাচ্ছে, এমন ঘটনায় স্কুলের প্রধান শিক্ষিকাকে ঘিরে ধরে প্রবল বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন অভিভাবকরা।
ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশবাহিনী
হাওড়ার দাসনগরের বালটিকুড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অন্তত 400 জন ছাত্র-ছাত্রী রয়েছেন। অন্যদিকে শিক্ষক শিক্ষিকার সংখ্যা মাত্র 14। অভিভাবকদের একটা বড় অংশের অভিযোগ, প্রতিদিন নিয়ম করে মিড ডে মিল পায় না পড়ুয়ারা। এদিকে স্কুলের ঘরে ঢালাও করে সাজানো রয়েছে চাল, ডাল থেকে শুরু করে রান্নার অন্যান্য সামগ্রী। খুদে পড়ুয়াদের কথা অনুযায়ী, তাঁরা সপ্তাহে মাত্র দুদিন মিড ডে মিলে ভাত ডাল থেকে শুরু করে অন্যান্য খাবার পান। বাকি দিনগুলিতে তাঁদের হাতে গুঁজে দেওয়া হয় 5 টাকার বিস্কুট।
অভিভাবকদের দাবি, গুদামে চাল ডাল থাকা সত্ত্বেও কেন পড়ুয়াদের বিস্কুট দেওয়া হচ্ছে এমনটা জানতে চাইলে স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও রকম প্রতিক্রিয়া আসেনি। বারবার তাদের তরফে জানানো হলেও নিজেদের অবস্থান থেকে সরেননি বিদ্যালয়ের কেউই। মূলত সে কারণেই মিড ডে মিলের বদলে বাচ্চাদের 5 টাকার বিস্কুট দেওয়ায় এবার বিক্ষোভে ফেটে পড়লেন অভিভাবকরা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, হাওড়ার ওই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা অনামিকা রায়কে ঘিরে শনিবার তুমুল বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন পড়ুয়াদের বাবা-মা থেকে শুরু করে আত্মীয়-স্বজন সকলেই। শুধু তাই নয়, বেশ কয়েকটি সূত্রের দাবি, রাগে অগ্নি শর্মা হয়ে ওঠা অভিভাবকদের একাংশ স্কুলের ওই প্রধান শিক্ষিকাকে আটকেও রেখেছিলেন বলে অভিযোগ। আর এই ঘটনা চাউর হতেই তড়িঘড়ি বিদ্যালয়ে পৌঁছয় বিরাট পুলিশবাহিনী। আর তারপরই নিয়ন্ত্রণে আসে পরিস্থিতি।
অবশ্যই পড়ুন: ১১ লাখ খরচ করে দিয়েছিলেন খাবারের স্টল, যুবভারতীর অশান্তিতে সর্বস্বান্ত বসিরহাটের বিক্রেতা
উল্লেখ্য, পড়ুয়াদের ভাত ডাল তরকারি সহ অন্যান্য খাবারের বদলে শুধুমাত্র 5 টাকার বিস্কুট দেওয়া নিয়ে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা অনামিকা রায় এর আগে জানিয়েছিলেন, “আগে পড়ুয়াদের কাঁচা চাল, ডাল আলু সবই দেওয়া হতো। তবে সম্প্রতি স্কুলে অডিট হয়েছে। পরবর্তীতে শিক্ষা দপ্তরের তরফে নির্দেশ এলে আমরা আবারও বাচ্চাদের মিড ডে মিল দেব।”