বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: বুধবার ফের শুল্ক বোমা ফাটিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যার আঘাতে যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত হবে ভারতীয় রপ্তানি ক্ষেত্র, এমনটাই দাবি বিশ্লেষক মহলের একাংশের।
মনে করা হচ্ছে, ট্রাম্পের 50 শতাংশ শুল্কের আঘাতে চর্মজাত দ্রব্য থেকে শুরু করে পোশাক, গয়না, রাসায়নিক পদার্থ এমনকি চিংড়ি মাছ রপ্তানিতেও ধাক্কা খেতে পারে দিল্লি! যার জেরে 50 শতাংশ শুল্কের চাপে কিছুটা হলেও প্রভাব পড়বে ভারতীয় অর্থনীতিতে, মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহল।
রাশিয়া থেকে তেল কেনাই অপরাধ!
রাশিয়া থেকে তেল কেনার বিষয়টিকে কারণ করে ভারতের উপর প্রথম ধাপে 25 শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিল আমেরিকা। তবে সেই সিদ্ধান্তের পরই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন, ভারতের উপর আরও শুল্ক চাপানো হবে। সেই মতোই এল নতুন খবর।
বুধবার, আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জানিয়ে দেন, নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও রাশিয়া থেকে তেল কিনে চলেছে ভারত। যার মাধ্যমে ইউক্রেনের সাথে যুদ্ধে রাশিয়াকে মদত দিচ্ছে দিল্লি। তাই শাস্তি হিসেবে ভারতের উপর আরও 25 শতাংশ শুল্ক চাপানো হচ্ছে। সব মিলিয়ে, বন্ধু বলেও ভারতের উপর 50 শতাংশ শুল্ক চাপিয়ে হাত তুলে দিয়েছে আমেরিকা! এক্সিকিউটিভ অর্ডার সই করে ট্রাম্প বলে দিয়েছেন, আগামী 21 দিনের মধ্যে এই নয়া শুল্ক কার্যকর হয়ে যাবে।
ট্রাম্পের শুল্ক চাপে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বস্ত্র রপ্তানি
রিপোর্ট অনুযায়ী, ট্রাম্পের 50 শতাংশ শুল্কের আঘাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে চলেছে ভারতের বস্ত্র রপ্তানি। কারণটা অবশ্য অনেকেরই জানা। আসলে আমেরিকার বাজারে সবচেয়ে বেশি জামা কাপড় অর্থাৎ বস্ত্রের যোগান দেয় ভারত। তবে আমেরিকার এই নতুন শুল্কের কারণে এবার বস্ত্র রপ্তানির ক্ষেত্রে ভারতের বিভিন্ন বস্ত্রের উপর 63.9 এবং 60.3 শতাংশ শুল্ক বসবে।
যদি বাকি পণ্যের কথা বলা যায়, সেক্ষেত্রে PTI-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারত থেকে রপ্তানি হওয়া রাসায়নিকের উপর 54 শতাংশ কর বসতে পারে। একইভাবে সোনার তৈরি গয়না, হিরে, ইস্পাত, তামা, আসবাবপত্র, নানান প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ এমনকি চিংড়ি মাছের উপরেও 50 শতাংশের শুল্ক চাপাবে আমেরিকা। সেক্ষেত্রে ভারতীয় রপ্তানিকারকরা যে ক্ষতির মুখে পড়বেন সেটা বলাই বাহুল্য।
অবশ্যই পড়ুন: ‘সবে ৮ ঘন্টা হয়েছে, কী হয় দেখতে থাকুন!’ ভারতের উপর ৫০% শুল্ক চাপিয়ে বার্তা ট্রাম্পের
উল্লেখ্য, আমেরিকার এহেন চড়া শুল্কের পর অতিরিক্ত খরচ বহন করে ওদেশে বস্ত্র রপ্তানি করতে খুব একটা আগ্রহী নয় ভারতীয় রপ্তানিকারকদের একটা বড় অংশ। তাছাড়াও ভারতীয় বস্ত্রের উপর অতিরিক্ত শুল্ক চাপানোর পর আমেরিকার বাজারে সেগুলির দাম অনেকটাই বাড়বে। সে ক্ষেত্রে অতিরিক্ত দাম দিয়ে সেইসব জামাকাপড় ও দেশের ক্রেতারা কিনবেন কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে! সব মিলিয়ে আমেরিকার এমন পদক্ষেপে ক্ষতি হতে পারে দুপক্ষেরই।