সৌভিক মুখার্জী, দক্ষিণ দিনাজপুর: বাংলার ইতিহাসে যুক্ত হল আরও এক নতুন ঐতিহ্য। দক্ষিণ দিনাজপুরে আবিষ্কৃত হল এক বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক মূর্তি। জানা যায়, পুকুর খননের সময় সম্প্রতি মাটি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে অত্যন্ত বিরল এই মহাকাল ভৈরব মূর্তি (Dakshin Dinajpur Bhairava Murti)। বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, এই মূর্তিটি পাল অথবা সেন যুগের। যদিও শিল্প কর্মের সূক্ষ্মতা আর নির্মাণশৈলী থেকে অনেকেই পাল যুগের নিদর্শন বলেই আখ্যায়িত করছেন এটিকে।
বিরল মূর্তির হদিশ দক্ষিণ দিনাজপুরে
আসলে এই আবিষ্কারের সবথেকে উল্লেখযোগ্য দিক হল মূর্তির চতুর্দিকেই ভৈরবজির রূপ খোদাই করা। আর একে চতুর্মুখ বা সার্বতোভদ্র মূর্তিও বলা হয়। এই ধরনের ভৈরব মূর্তি আগে কোনও জায়গায় পাওয়া যায়নি। প্রত্নতত্ত্ববিদরা বলছেন, এটি ‘রেয়ারেস্ট অফ রেয়ার’ আবিষ্কার। কারণ, একক মূর্তিতে চার ভৈরবজির উপস্থিতি ভারতের শৈব-তান্ত্রিক শিল্পকলায় সত্যিই দুর্লভ।
ইতিহাস বলছে, খ্রিস্টীয় নবম থেকে একাদশ শতকে বাংলায় শৈব-শাক্ত-তান্ত্রিক সাধনা ব্যাপক পরিমাণে বিস্তার লাভ করেছিল। সেই সময়ই এই চতুর্মুখ দেবীলিঙ্গ বা শক্তি শিবলিঙ্গ তৈরি হত। সেখানে লিঙ্গের চারপাশে চার দেবীর মূর্তি খোঁদাই থাকত। এই ভৈরব মূর্তিও ঠিক সেই একই ধারায় তৈরি। এমনটাই মনে করছেন গবেষকরা। ফলত, এটিকে শুধুমাত্র ধর্মীয় নিদর্শন বলা চলবে না, বরং বাংলার প্রাচীন সাধনা আর শিল্প ভাবনার প্রতীক হিসাবেও উঠে আসছে।
Yesterday this beautiful Mahakaal Bhairava murti was found while excavating a pond in Dakshin Dinajpur, West Bengal. It is either from Pala or Sena era, though I would personally place it as Pala, seeing the exquisite work workmanship.
It is rarest of the rare find, as there… pic.twitter.com/dtv2DtEi7U
— Monidipa Bose – Dey (মণিদীপা) (@monidipadey) December 13, 2025
আরও পড়ুন: ২০২৫-র শেষে সৃষ্টি হবে বুধাদিত্য ও লক্ষ্মী-নারায়ণ যোগ! বদলে যাবে ৪ রাশির ভাগ্য
মন্দির প্রতিষ্ঠার দাবি
এদিকে দক্ষিণ দিনাজপুরের স্থানীয় মানুষ ও ইতিহাসপ্রেমীদের একাংশের বক্তব্য, এই ধরনের মূর্তিকে শুধুমাত্র মিউজিয়ামে তুলে রাখা বা সংরক্ষণ করে রাখা উচিত নয়। বরং উপযুক্ত সংরক্ষণ আর নিরাপত্তার মাধ্যমে এখানে মন্দির প্রতিষ্ঠা করে তার পূজার ব্যবস্থা করতে হবে।