চিনের উপর আর নির্ভরশীলতা নয়, ৬০০০ কোটি টাকার বিরাট পরিকল্পনা রেডি ভারতের

Rare Earth Magnet

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: হঠাৎ করেই ভারতে রেয়ার্থ আর্থ ম্যাগনেট (Rare Earth Magnet) সরবরাহ বন্ধ করেছে জিনপিং-এর দেশ। আর এতে দেশের শিল্পক্ষেত্রে বিরাট সংকট নেমে এসেছে। ফলে সরকারের শীর্ষ মহল এখন সতর্ক হয়ে ভাবা শুরু করেছে যে, দেশকে এই খনিজে আত্মনির্ভর গড়ে তুলতেই হবে। আর সেজন্যই তৈরি করা হচ্ছে বিরাট পরিকল্পনা। এর মধ্যে রয়েছে বিদেশে বিরল খনিজ সম্পদ কেনা, আর নতুন আইন প্রণয়ন এবং মাইনিং নীতিতে বড়সড় পরিবর্তন।

সংসদে আসছে নতুন আইন সংশোধনী বিল

সরকারি সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, Mines and Minerals (Development and Regulation) Act অনুযায়ী, সংসদে প্রস্তাবিত নীতি ইতিমধ্যেই অনুমোদন পেয়ে গিয়েছে। আর সোমবার সংসদে এই বিল পেশ করা হতে পারে। অর্থাৎ আজই এই বিল পেশ করার কথা রয়েছে। এবার সবথেকে বড় পরিবর্তন হবে দেশে জমা থাকা অর্থের ব্যবহারে। হ্যাঁ, বর্তমানে এই ট্রাস্টে মোটামুটি 6000 কোটি টাকার বেশি রয়েছে, যা মূলত মাইনিং হোল্ডারদের কাছ থেকে রাজস্বের 2% হিসেবে জমা পড়ে। আর এবার সেই টাকা দিয়েই বিদেশে প্রয়োজনীয় খনিজ সম্পদ কেনা হবে।

সরকার প্রস্তাব দিয়েছে যে, ট্রাস্টের নামের সঙ্গে ডেভেলপমেন্ট শব্দ যোগ করা হবে। কারণ এখন থেকে শুধুমাত্র অনুসন্ধান নয়, বরং বিদেশে বিরল খনিজের হদিস এবং উন্নয়নের কাজেও এই ট্রাস্টে অর্থ বিনিয়োগ করা হবে। আর এই পদক্ষেপের মূল লক্ষ্য হল ভারতে অপরিহার্য খনিজের সরবরাহ বাড়ানো এবং চিনের উপর নির্ভরতা কমানো।

খনির বর্জ্য বিক্রির অনুমতি

বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী, খনিজ শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট কারখানার জন্যই উত্তোলন হয়। আর সেখানকার নিম্নমানের খনিজ বর্জ্য বিক্রিও করা যায় না। ফলে বহু খনিজ অকেজো হয়ে পড়ে থাকে। তবে নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী, রাজ্য সরকারগুলি অতিরিক্ত ফি নিয়ে এই বর্জ্যগুলিকে বিক্রি করার অনুমতি দিতে পারবে। শিল্প বিশেষজ্ঞরা মনে করছে, এতে যেমন একদিকে রাজস্ব বাড়বে, তেমনই খনিজের অপচয় কমবে।

তবে প্রস্তরিত সংশোধনীতে আরো বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হচ্ছে। হ্যাঁ, নতুন কোনো খনিজ পাওয়া গেলে মাইনিং লিজেই সেটিকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। আর গভীর খনিজ সম্পদের লিজ থাকলে আশেপাশের এলাকা একবারের জন্য লিজে যুক্ত করার সুযোগ মিলবে। তবে হ্যাঁ, 10%-এর বেশি অধিকার দেওয়া হবে না।

আরও পড়ুনঃ পাসপোর্ট চুরির অভিযোগে এয়ারপোর্টে মারপিট দুই বাঙালি মহিলার, ভাইরাল ভিডিও

উল্লেখ্য, 2023 সালে এই আইন শেষবার সংশোধন হয়েছিল। তবে চিন হঠাৎ রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ার ফলে সরকার বুঝে গিয়েছিল যে, বিরল খনিজের মতো সম্পদে নিজেদের দেশের উপর আত্মনির্ভরতা না বাড়ালে, ভবিষ্যতে শিল্পক্ষেত্র ধুঁকবে। আর সে কারণেই 6000 কোটি টাকার পরিকল্পনা এই সমস্যা সমাধানের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

Leave a Comment