চিনের ফাঁদে পা! ভারতের দেখাদেখি বুলেট ট্রেন চালু করতে চলেছে কাঙাল পাকিস্তান

Pakistan Bullet Train Project cpec with china debt

বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: শূন্য পকেটে স্বপ্ন দেখছে পাকিস্তান! ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন আর্থিক দুরবস্থার মধ্যে দিয়ে দিন কাটাচ্ছে পশ্চিমের দেশ। চিন সহ বিভিন্ন দেশ এমনকি আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডারের কাছ থেকে বিপুল ঋণ নিয়ে একপ্রকার ধুঁকছে ভারতের প্রতিবেশী। তাছাড়া অভ্যন্তরীণ ঋণ তো রয়েছেই। আর এসবের মাঝেই চরম অর্থনৈতিক সঙ্কটকে সঙ্গে নিয়েই বুলেট ট্রেন চালানোর স্বপ্ন দেখছে ইসলামাবাদ (Pakistan Bullet Train Project)। Brace-র এক রিপোর্ট অনুযায়ী, করাচি থেকে লাহোরের মধ্যে প্রথম বুলেট ট্রেন পরিষেবা চালু করার পরিকল্পনা নিচ্ছে শেহবাজ শরীফ সরকার।

ভারতের সাথে পাল্লা দিতে গিয়ে ফতুর হওয়ার পথে পাকিস্তান!

রিপোর্ট অনুযায়ী, করাচি থেকে লাহোর পর্যন্ত দীর্ঘ 20 ঘন্টার পথ বুলেট ট্রেনের মাধ্যমে 5 ঘন্টায় নামিয়ে আনতে চাইছে পাকিস্তান। সেই উদ্দেশ্যেই নাকি, এবার লাহোর পর্যন্ত বুলেট ট্রেন পরিষেবা চালু করতে চায় পাকিস্তান রেলওয়ে। বলাই বাহুল্য, আগামী 2027 সালের মধ্যে ভারতের বুক চিড়ে ছুটবে প্রথম বুলেট ট্রেন। তা নিয়ে এই মুহূর্তে চলছে চূড়ান্ত পর্বের প্রস্তুতি। আর ঠিক সেই আবহে পকেটের কথা চিন্তা না করে পড়শির দেখাদেখি বুলেট ট্রেন চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কাঙাল হিসেবে পরিচিত পাকিস্তান!

বাস্তবিক অর্থে, এই মুহূর্তে পাকিস্তানের অবস্থা যা তাতে পাক সরকারের কাছে দেশের রেল অবকাঠামো মেরামত করার মতো অর্থ নেই। এমন বহু রেল ট্র্যাক রয়েছে যা অর্থের অভাবে আজও মেরামত করা যায়নি। শুধু তাই নয়, পাকিস্তান রেলওয়ের মালবাহী অংশমাত্র 4 শতাংশ। তাও নাকি আর্থিক দুরবস্থার কারণে চালাতে পারছে না তারা। আর এই বেহাল দশার মাঝেই পাকিস্তানের নেতা-মন্ত্রীরা মনে করছেন, বুলেট ট্রেন চালু হলে তাদের স্বপ্ন নতুন মাত্রা পাবে। বুলেট ট্রেন চালু করতে পাকিস্তানকে সব রকম ভাবে সাহায্য করছে চিন। চিন পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর বা CPEC র আওতায় 6.8 বিলিয়ন ডলারের এমএল 2 প্রকল্পে বুলেট ট্রেন চালু করার প্রস্তাব দিয়েছে পাকিস্তান। যা খবর, 2030 সালের মধ্যে বুলেট ট্রেন পরিষেবা চালু করতে চাইছে ইসলামের দেশ..

বুলেট ট্রেন চালু হলে বিপদ বাড়বে পাকিস্তানের?

পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম সূত্রে যা খবর, করাচি থেকে লাহোর পর্যন্ত 1,215 কিলোমিটারের দীর্ঘ পথ অতিক্রম করতে যে বিশেষ বুলেট ট্রেন প্রকল্প চালু করা হচ্ছে তাতে অর্থ যোগাবে ড্রাগনের দেশ অর্থাৎ চিন। জানা গিয়েছে, বুলেট ট্রেন চালু হলে সেটি 250 কিলোমিটার পর্যন্ত সর্বোচ্চ গতিতে প্রায় 1300 কিলোমিটার পথ অতিক্রম করবে। আর এই দীর্ঘ যাত্রাপথে ট্রেনটি হায়দরাবাদ, মুলতান এবং সাহিওয়ালের মতো শহরের বুক চিড়ে ছুটবে।

তবে প্রশ্ন হল, বুলেট ট্রেন প্রকল্প চালু হলে তা আদৌ পাকিস্তানের জন্য সুবিধার হবে? ওয়াকিবহাল মহলের অনেকেই বলছেন, দুর্বল অর্থনীতির দেশ-পাকিস্তানে বুলেট ট্রেন চালু হলে আখেরে লাভ হবে চিনের। আসলে কৌশলগত দিক মাথায় রেখেই এই পরিষেবায় হাত লাগিয়েছে শি জিনপিং সরকার। এদিকে এই বুলেট ট্রেন প্রকল্পকে পাকিস্তানের রেলমন্ত্রী হানিফ আব্বাসি সবচেয়ে দূরদর্শী প্রকল্প হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তবে বাস্তব অভিজ্ঞতা, চিনের সাথে রেল প্রকল্পের রেকর্ড খুব একটা ভাল নয়, অন্যান্য দেশের। এখন প্রশ্ন তাহলে কি একই পথ ধরে ড্রাগনের বলি হবে পাকিস্তান?

অবশ্যই পড়ুন: বাদ দিয়েছে KKR, সেই প্লেয়ারকেই টিম ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে দলে টানল সাউথ আফ্রিকা!

বিশ্লেষক মহলের দাবি, চিন আসলে সুবিধার কথা মাথায় রেখে বিভিন্ন দেশে হাই স্পিড রেলের নামে নিজেদের স্বপ্ন বিক্রি করে। অর্থাৎ পাকিস্থানে বুলেট ট্রেন চালানোর জন্য অর্থায়ন করলেও ড্রাগনের বিপুল ঋণের বোঝা চাপবে পাকিস্তানের কাঁধে। আর তা দিতে না পারলে, পাকিস্তানের সম্পদ গিলে খাবে ড্রাগন। বিগত দিনগুলিতে চিনের ফাঁদে পা দিয়ে বিপদে পড়েছে এমন দেশের সংখ্যা কম নয়। দ্য ইন্টারপ্রেটারের এক রিপোর্ট অনুযায়ী, ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা থেকে বান্দুং পর্যন্ত হাই স্পিড রেল প্রকল্প গড়েছিল চিন। তবে এই প্রকল্প শুরুর সময়কাল থেকেই ক্রমাগত বিরোধ, এবং বিলম্বের কারণে 1.2 বিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত খরচ হয়েছে এই প্রকল্পে। যার কারণে বর্তমানে ইন্দোনেশিয়া এই প্রকল্পকে টিকিং টাইম বোমা বলে অভিহিত করেছে এবং ঋণ নিয়ে চিনকে কার্যত কাঠগড়ায় তুলেছে।

Leave a Comment