চিনের হাত ধরে ভারতকে উস্কানোর চেষ্টা? তিস্তা মাস্টার প্ল্যান চূড়ান্তর পথে বাংলাদেশ

বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: শেখ হাসিনার পতনের পরই চিনের সাথে ঘনিষ্ঠতা বেড়েছে বাংলাদেশের। আর সেই সম্পর্ককে কাজে লাগিয়েই বিগত দিনগুলিতে কার্যত ওপার বাংলার বাজারে দখল জমিয়েছে ড্রাগন। পদ্মা পাড়ের মসনদে বসে থাকা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসকে ছলে বলে কৌশলে হাত করে নানান পরিকল্পনা ফাঁদছে বেইজিং। এবার সেই অভ্যাস ধরে রেখেই তিস্তা মহাপরিকল্পনা নিয়ে বাংলাদেশের হাত শক্ত করল জিনপিংয়ের দেশ!

চিনের হাত ধরেই চূড়ান্ত হওয়ার পথে বাংলাদেশের তিস্তা মহাপরিকল্পনা

বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম প্রথম আলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের জলসম্পদ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দ রিজওয়ানা হাসান জানিয়েছেন, আগামী অক্টোবরের মধ্যেই তিস্তা মহাপরিকল্পনার ডিজাইন চূড়ান্ত হবে।

গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার বাংলাদেশের কুড়িগ্রামে নদীর তীর রক্ষার চলমান কাজ পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ইউনূসের উপদেষ্টা স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, স্থানীয় জনগণ তিস্তা নদীর জন্য স্থায়ী বাঁধ তৈরির দাবি করেছেন।

কিন্তু একটা দেড় বছরের সরকারের কাছে এমন দাবি করলে আমরা কী করতে পারি? আগেই আমরা তিস্তার পাঁচটি স্থানে গণশুনানি করেছি। সেই সব রিপোর্ট সরকারের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে জমা পড়েছে। এরপরই হাসান বলে দেন, চলতি বছরের শেষে অর্থাৎ আগামী অক্টোবরের মধ্যে তিস্তা মহা পরিকল্পনার ডিজাইন চূড়ান্ত হবে।

যদিও এরই মাঝে, তিস্তার জল বন্টন চুক্তি নিয়ে চিনের সাথে একাধিক বৈঠক সেরেছে বাংলাদেশ। আসলে, হাসিনা জামানা শেষ হতেই ড্রাগনের সাথে সখ্যতা ক্রমশ গভীর হয়েছে ঢাকার। মূলত সেই কারণেই বাংলাদেশের প্রায় সব ক্ষেত্রেই কর্তৃত্ব ফলাতে চাইছে চিন। সেই সূত্র ধরেই তিস্তা মহাপরিকল্পনায় বাংলাদেশের সাথে হাত মিলিয়েছে ড্রাগন।

এ প্রসঙ্গে মঙ্গলবার সকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ইউনূসের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছিলেন, মাঠ পর্যায়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আসলে তিস্তা মহাপরিকল্পনা চিন ও বাংলাদেশের মধ্যেকার বিষয়। তাই এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নিতে সম্মতি লাগবে দুই দেশেরই।

এদিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, বিগত কয়েক মাসে তিস্তা পরিকল্পনা নিয়ে আমরা অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছি। আগামী 17 জুলাই বিশেষজ্ঞদের সিদ্ধান্তে মূল পাঁচটি বিষয়ে আলোচনা চূড়ান্ত হবে। পরবর্তীতে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে পৌঁছবে প্রস্তাবনা। সেখান থেকে সবুজ সংকেতের পর ইআরডির মাধ্যমে তা চূড়ান্ত হলে চিনের অফিসিয়ালদের কাছে যাবে। সেখান থেকে ইতিবাচক উত্তর এলে সবদিক মাথায় রেখে শুরু হবে প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ।

বিশ্লেষকদের মতে, একেবারে প্রথম থেকেই সর্বগ্রাসী মনোভাবাপন্ন চিন, ভারতকে উস্কানি দেওয়ার চেষ্টা করে চলেছে। তাতে এবার নতুন মাত্রা যুগিয়েছে বাংলাদেশ। কেননা, বিগত মাসগুলিতে ড্রাগনের সাথে হাত মিলিয়ে ভারতের সেভেন সিস্টার্স দখলের আকাশ কুসুম স্বপ্ন দেখেছেন ইউনূস! তা বাস্তবায়নের চেষ্টাও কম হচ্ছে না!

অবশ্যই পড়ুন: মোহনবাগানের সেরা ফুটবলার অপুইয়া, ফরোয়ার্ড জেমি! বর্ষসেরার তালিকায় আর কারা?

উত্তর-পূর্বের সাত রাজ্যের সঙ্গে ভারতের গোটা অংশকে যুক্ত করে চিকেন নেক বা শিলিগুড়ি করিডোর। কাজেই ভৌগোলিক দিক থেকে এই অংশটি ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এবার সেই অংশেই নজর রেখেছে চিন এবং বাংলাদেশ। সূত্রের খবর, ওই অংশের পার্শ্ববর্তী বাংলাদেশ সীমান্তে বায়ু সেনাঘাঁটি তৈরির পরিকল্পনা করছে শান্তিতে নোবেলজয়ীর অন্তর্বর্তী সরকার।

সম্প্রতি ওই অংশ পরিদর্শন করে গিয়েছেন চিনের অফিসিয়ালরা। কাজেই, ভারতের বিরুদ্ধে একের পর এক ছক কষে চলেছে বাংলাদেশ। আর এসবের মাঝেই তিস্তা মহাপরিকল্পনা নিয়ে চিনের হাত শক্ত করার মাধ্যমে ভারতকে উস্কানি দিচ্ছেন ইউনূস! বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশ এবং চিন দুই দেশই গলায় গলা মিলিয়ে ভারতকে প্যাঁচে ফেলার চেষ্টা করছে! যদিও সেইসব কুকর্মের ওপর কড়া নজর রয়েছে দিল্লির।

Leave a Comment