সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: গোটা বিশ্বজুড়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চিনের মধ্যে সেমিকন্ডাক্টর চিপ নিয়ে এখন লড়াই তুঙ্গে। আর ঠিক তখনই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মোক্ষম চাল (PM Modi on Semiconductor) দিলেন! হ্যাঁ, ভারতের প্রযুক্তি জগতে এবার নতুন অধ্যায় সূচনা হচ্ছে। মোদি সরকার জানিয়েছেন, এবছরের শেষের আগেই বাজারে মেড ইন ইন্ডিয়া’র সেমিকন্ডাক্টর চিপ আত্মপ্রকাশ করবে।
আর এই খবর শুধুমাত্র প্রযুক্তির জগতের জন্য নয়, বরং গোটা দেশ অর্থনৈতিক থেকে শুরু করে প্রযুক্তিগত আত্মনির্ভরতার পথে এগোবে। তবে এরই মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছে যে, তিনি কম্পিউটার চিপ আমদানিতে আবারও 100% শুল্ক বসানোর কথা ভাবছেন।
আর যদি মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই শুল্ক কার্যকর হয়, তাহলে বিশ্বসুড়ে ইলেকট্রনিক্স থেকে শুরু করে গাড়ি, গৃহস্থলীর যন্ত্রপাতি, সবকিছুর দাম একেবারে লাগামছাড়া বাড়বে। আর এহেন পরিস্থিতিতে ভারতের সেমিকন্ডাক্টার উৎপাদন হতে পারে গেম চেঞ্জার, তা বলা চলে। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক, মোদি সরকারের আসল গেমপ্ল্যান কী রয়েছে।
সেমিকন্ডাক্টর আসলে কী?
জেনে রাখা ভালো, সেমিকন্ডাক্টর হল সূক্ষ্ম একটি ইলেকট্রনিক্স চিপ, যা ডিজিটাল ডিভাইসের মস্তিষ্ক হিসেবে কাজ করে। আর এটি মূলত সিলিকনের মতো উপাদান দিয়ে তৈরি করা হয়, যা স্মার্টফোন থেকে শুরু করে ল্যাপটপ, টিভি, গাড়ি বা ইলেকট্রিক ভেহিকেল, ওয়াশিং মেশিন, ফ্রিজ, স্যাটেলাইট, প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম, AI, 5G, IoT, রোবোটিক্স প্রযুক্তিতে ব্যবহার করা হয়।
#WATCH | PM Narendra Modi says, “…We are working on semiconductors on Mission Mode…By the end of this year, Made in India semiconductor chips, made by the people in India, will hit the market.”
Video: DD pic.twitter.com/SM5oTOhjAO
— ANI (@ANI) August 15, 2025
মোদি সরকার কেন সেমিকন্ডাক্টরে জোর দিচ্ছে?
সেমিকন্ডাক্টার খাতে জোর দেওয়ার পিছনে মোদি সরকারের কিছু কারণ রয়েছে। প্রথমত, তিনি ভারতকে আত্মনির্ভর করতে চাইছেন। হ্যাঁ, বিপুল বাজার থাকা সত্ত্বেও চিপ আমদানির উপর নির্ভরশীলতা কমাতে চাইছে তিনি। দ্বিতীয়ত, বর্তমান সময়ে মূলত চিন, তাইওয়ান বা আমেরিকা মূলত এই সেমিকন্ডাক্টর সরবরাহ করে থাকে।
আরও পড়ুনঃ স্বাধীনতা দিবসের দিন সোনা, রুপোর দাম
এমনকি তারা সামান্য উত্তেজনাতেই সরবরাহ বন্ধ করার পথে হাঁটতে পারে। তাই রিক্স নিতে চাইছে না মোদি সরকার। তৃতীয়ত, এই শিল্পে বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থানের সম্ভাবনাও প্রচুর। এর পাশাপাশি আমেরিকা ও ইউরোপ বর্তমানে উৎপাদন বাড়াচ্ছে। তাই ভারতের সামনেও সুযোগ থেকে যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, ভারতের সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদন যদি একবার শুরু হয়, তাহলে দেশের মধ্যেই সস্তায় ইলেকট্রনিক পণ্য উৎপাদিত হবে। পাশাপাশি ইভি বা বৈদ্যুতিক গাড়ির চাহিদা হু হু করে বাড়বে। এমনকি নিরাপত্তা সংক্রান্ত সরঞ্জামে ভারতীয় চিপ ব্যবহার করা যাবে। আর নতুন প্রযুক্তি অর্থাৎ, AI, 5G, IoT এবার দেশের মধ্যেই উৎপাদন হবে। এখন দেখার, এই প্রকল্প কত দিনে বাস্তবায়িত হয়।