চিন ভরসা আর নয়, রেয়ার আর্থ চুম্বকের উৎপাদন বাড়াতে ১,৩৪৫ কোটি ঢালছে ভারত

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: গোটা বিশ্বজুড়ে যখন চিনের বিরল খনিজ দখল নিয়ে রাজনৈতিক উত্তেজনা তুঙ্গে, ঠিক তখনই ভারত বিরাট সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলল। এবার নাকি দেশের মাটিতেই তৈরি হবে রেয়ার আর্থ ম্যাগনেট (Rare Earth Magnet)! হ্যাঁ, ঠিকই পড়েছেন। আর এটি বৈদ্যুতিক গাড়ি থেকে শুরু করে উইন্ড টারবাইন, ইলেকট্রনিক্স খাতে বিরাট ভূমিকা রাখবে।

জানা গিয়েছে, সম্প্রতি শিল্প মন্ত্রকের তরফ থেকে 1345 কোটি টাকার বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছে বিরাট এক প্রকল্পের জন্য, যার মাধ্যমে দেশীয় পর্যায়েই এই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাগনেট তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। এমনকি খুব শীঘ্রই মন্ত্রীসভা অনুমোদন দেবে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।

স্বনির্ভর হওয়ার পথে ভারত

শুধুমাত্র উৎপাদন নয়, বরং এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হল ভারতের ক্লিন এনার্জি এবং ই-মোবিলিটি লক্ষ্য পূরণে নির্ভরযোগ্য সাপ্লাই চেইন গড়ে তোলা। কারণ, চিন যখন রপ্তানির পথ বন্ধ করে দিয়েছে, সেখানে যেকোনো দিন দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। আর সে কারণেই সাপ্লাই চেইন বন্ধ না হওয়ার জন্য ভারত বড়সড় পদক্ষেপ নিচ্ছে। কারণ, ভারত চাইছে এই বিপদ মোকাবিলার জন্য এখন থেকেই প্রস্তুত থাকতে।

প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, এই রেয়ার আর্থ ম্যাগনেট বা বিরল খনিজ বিশেষত নেডিমিয়াম, আয়রন এবং বোরনের মিশ্রন। আর আজকের দিনে দাঁড়িয়ে ইলেকট্রিক মোটর থেকে শুরু করে উইন্ড টারবাইন, ডিফেন্স টেকনোলজিতেও এটি ব্যবহৃত হয়। যদিও ভারতের মাটিতে কিছু পরিমাণে রেয়ার আর্থ খনিজ মজুত রয়েছে, তবে সেগুলি পরিশোধন করে ম্যাগনেট করার মতো পরিকাঠামো এখনো দেশে গড়ে ওঠেনি। তাই চিনের উপরেই নির্ভরশীল কেন্দ্র সরকার।

উল্লেখ্য, চিন বর্তমানে পৃথিবীর প্রায় 60 থেকে 70% রেয়ার আর্থ ম্যাগনেট উৎপাদন করে। তবে এর আগেও তারা গ্যালিয়াম, জার্মেনিয়াম বা গ্রাফাইটের মতো খনিজ রপ্তানিতে সীমাবদ্ধতা আরোপ করে অন্যান্য দেশগুলিকে বিপাকে ফেলেছিল। আর এহেন পরিস্থিতিতে ভারত এবং অন্যান্য দেশগুলির অর্থনীতি একপ্রকার ধুঁকছে। সে কারণেই তারা চাইছে বিকল্প রাস্তা খুঁজতে। 

আরও পড়ুনঃ বাংলার মাটিতেই রেয়ার আর্থ ম্যাগনেট? পুরুলিয়ায় বিরাট খোঁজ! বদলে যাবে ভারতের ভবিষ্যৎ

কীভাবে কাজ করবে এই প্রকল্প?

ভারতের ভারী শিল্পমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামী সম্প্রতি এক সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। আর সেখানে তিনি জানান, এই প্রকল্পটি রেয়ার আর্থ ম্যাগনেট উৎপাদন করতে সাহায্য করবে। আর এতে অংশ নিতে আগ্রহী দেশীয় বা আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলিকে নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করতে হবে। পাশাপাশি দেশের একাধিক উৎপাদন কেন্দ্রের মাধ্যমে ম্যানুফাকচারিং হাবও গড়ে তোলা হবে, যা ভারতীয় প্রযুক্তির খাতকে আরো পাকাপোক্ত করে তুলবে।

Leave a Comment