প্রীতি পোদ্দার, আরামবাগ: ফের প্রশ্নের মুখে দাঁড়াল রাজ্যের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা ব্যবস্থা! সরকারি হাসপাতালে এবার বাচ্চা অদল বদলের অভিযোগ উঠে এল হুগলির আরামবাগ (Arambagh) মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। ঘটনা জানাজানি হতেই হাসপাতাল চত্বরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। জানা গিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে তিন দিনের শিশুকে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি তোলে পরিবার। তদন্তে নামে পুলিশ।
ঠিক কী ঘটেছে?
স্থানীয় রিপোর্ট মোতাবেক,গত রবিবার ভোরে হুগলির তারকেশ্বরের বালিগোড়ির বাসিন্দা জাসমিনা বেগমকে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় আরামবাগ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। পরের দিন অর্থাৎ সোমবার তিনি পুত্রসন্তান প্রসব করেন। কিন্তু সদ্যোজাতর অবস্থার অবনতি হওয়ায় শিশুটিকে মেডিকেলের এসএনসিইউ বিভাগে ভর্তি করানো হয়। বুধবার পরিবার শিশুর খোঁজ করতে গেলে হাসপাতালের তরফে জানানো হয়, মঙ্গলবার রাতে ওই সদ্যোজাতের মৃত্যু হয়েছে। এমনকি হাসপাতালের তরফে এও জানানো হয় যে, ভুলবশত আরামবাগের বড়ডোঙ্গল এলাকার এক পরিবারের হাতে সেই শিশুর দেহ তুলে দেওয়া হয়েছে।
DNA পরীক্ষার দাবি তোলে পরিবার
হাসপাতালের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এদিন জাসমিনা বেগমের পরিবার বড়ডোঙ্গলের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে জানায় যে, তাদেরও নাকি হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছিল যে তাদের শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এবং তাঁদের হাতে যে দেহ দেওয়া হয়, সেটি তাঁরা কবরস্থ করেন। কিন্তু বাচ্চা বদল নিয়ে তাঁরা কিছুই জানতেন না। এদিকে, বুধবার সন্ধ্যায় হাসপাতালের তরফে আবার বালিগোড়ির বাসিন্দা জাসমিনা বেগমের পরিবারকে জানানো হয় যে, তাদের বাচ্চা এখনও জীবিত রয়েছে। এমতাবস্থায় হাসপাতাল চত্বরে শুরু হয় শোরগোল। তাঁদের সন্দেহ, শিশুটি বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। তাই আসল বাচ্চার হদিশ পেতে জীবিত শিশুটির DNA পরীক্ষার দাবি তোলেন তাঁরা। খবর দেওয়া হয় পুলিশে। এই ঘটনায় মেডিকেল কর্তৃপক্ষের চূড়ান্ত গাফিলতির অভিযোগ সামনে উঠে আসে।
আরও পড়ুন: হাওড়ায় শুটআউট! তৃণমূল প্রধানকে লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি, উত্তপ্ত বালি
জাসমিনা বেগমের স্বামী আরামবাগ হাসপাতালে কর্তৃপক্ষের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে জানিয়েছেন “সোমবার ভর্তি করেছিলাম আমার স্ত্রীকে। আমার মনে হচ্ছে বাচ্চা চুরি হয়ে গেছে। কারণ ওরা একবার বলছে বেঁচে আছে। আর একবার বলছে মারা গেছে।” এই প্রসঙ্গে আরামবাগ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডা. রমাপ্রসাদ রায় বলেন, “SNCU ভর্তি ছিল একটি বাচ্চা। সে মারা গিয়েছিল। তার ওজন দেড় কেজি। যখন নাম ধরে ডাকা হয়েছিল বাড়ির লোককে তখন একজন আসেন এবং তাঁকে আমরা মৃত বাচ্চাটিকে দিয়েছিলাম। কিন্তু তথ্যটা যাচাই করা হয়নি। পুলিশের কাছে একটি রিপোর্ট জমা পড়েছে। আমরাও অফিসিয়ালি এনকোয়ারি করেছি।”