প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ভিনরাজ্যে বাংলাভাষী পরিযায়ী শ্রমিকদের ওপর অকথ্য অত্যাচারে ঘটনা বারংবার খবরের শিরোনাম ছুঁয়েছে। রাজনৈতিক মহলেও উঠেছে এই নিয়ে প্রতিবাদের ঝড়। যার ফলে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে এই ইস্যু যে বড় ছাপ রাখতে চলেছে তা বেশ বুঝতে পারছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একটা বড় অংশ। কিন্তু বঙ্গেও যে কম অত্যাচার হচ্ছে না তা নয়। এবার রামের নামে হিংসা ছড়াল হুগলিতে (Hooghly) । ‘জয় শ্রীরাম’ না বলায় মুসলিম যুবককে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠেছে।
ঠিক কী ঘটেছে?
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হুগলির জেলার হরিপাল থানার অন্তর্গত ইলিপুর থেকে নালিপুর যাওয়ার রাস্তায় এক মুসলিম ফেরিওয়ালা রাস্তায় রাস্তায় জিনিসপত্র বিক্রি করছিল। প্রতিদিনের মত এদিনও ওই ফেরিওয়ালা জিনিস বিক্রি করতে থাকায় কয়েকজন তাঁকে ঘিরে ধরে এবং তাঁর পাসপোর্ট দেখাতে বলে। কিন্তু ফেরিওয়ালা পাসপোর্ট না দেখানোয় জোরপূর্বক তাঁকে ‘জয় শ্রীরাম’ বলার জন্য জোর করে একদল স্থানীয়রা। ওই মুসলিম ফেরিওয়ালা সেই কথা বলতে রাজি না হওয়ায় তাঁর উপর অত্যাচারের চালানো হয় বলে অভিযোগ। পাশাপাশি ওই ফেরিওয়ালার দাড়ি ধরে টানাটানি করা হয় বলে জানা যাচ্ছে। যার ফলে চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি তৈরি হয় এলাকায়।
পথ অবরোধ স্থানীয়দের
প্রকাশ্যে মুসলিম ফেরিওয়ালার ওপর এইরূপ দুষ্কৃতী অত্যাচার কিছুতেই মেনে নিতে পারেনি স্থানীয়রা। সঙ্গে সঙ্গে অনন্তপুরের ২৬ নম্বর অহল্লাবাই রোডে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায়। পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল আকার ধারণ করলে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় হরিপাল থানার পুলিশ। এবং মুসলিম ওই ফেরিওয়ালার অভিযোগ সূত্রে গ্রেফতার করা হয় এক জনকে। এদিকে ঘটনাসূত্রে জানা গিয়েছে ওই ফেরিওয়ালা আসলে মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা। কাজের সূত্রে হুগলিতে থাকতে হচ্ছে তাঁকে। কিন্তু এই রাজ্যের বাসিন্দা হয়ে এইরূপ অত্যাচার কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না একাংশ।
আরও পড়ুন: ‘মা কালীর সাক্ষাৎ রূপ মমতা!’ মুখ্যমন্ত্রীকে ভগবানের আসনে বসালেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়
কী বলছেন ত্বহা সিদ্দিকী?
এদিকে রামের নামে মুসলিম ফেরিওয়ালার ওপর এইরূপ অত্যাচারে বেশ ক্ষুব্ধ ফুরফুরা শরীফের পীরজাদা ত্বহা সিদ্দিকী। তিনি জানিয়েছেন “রামের নামে কলঙ্ক এই সকল দুষ্কৃতীরা। আসলে ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে হিন্দু এবং মুসলিমদের মধ্যে দাঙ্গা বাঁধানোর চক্রান্ত চলছে ক্রমাগত, কিন্তু এই উদ্দেশ্য সফল হবে না। বাংলার মানুষরা একত্রিত থাকবে। তাই সকলকে অনুরোধ কোথাও হিন্দু এবং মুসলিমদের মধ্যে অত্যাচার হলে সঙ্গে সঙ্গে ধর্ম না মেনে একসঙ্গে গর্জে উঠুন ।”