জাতীয় সড়কের কারণে অবরুদ্ধ নয়ানজুলি, নিকাশি ব্যবস্থা! জলমগ্ন ডানকুনি

Dankuni

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ঘূর্ণাবর্ত এবং সক্রিয় মৌসুমী অক্ষরেখার জেরে টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন অবস্থায় রয়েছে গোটা দক্ষিণবঙ্গ। ইতিমধ্যেই পশ্চিমী জেলার একাধিক গ্রাম ডুবে রয়েছে বর্ষার জলে এমনকি বাদ যায়নি কলকাতা সহ উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার একাধিক এলাকা। নদী, সেতুর উপর দিয়ে ক্রমাগত বয়ে চলেছে জল। দুর্বিষহ অবস্থা সাধারণ মানুষদের। এদিকে মুখে কুলুপ এঁটেছে প্রশাসন। এমতাবস্থায় হুগলির ডানকুনি এলাকায় বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডের রাস্তায় শীঘ্রই জল নামা নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করলেন স্থানীয়রা।

জমা জলে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, যোগাযোগ ব্যবস্থায় গতি আনতে, রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ সম্পূর্ণ করতে ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করে দিয়েছে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। আর এই রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য জাতীয় সড়কের দু’ধারের নয়ানজুলি খাল অবরুদ্ধ করে দেওয়া হয়। যার ফলে রাস্তার ধারের নিকাশি নালাগুলি দুর্বল হয়ে পড়েছে। তার উপর বাইগাছি খালের সংস্কার না হওয়ার কারণেই এবার চলতি মরশুমে সামান্য বৃষ্টিতে জলভাসি অবস্থা ডানকুনির বিস্তীর্ণ এলাকায়। পরিস্থিতি এতটাই জটিল যে বাড়িঘরে ঢুকে যাচ্ছে জল কিছুতেই নামছে না জমা জলের স্তর। তাতে স্থানীয়রা জলবাহিত রোগের কবলে অসুস্থ হয়ে পড়ছে।

জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ

ডানকুনি পুরসভার তরফে জানানো হয় জাতীয় সড়কের কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে এখনও ১৩, ১৪, ১৫ এবং ২০ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ সুভাষপল্লি, উত্তর সুভাষপল্লি, স্টেশন রোড, ঈশ্বরপল্লি, সূর্য সেন নগর, ১৭ বিঘা, সারদাপল্লি–সহ বিরাট এলাকা বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়ছে। আর এই জমা জলের যন্ত্রণা থেকে রক্ষা পেতে মাঝেমধ্যেই বাসিন্দারা প্রতিবাদ, বিক্ষোভ করছেন। অবিলম্বে যদি জাতীয় সড়কের দু’পাশে নয়ানজুলি খালের সংস্কার করা না হয়, তা হলে জমা জলের দুর্ভোগ থেকে রেহাই মিলবে না বলে দাবি করা হচ্ছে। এদিকে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের তরফে দাবি করা হয়েছে, জাতীয় সড়কের দু’ধারে নয়ানজুলির সংস্কার করা হয়েছে। কিছু কাজ বাকি আছে। সেগুলি দ্রুত করে দেওয়া হবে।

কবে নামবে জল?

পুরপ্রধান হাসিনা শবনম বলেন, ‘বৃষ্টির জমা জলের সমস্যা মেটাতে আমরা জেলাশাসককে চিঠি দিয়েছি। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। কিন্তু তাঁরা নয়ানজুলি বা বাইগাছি খাল— কোনওটারই সংস্কারে উদ্যোগী হননি।’একই মন্তব্য করেন ডানকুনি পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান প্রকাশ রাহা। তিনি বলেন, ‘বাইগাছি খালের গতি রুদ্ধ হয়ে পড়ে আছে। নয়ানজুলির কোনও সংস্কার হয়নি। আমরা প্রস্তাব দিয়েছিলাম, মাইতি পাড়া থেকে ডানকুনি কোল পর্যন্ত প্রায় ১০ কিমি রাস্তার দু’ধারে পাঁচ মিটার চওড়া ড্রেন করে দিলেই জমা জলের দুর্ভোগ ঘুচবে। কিন্তু সেই নিয়ে এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া মেলেনি।’

আরও পড়ুন: নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে ED-র র‍্যাডারে মন্ত্রী চন্দ্রনাথ! দেড় কোটির হিসেব না মেলায় চার্জশিট

ভরা শ্রাবণে এইরূপ অঝোরে বৃষ্টির দাপটে রীতিমত নাজেহাল অবস্থা সকলের, আর এই অবস্থায় এলাকার জল না নামায় মাথায় হাত পড়েছে এলাকাবাসীর। রবীন দাস নামে ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের এক বাসিন্দা অভিযোগ জানিয়েছে যে , জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণে যাতায়াতের সুবিধে হবে ঠিকই, কিন্তু নয়ানজুলির খালগুলি বুজে গিয়েছে। যে কারণে, এলাকার জমা জল বের হওয়ার কোনও উপায় নেই। অল্প বৃষ্টিতেই ডানকুনি ভেসে যায়। এদিকে লক্ষ্য রেখে কাজ করলে অনেক দুর্যোগ কমবে, কিন্তু এই নিয়ে এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া মেলেনি। ”

Leave a Comment