প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: শীতের তীব্রতা ক্রমেই বেড়ে চলেছে রাজ্য জুড়ে। তাই এবারও সেই ঠান্ডায় ২০২৬ এ গঙ্গাসাগর মেলার আয়োজন হতে চলেছে সাগরদ্বীপে। জানুয়ারি মাসের হাড়হিম করা ঠান্ডায় সাগরদ্বীপে অনুষ্ঠিত এই মেলায় দেশ-বিদেশের লক্ষাধিক পুণ্যার্থীর ঢল নামে প্রতি বছর। এবছরও যে তার ব্যতিক্রম হবে না সেটা বোঝাই যাচ্ছে। জানা গিয়েছে, আগামী বছরের ১০ জানুয়ারি থেকে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে গঙ্গাসাগর মেলা। সেক্ষেত্রে এই মেলা যাতে সুষ্ঠভাবে সুসম্পন্ন হয়, তাই নবান্নে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক ডাকলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।
মেলা নিয়ে বিশেষ নজর মমতার
উল্লেখ্য, উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজের কুম্ভমেলায় পদপিষ্ট হয়ে মারা গিয়েছিল ৩০ জন পুণ্যার্থী। আর সেই মৃত্যু গোটা দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। কম কটাক্ষ শুনতে হয়নি যোগী আদিত্যনাথের সরকারকে, একের পর এক তীব্র আক্রমণ করেছিলেন বিরোধীরা। এমনকি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মহাকুম্ভকে ‘মৃত্যুকুম্ভ’ বলে অভিহিতও করেছিলেন। তাইতো এবার পশ্চিমবঙ্গে আগত গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে বিশেষ নজর দিল প্রশাসন। লক্ষাধিক মানুষের সমাগমে আয়োজিত এই গঙ্গাসাগর মেলা যাতে প্রয়াগরাজের মৃত্যুকুম্ভে পরিণত না হয় তার জন্যই কোমর বেঁধে নামল সরকার। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বৈঠক ডাকলেন মুখ্যমন্ত্রী।
মেলার আয়োজন নিয়ে বৈঠক মমতার
রিপোর্ট মোতাবেক গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার নবান্নের তরফে এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল। সেই বিজ্ঞপ্তিতে রাজ্য সরকারের সকল গুরুত্বপূর্ণ সব দফতরকে নিয়ে আগামী ১৫ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ নবান্ন সভাঘরে বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বৈঠকে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, রাজ্যের ভারপ্রাপ্ত ডিজি রাজীব কুমার ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ দফতরের মন্ত্রী, সচিবদের উপস্থিত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও বৈঠকে মন্ত্রী পুলক রায় ও তাঁর দফতরের সচিবকেও উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। সঙ্গে সুন্দরবন উন্নয়ন দফতর, পূর্ত, পরিবহণ, বিদ্যুৎ, খাদ্য, দমকল, পরিবেশ, বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের মন্ত্রী এবং আধিকারিকদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ১, ২, ৫, ১০, ২০ টাকার কয়েন বাতিল করল RBI? জানিয়ে দিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক
রাজ্য সরকারের এক আধিকারিকের দাবি, গঙ্গাসাগর মেলার আয়োজন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রতি বছরই এই ধরনের বৈঠক করে থাকেন। এবারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, গঙ্গাসাগর মেলা আয়োজনের ৮০ শতাংশ দায়িত্বে থাকবে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর। আশা করা যাচ্ছে, এ বছর কুম্ভমেলার দুর্ঘটনার প্রেক্ষাপটে এবং পুণ্যার্থীদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে হয়ত প্রশাসনের তৎপরতা ও নজরদারি অন্যবারের তুলনায় অনেক বেশি থাকবে।