প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বছর ঘুরলেই রাজ্যে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ভোট উৎসব। ২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনে সিংহাসনের দিকে সকলের নজর। এদিকে ভুয়ো ভোটার উচ্ছেদ নিয়ে রীতিমত রণক্ষেত্রের আকার ধারণ করেছে বাংলা। গতকালই বাংলায় ভুয়ো ভোটারের তথ্য পরিসংখ্যান তুলে ধরেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। আর এই আবহে ভোটার তালিকায় দেখা গেল অবাক কান্ড। জামাইয়ের বাবা আর নাতির বাবা হয়ে গেল একই লোক।
ঘটনাটি কী?
‘২৪ ঘণ্টা’ এর রিপোর্ট অনুযায়ী, পূর্ব বর্ধমানে কেতুগ্রামের ভোটার তালিকায় উঠে এল এক বিস্ফোরক তথ্য। বাংলাদেশে কালাচাঁদ মণ্ডল ও দুলাল মণ্ডল সম্পর্কে শ্বশুর-জামাই। কিন্তু, এ রাজ্যের ভোটার তালিকায় তাঁরা বাবা-ছেলে। শুধু তাই নয়, এদিকে দুলাল মণ্ডলের ছেলে দূর্জয় মণ্ডল, বাংলাদেশে কালাচাঁদ মণ্ডল ও দুর্জয় মণ্ডলের সম্পর্ক দাদু-নাতির। কিন্তু কেতুগ্রামের ভোটার তালিকাতে দেখা যায় সেখানেও তাঁরা বাবা-ছেলে। জানা যাচ্ছে সম্পর্কের গরমিলে নাকি আধার কার্ড, রেশন কার্ডও বানানো হয়েছে। এদিকে এই ঘটনায় কালাচাঁদ বাবু ভোটার তালিকায় এই গরমিল নিয়ে এক অদ্ভুত যুক্তি দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘জামাই তো বাবা বলতেই পারে শ্বশুরকে। সেক্ষেত্রে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু নাতি কীভাবে বাবা বলতে পারে দাদুকে?’ আর তাতেই সর্ষের ভিতর ভূত দেখছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। কারণ তাঁদের মতে একটা ভোটার তালিকা তৈরি করতে গেলে, নির্দিষ্ট ব্যক্তির যাবতীয় নথি থাকে প্রশাসনের কাছে। ভোটার কার্ড, আধার কার্ড তৈরি করতে হলে তখন যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ নথি প্রশাসনকে জমা দিতে হয়। তাহলে সেক্ষেত্রে কেন একই ব্যক্তি নিজের জামাইয়েরও বাবা এবং নাতিরও বাবা, এই অদ্ভুত সম্পর্কে তালিকায় যুক্ত হতে পারেন। শুরু হয়েছে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব।
রাজনৈতিক বিতর্ক
শাসক দলের দাবি, এসব করাচ্ছে বিজেপি। ভুয়ো ভোটার ঢুকিয়ে, বাংলাদেশ থেকে ভোটার এনে, এখানকার ভোটে প্রভাব ফেলতে চাইছে বিজেপি। এই প্রসঙ্গে কেতুগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক শেখ শাহনওয়াজ বলছেন, ‘বাংলাদেশ থেকে ভুয়ো ভোটার ঢুকিয়ে এখানে চক্রান্ত করতে চাইছে। আমরা দেখছি, সতর্ক রয়েছি। কালাচাঁদ মণ্ডল বিজেপি সমর্থক।’
আরও পড়ুন: ঝুলেই রইল পার্থের ভাগ্য! জামিন মামলা থেকে সরে এলেন বিচারপতি বাগচী, অন্য বেঞ্চে হবে শুনানি
অন্যদিকে বিজেপির দাবি, এই ঘটনার সঙ্গে তাদের কোনও যোগ নেই। উল্টে বিরোধী পক্ষ বলছে তৃণমূল ভুলভাব তথ্য রটাচ্ছে। বিজেপির কাটোয়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সীমা ভট্টাচার্য বলছেন, ‘বিজেপি তো ক্ষমতায় ছিল না। বিজেপি তো ভোটার তালিকা তৈরি করেনি।’