প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: প্রয়াত জম্মু কাশ্মীরের প্রাক্তন রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক। দীর্ঘদিন ধরেই কিডনির সমস্যার কারণে অসুস্থ ছিলেন তিনি। কিন্তু চিকিৎসকদের শত প্রচেষ্টার পরেও ফেরানো গেল না তাঁকে। ৭৯ বছর বয়সেই সকলকে ছেড়ে পরলোকে গমন করলেন তিনি।
প্রয়াত জম্মু কাশ্মীরের প্রাক্তন রাজ্যপাল
প্রয়াত প্রাক্তন রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার দুপুর ১টা নাগাদ নয়াদিল্লির রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রয়াত হলেন জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক। বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। এদিন তাঁর এক্স হ্যান্ডেলের একটি পোস্টে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই তিনি কিডনির রোগে ভুগছিলেন। এর আগেও গত ১১ মে তাঁকে দিল্লির রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালে অত্যন্ত গুরুতর অবস্থায় ভর্তি করানো হয়েছিল। এরপর গত জুন মাসে তিনি আবারও অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু বহু চেষ্টার পরেও বাঁচানো সম্ভব হয়নি তাঁকে।
তাঁর আমলেই জম্মু কাশ্মীরের ৩৭০ ধারা বাতিল
১৯৭০-এর দশকে সত্যপাল মালিকের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়েছিল। ২০০৪ সালে বিজেপিতে যোগদানের আগে তিনি চৌধুরী চরণ সিংয়ের ভারতীয় ক্রান্তি দল, কংগ্রেস এবং ভিপি সিংয়ের নেতৃত্বাধীন জনতা দল-সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে কাজ করেছেন। পরে তিনি লোকদলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এরপর ২০১৮ সালের আগস্ট থেকে ২০১৯ সালের অক্টোবর পর্যন্ত সত্যপাল মালিক জম্মু ও কাশ্মীরের রাজ্যপাল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। সেই সময় ২০১৯ সালের আজকের দিনে ৩৭০ ধারা বাতিল করা হয়েছিল। তবে তিনি শুধু জম্মু ও কাশ্মীরের রাজ্যপাল ছিলেন না, গোয়ার এবং মেঘালয়ের রাজ্যপাল হিসেবেও নিযুক্ত ছিলেন তিনি।
একাধিক রাজ্যের রাজ্যপাল ছিলেন সত্যপাল!
জম্মু ও কাশ্মীরকে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত করার পর সত্যপাল মালিক গোয়ার ১৮ তম রাজ্যপাল হিসেবে নিযুক্ত হন। এবং ২০২২ সালের অক্টোবর পর্যন্ত তিনি মেঘালয়ের ২১তম রাজ্যপাল হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি ২০১৭ সালের অক্টোবর থেকে ২০১৮ সালের আগস্ট পর্যন্ত বিহারের রাজ্যপাল হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। তাকে ২০১৮ সালের ২১ মার্চ থেকে ২৮ মে পর্যন্ত ওড়িশার রাজ্যপাল হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়াও হয়েছিল। এছাড়াও ১৯৮৯ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত জনতা দলের সদস্য হিসেবে আলিগড় থেকে নবম লোকসভা সদস্য ছিলেন সত্যপাল মালিক। যদিও বিজেপিতে যোগদানের আগে ১৯৮৪ সালে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ১৯৮৭ সালে বোফর্স কেলেঙ্কারি উন্মোচিত হওয়ার পর সত্যপাল মালিককে কংগ্রেস থেকে বিতাড়িত করে দেওয়া হয়।
শোকবার্তা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের
এদিকে সত্যপাল মালিকের প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন বিভিন্ন রাজনীতিবিদরা। পশ্চিমবঙ্গের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টের মাধ্যমে সত্যপাল মালিকের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি লিখেছেন, “জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন রাজ্যপাল সত্যপাল মালিকজীর মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত। তিনি অত্যন্ত জনপ্রিয় একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন, যিনি কিনা সত্যি বলতে কোনো দ্বিধা বোধ করতেন না। তাঁর পরিবার, বন্ধুবান্ধব এবং অনুসারীদের প্রতি আমার সমবেদনা রইল।”