টাটা অতীত, এবার সিঙ্গুরে ৫০০ কোটির ওয়্যারহাউস প্রকল্পে ছাড়পত্র দিল রাজ্য সরকার

Invest In Singur

সৌভিক মুখার্জী, সিঙ্গুর: সিঙ্গুর আন্দোলন নিয়ে টালবাহানা নতুন কিছু নয়। এক সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধীতায় সিঙ্গুর ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল টাটা গোষ্ঠী (Invest In Singur)। তবে এবার সেই সিঙ্গুরেই ৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের সিদ্ধান্তে সবুজ সংকেত দিয়েছে রাজ্যের মন্ত্রিসভা। হ্যাঁ, বুধবার নবান্নে আয়োজিত বৈঠকে সিঙ্গুরে ওয়্যারহাউস প্রকল্পে সীলমোহর দিল রাজ্য সরকার। ফলত, এবার রাজ্যের শিল্প খাতে আসবে আমূল পরিবর্তন।

এদিন রাজ্যের অর্থপ্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, নাহার ইন্ডাস্ট্রিয়াল এন্টারপ্রাইজেস লিমিটেড এই প্রকল্পে বিনিয়োগ করবে। আর সংস্থাকে ৯৯ বছরের জন্য ১১.৩৫ একর জমি লিজে বরাদ্দ করা হয়েছে। এই প্রকল্প যদি একবার চালু হয়, তাহলে অ্যামাজন, ফ্লিপকার্টের মতো ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলোর পরিষেবা আরও উন্নত হবে। উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে সিঙ্গুর থেকে টাটা গোষ্ঠী বিদায় নেওয়াতে বামফ্রন্ট সরকার মমতাকেই কাঠগড়ায় তুলেছিল। তবে রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার ১৪ বছর পর ৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ আসলো এবার।

মিটবে বিদ্যুতের চাহিদা

রাজ্যে দিনের পর দিন বিদ্যুতের চাহিদা মাথাচাড়া দিয়ে বাড়ছে। তবে সেই চাহিদার কথা মাথায় রেখে এবার নিলামের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, জেএসডব্লু এনার্জি লিমিটেড প্রতি কিলোওয়াট ঘন্টায় ৫.৮১ টাকা দরে বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে বলেই প্রস্তাব দিয়েছে। এমনকি পিপিপি মডেলে ১৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার নিউ সুপার ক্রিটিক্যাল থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্ট তৈরি করা হবে। কিন্তু কোথায় সেই জমি নেওয়া হবে তা এখনও পর্যন্ত চূড়ান্ত হয়নি। শুধু তাই নয়, ৮০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুটি ইউনিটও তৈরি করা হবে সেখানে।

আরও পড়ুনঃ শিয়ালদা-হাওড়া লাইনে ৫০০ টাকা দিয়ে আবেদন করে স্টেশনে করুন ব্যবসা, উদ্যোগ পূর্ব রেলের

শিল্প পার্কে জমি বরাদ্দ

এদিকে রাজ্যের শিল্প উন্নয়ন নিগমের আওতায় একাধিক শিল্প পার্কে জমি বরাদ্দ করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, এবার হরিণঘাটা ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে ২.৭৭ একর, জঙ্গল সুন্দরী কর্মনগরীতে ১৫৫ একর, বিদ্যাসাগর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে ৩০.৪২ একর এবং পানাগর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে ১.৩৭ একর জমি বরাদ্দ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, ডোমজুড়ের জেমস অ্যান্ড জুয়েলারি পার্ক অফিস স্পেসের জন্য মোট ২০,২৬০ বর্গফুট জমি বরাদ্দ করা হয়েছে। আর এই জমিগুলি মূলত শিল্প, বিদ্যুৎ এবং পরিকাঠামোগত উন্নয়নে কাজে লাগবে।

আরও পড়ুন: ইসলাম ভুলে এবার পাকিস্তানও বিক্রি করবে মদ!

এদিকে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে মাদার ডেয়ারি ক্যালকাটা এবং বাংলা ডেয়ারিকেও সংযুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর এই দুই সংযুক্তিকরণের ফলে সংস্থাটি ‘বাংলা ডেয়ারি’ নামেই পরিচিত হবে। রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন, মাদার ডেয়ারির দুধ এবং দই দীর্ঘদিন ধরেই রাজ্য জনপ্রিয়। একইভূত হলে তার চাহিদা আরও বাড়বে। শুধু তাই নয়, হাওড়ার অঙ্কুরহাটিতে ০.৫ একর জমি জেমস অ্যান্ড জুয়েলারি পার্কের দ্বিতীয় পর্যায়ের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে। আর সেখানে কারিগরি শিক্ষা দফতরকে প্রশিক্ষণের কাজকর্ম দেওয়া হবে। এর ফলে রাজ্যের শিল্পখাতে যে আমূল বদল আসবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

Leave a Comment