বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: ভারতের পেছনে একেবারে আদা জল খেয়ে লেগেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প! আমেরিকান প্রেসিডেন্টের শুল্ক নিয়ে বেপরোয়া মনোভাব মুখে না বললেও, মনে মনে একেবারেই মেনে নিচ্ছে না বিশ্বের কেউই! যদিও ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি দেশ আমেরিকার দ্বৈত নীতির সমালোচনা করেছে।
তবে তাতে কিছুই নাকি যায় আসে না প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের! রাশিয়া থেকে তেল কেনার অপরাধে ইতিমধ্যেই ভারতের উপর 50 শতাংশ শুল্ক চাপিয়ে বসেছে আমেরিকা। যার জেরে দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক টানাপোড়েন কার্যত ঊর্ধ্ব গগনে। এমতাবস্থায়, সমস্যার মাঝেই ফের বড় কথা বলে দিলেন আমেরিকার শাসক।
আপাতত ভারতের সাথে কোনও বাণিজ্য আলোচনা নয়!
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আগে থেকেই ভারতকে নরমে গরমে বহুবার বুঝিয়েছে আমেরিকা। দিল্লি যাতে মস্কোর সাথে বেশি সখ্যতা না দেখায় তার জন্যেও বহুবার একাধিক হুশিয়ারি এসেছে, পশ্চিমী দুনিয়া থেকে! তবে সেসব নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বন্ধু রাশিয়া থেকে তেল কিনে গেছে ভারত। আদতে এই পথটা তৈরি করে দিয়েছিল আমেরিকা নিজেই!
মূলত গোটা বিশ্ববাজারে ভারসাম্য বজায় রাখতে আমেরিকাই রাশিয়া থেকে ভারতকে তেল কেনার কাজ চালিয়ে যেতে বলেছিল! এখন সেসব কথা ভুলে গিয়ে ভারতের উপর একের পর এক শুল্কের খাড়া নামিয়ে আনছেন ট্রাম্প। সর্বশেষ অতিরিক্ত 25 শতাংশ শুল্ক মিলিয়ে মোট 50 শতাংশ কর আরোপ করে এবার বড় বার্তা দিলেন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট।
একাধিক রিপোর্ট অনুযায়ী, সম্প্রতি হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে চলা বাণিজ্যিক টানাপোড়েন নিয়ে কথা বলতে গিয়েই ট্রাম্প জানান, যতদিন না পর্যন্ত এই সমস্যা মিটছে, ততদিন কোনও বাণিজ্যিক আলোচনা হবে না। অর্থাৎ, শুল্ক নিয়ে সমস্যা বজায় রেখে ভারতের সাথে বাণিজ্য সম্পর্কিত আলোচনায় বসতে চায় না আমেরিকা।
India-US trade talks on hold amid tariff war?
US President Donald Trump says, “No trade talks till tariff issue resolved.”#ITVideo #NewDelhi #WashingtonDC #DonaldTrump #NarendraModi | @Sriya_Kundu @JournoPranay pic.twitter.com/KEnmk2xNyO— IndiaToday (@IndiaToday) August 8, 2025
যদিও, ট্রাম্প যে কারণে অর্থাৎ রাশিয়া থেকে তেল কেনার বিষয়টিকে অপরাধ বানিয়ে ভারতের উপর চড়া শুল্ক চাপিয়েছে, এই গোটা বিষয়টির প্রতিক্রিয়ায় ভারতের বিদেশ মন্ত্রক স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, রাশিয়া থেকে তেল কেনার কারণে শুধুমাত্র ভারতকেই লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে আমেরিকা সহ ইউরোপীয় দেশগুলি। এই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ অযৌক্তিক এবং অন্যায্য।
শুধু তাই নয়, রাশিয়ার সাথে ভারতের থেকেও বেশি বাণিজ্য যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলির, তা একেবারে তথ্য প্রমাণ এবং পরিসংখ্যান দেখিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছিল ভারতীয় বিদেশমন্ত্রক। একই সাথে, নয়া দিল্লি বলে, ভারতের তেল আমদানি মূলত বাজারের উপর নির্ভরশীল। 140 কোটি মানুষের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
অবশ্যই পড়ুন: ISL নিয়ে অনিশ্চয়তা, দুঃসময়ের মাঝেই খুশির খবর! FIFA র্যাঙ্কিংয়ে ৭ ধাপ এগলো ভারত
উল্লেখ্য, আমেরিকার সাথে বাণিজ্য চুক্তির জন্য ইতিমধ্যেই পঞ্চম রাউন্ড বৈঠক সেরেছে ভারত। চলতি মাসের একেবারে শেষ লগ্নে আমেরিকার সাথে ষষ্ঠ রাউন্ডের বৈঠক হওয়ার কথা নয়া দিল্লির। কিন্তু তার আগেই ডোনাল্ড ট্রাম্পের আলোচনা সংক্রান্ত বড় সিদ্ধান্ত সম্ভাব্য বৈঠকে একপ্রকার জল ঢেলে দিল বলা যায়।