ট্রেনে পরিবেশন করা হচ্ছে ‘হালাল মাংস!’ রেলকে নোটিশ পাঠাল মানবাধিকার কমিশন

Indian Railways Halal Meat

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: ভারতীয় রেলের নন-ভেজ খাবারে শুধুমাত্র হালাল মাংস (Indian Railways Halal Meat) পরিবেশন করা হয়। এরকম অভিযোগের ভিত্তিতে এবার রেলওয়ে বোর্ডকে নোটিশ পাঠাল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। অভিযোগকারী দাবি করছে যে, এই প্রক্রিয়া দেশের বিভিন্ন ধর্ম গোষ্ঠীর মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি করছে এবং কিছু কিছু বিশেষ সম্প্রদায়ের মানুষদের জীবিকা ও অধিকারকেও ক্ষুন্ন করছে। আর এই অভিযোগ সামনে আসতেই তীব্র শোরগোল পড়েছে যাত্রীদের মধ্যে।

হালাল মাংস পরিবেশন মানবাধিকার লঙ্ঘন

ভোপালের বাসিন্দা সুনীল আহিরওয়ারের করা এক অভিযোগে বলা হয়েছে, ভারতীয় রেলওয়ে নন-ভেজ খাবারের ভিতরে শুধুমাত্র হালাল মাংস পরিবেশন করে। এর ফলে হিন্দু এবং শিখ ধর্মাবলম্বীরা তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী খাবার খাওয়ার সুযোগ পান না। আর হিন্দু দলিত সম্প্রদায়ের মানুষ যারা ঐতিহ্যগতভাবে মাংস ব্যবসার সঙ্গে জড়িত, তাদের জীবিকাও সংকটের মুখে পড়ছে। এমনকি অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, এটি সংবিধানের সমতা, বৈষম্যহীনতা, জীবিকা সহ একাধিক মৌলিক অধিকারগুলিকে লংঘন করছে।

উল্লেখ্য, ২৪ নভেম্বরের শুনানির ভিত্তিতে কমিশন জানিয়েছিল, এই অভিযোগে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রাথমিক ভিত্তি রয়েছে। রেল একটি সরকারি সংস্থা হওয়ায় সমস্ত ধর্মের মানুষদের খাদ্য পছন্দকে সম্মান করা তাদের দায়িত্ব। শুধুমাত্র হালাল মাংস বিক্রি হলে বহু অমুসলিম সম্প্রদায়ের জীবিকার উপর প্রভাব পড়তে পারে। আর এটি ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ সাংবিধানিক চেতনাকেও অমান্য করছে।

হালাল এবং হারামের পার্থক্য কোথায়?

জানিয়ে রাখি, হালাল শব্দটি শুধুমাত্র ইসলাম ধর্মের সঙ্গেই সম্পর্কিত। সেক্ষেত্রে আমিষ খাবারেই এই হালাল স্টিকার দেওয়া হয়। ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী, হালাল অর্থাৎ যে পশুর মাংস খাওয়া হচ্ছে তাকে কীভাবে হত্যা করা হচ্ছে সেই বিষয়টি এর সঙ্গে জড়িত। আর হালাল মাংসকে সাধারণত জবাই করে কাটা হয়। তবে হালাল বিধি অনুযায়ী, কোনও ধারালো ছুড়ি দিয়ে পশুর গলার শিরা বা শ্বাসনালী কেটে দেওয়া হয়। কিন্তু মেরুদন্ডের হাড় কাটলে চলবে না। আর ইসলাম রীতি অনুযায়ী, জবাই করার সময় পশুর মুখ মক্কার দিকে থাকে। তবে এই নির্দিষ্ট বিধি মেনে পশু জবাই না করা হলে তাকে হারাম বলেই মানা হয়। আর ইসলাম আইন অনুযায়ী সেই মাংস খাওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

আরও পড়ুনঃ জমি দখল করে বাবরি মসজিদ! হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক কৃষক

এদিকে এ নিয়ে কমিশন রেল বোর্ডের চেয়ারপার্সনকে নোটিশ পাঠিয়ে জানিয়েছে যে, অভিযোগের বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত করতে হবে। এমনকি তদন্তের পর দুই সপ্তাহের মধ্যেই পদক্ষেপ নিতে হবে এবং মানবাধিকার কমিশনকে রিপোর্ট জমা দিতে হবে। যদিও এখনও পর্যন্ত রেল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনও বিবৃতি জারি করা হয়নি।

Leave a Comment