প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: আগামী বছরই ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচন। তাই এখন থেকেই রাজনৈতিক পারদ বেশ বেড়েই চলেছে। ভোটের মেজাজ যত এগোচ্ছে শাসক এবং বিরোধী দলগুলির মধ্যে আরও বাড়ছে তীব্র বাক্যুদ্ধ। একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। আর এই আবহেই ফের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) লক্ষ্য করেই কুৎসিত পোস্ট করলেন এক বিজেপি নেতা।
বিতর্কিত পোস্ট বিজেপি নেতার
গত শনিবার, কলকাতায় আন্তর্জাতিক ফুটবল তারকা লিওনেল মেসির আগমনকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল কলকাতার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে। একের পর এক কটাক্ষ ধেয়ে এসেছিল শাসকদলের বিরুদ্ধে। বাধ্য হয়েই তাই কিছুদিন আগে ক্রীড়াপদ থেকে ইস্তফা দেন অরূপ বিশ্বাস। এমতাবস্থায় মেসিকাণ্ডে যখন সরকারের উপর চাপ বাড়ানোর কৌশল নিয়েছে বিরোধীরা, তখন ফেসবুকে মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করলেন বিজেপির বোলপুর সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক কিষাণ কর্মকার। তাঁর একটি পোস্টে কিষাণ বাবু লিখেছেন যে, “ ভয় পেয়েছে ডাইনি মমতা, হারাবে এবার ক্ষমতা”। আর সেই পোস্ট ভাইরাল হতেই তুমুল শোরগোল পড়ে যায় বোলপুরে। আর তাতেই প্রতিবাদী স্বর শোনা গেল পঞ্চায়েত গ্রামোন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারের মুখে।
তীব্র প্রতিবাদ মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারের
পঞ্চায়েত গ্রামোন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বিজেপিকে আক্রমণ করে বলেন যে, “ওরা বাংলার অস্মিতা বোঝে না। বাংলাকে অপমান করতে ছাড়ে না। যারা বঙ্কিমচন্দ্রকে দাদা বলে, যারা রবীন্দ্রনাথের অবদান অস্বীকার করে, মাস্টারদাকে মাস্টার বলে। ওনার সাঙ্গপাঙ্গরা এই ধরনের কথাবার্তা বলবে এটাই স্বাভাবিক। এর থেকে বেশি কিছু বলার নেই।” তবে এই বিতর্ক পোস্ট ঘিরে বিজেপি সাধারণ সম্পাদক কিষাণ কর্মকার সাফ জানিয়েছেন, “২০২৬-এর ক্ষমতায় আসতে পারবে না তৃণমূল। বাংলার মানুষ সরে যাচ্ছে। পুলিশ দিয়ে সরকার চালানো হচ্ছে। তাই আমি দাত্যহীন ভাষায় কটাক্ষ করছি।”
আরও পড়ুন: ঝুঁকেগা নেহি! দফতরে হামলা পর প্রথমবার প্রকাশিত হল ডেলি স্টার ও প্রথম আলোর সংবাদপত্র
প্রসঙ্গত, এর আগেও সমাজমাধ্যমে বিজেপির এক পোস্টে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘একনায়ক’ বলে কটাক্ষ করা হয়েছিল। পোস্টে মুখ্যমন্ত্রীর ছবির সঙ্গে নাৎসি নেতা অ্যাডলফ হিটলারের ছবি জুড়ে দেওয়া হয়েছিল। শুধু তাই নয়, সেই পোস্টের ক্যাপশনে লেখা ছিল, ‘একনায়ক ভীত’। আর বিজেপির এই পোস্ট ঘিরেই রাজ্য রাজনীতিতে সেই সময় নতুন করে বিতর্কের ঝড় উঠেছে। এরপর আরো একবার মমতাকে নিশানা করে কুরুচিকর পোস্ট ফের বিতর্ক তৈরি করল। সব মিলিয়ে, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের রাজনীতিতে উত্তেজনার পারদ যেন আরও বাড়ল।