বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: গত রবিবার ডার্বি জিতে মোহনবাগানকে ডুরান্ড থেকে বিদায়ের পথ দেখিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। লাল হলুদের সাফল্যে বাঁধভাঙা উচ্ছাস ধরা দিয়েছিল বাংলার নানা প্রান্তে। তবে রবিতে জ্বলে ওঠা মশাল, বুধবারই ডায়মন্ড হারবার এফসির সামনে নিভে গেল। ডুরান্ড কাপের সেমিফাইনালে উঠেও রাস্তা প্রশস্ত করতে পারল না কলকাতা ময়দানের প্রধান দল ইস্টবেঙ্গল।
এদিকে ইস্টবেঙ্গলকে যারা হারালো, সেই ডায়মন্ড হারবার এফসি ফুটবলের দুনিয়ায় খুব একটা বিশেষ পরিচিত নয়। বরং বাংলার এই দলের পরিচিতি তৃণমূল সাংসদ তথা যুব নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্লাব হিসেবেই। এবার সেই উঠতি দলের কাছেই মুখ পুড়ল লাল হলুদের। কিন্তু ঠিক কোন কারণে হারতে হল অস্কার ব্রুজোর দলকে?
কেন হারল ইস্টবেঙ্গল?
গত রবিবার মোহনবাগানের বিরুদ্ধে যে মেজাজ নিয়ে মুহুর্মুহু আক্রমণ শানাচ্ছিল ইস্টবেঙ্গল, গতকাল ডায়মন্ড হারবার এফসির বিরুদ্ধে তার সিকিভাগও চোখে পড়েনি। আসলে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে আক্রমণে গিয়েও বারবার মুখ থুবড়ে পড়তে হয়েছে ইস্টবেঙ্গলের ছেলেদের।
এদিন, সুযোগ নষ্টের রোগ যেন কুরে কুরে খাচ্ছিল মোহনবাগান প্রতিবেশীকে। বলা বাহুল্য, সেমির মঞ্চে বুধবার ডায়মন্ড হারবারের বিরুদ্ধে একেবারে হাতেগুনে 18টি কর্নার পেয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। তবে দুঃখের বিষয়, একবারও সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পারেনি লাল হলুদ ব্রিগেড।
কখনও গোলমুখি হয়েও ফিরে আসতে হল, কখনও বল বারে লেগে, কখনও আবার জোরালো শট নিলেও তা প্রতিহত করল প্রতিপক্ষ। সব মিলিয়ে, ডুরান্ড কাপের সেমিফাইনালের মঞ্চে একাধিক সুযোগ নষ্ট করে নিজেদের ডুবে যাওয়ার রাস্তা নিজেরাই তৈরি করেছিল ইমামি ইস্টবেঙ্গল।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সুযোগ নষ্টের রোগ ছাড়াও কোচ অস্কারের 4-5-1 ফর্মেশনে দল সাজানোর বিষয়টাও ইস্টবেঙ্গলের হারের অন্যতম কারণ। তাছাড়াও, গত মোহনবাগান ম্যাচের নায়ক দিমিত্রি দিয়ামান্তাকোসকেই শুধু আক্রমণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কেন একা দিমিত্রিকে আক্রমণে রাখা হল তা নিয়েও সংশয়ে রয়েছেন লাল হলুদ সমর্থকরা। আর এ সব কারণেই প্রথমবার ডুরান্ড কাপ খেলতে আসা দল ডায়মন্ড হারবার এফসির কাছে 2-1 ব্যবধানে হেরে বিদায় নিতে হল ইস্টবেঙ্গলকে।
অবশ্যই পড়ুন: সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে নিজেই যুদ্ধ ডাকছে আমেরিকা? ফুঁসছে দুই শত্রু দেশ!
উল্লেখ্য, বুধবার সুযোগ নষ্টের রোগ নিয়ে প্রথমার্ধে কোনও গোল করতে পারেনি ইস্টবেঙ্গল। যদিও ম্যাচ বলছে শুরু থেকেই প্রতিপক্ষের উপর দাপট ধরে রেখেছিল তারা। এরপর দ্বিতীয়ার্ধে 66 মিনিটের মাথায় গতির বিরুদ্ধে দুরন্ত বাইসাইকেল কিক তুলে গোল করেন ডায়মন্ড হারবার এফসির কোর্তাজার। এগিয়ে যায় অভিষেকের দল।
প্রতিপক্ষের কাছে গোল খেয়ে তা হজম করার পরের মিনিটেই দূরপাল্লার শটে গোল করে ম্যাচের সমতা ফেরান আনোয়ার আলি। তবে কথায় আছে, শেষ ভাল যার সব ভাল তার। বুধবার 83 মিনিটের ম্যাচে আচমকা গোল করে ডায়মন্ড হারবারকে ফের এগিয়ে দেন অধিনায়ক জবি জাস্টিন। সেই গোল ম্যাচ শেষের আগে পর্যন্ত শোধ দিতে পারেনি লাল হলুদ।