সৌভিক মুখার্জী, ক্লল্কাতা: উত্তরপ্রদেশের কানপুরে ঘটেছে এক হৃদয় বিদারক ঘটনা। সাইয়ারা (Saiyaara) মুভি দেখার পর প্রেমিক প্রেমিকার মধ্যে শুরু হওয়া সামান্য মনোমালিন্যের অবসান ঘটল মর্মান্তিক মৃত্যুর মাধ্যমে। হ্যাঁ, 24 বছরের লক্ষণ শুক্লার আত্মহত্যাকে ঘিরে রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে গোটা এলাকায়। আসলে কী ঘটেছিল? চলুন সবটা খোলসা করা যাক আজকের প্রতিবেদনে।
সবকিছুর সূত্রপাত সাইয়ারা সিনেমা
সম্প্রতি বলিউডের পর্দায় মুক্তি পেয়েছে সাইয়ারা সিনেমা। তরুণ থেকে শুরু করে প্রাপ্তবয়স্ক, সবার মধ্যেই ঝোঁক দেখা যাচ্ছে এই মুভিকে ঘিরে। সূত্রের খবর, বুধবার রাতে প্রেমিকা গুঞ্জনের সঙ্গে সিনেমা হলে গিয়েছিল লক্ষণ। উল্লেখ্য, সাইয়ারা সিনেমাটি এক হৃদয় ভাঙ্গা প্রেমের কাহিনীকে কেন্দ্র করেই। আর সেই সিনেমাই বাস্তবে রূপ পেল তাদের জীবনে। হ্যাঁ, সিনেমা দেখার পরেই গুঞ্জন আবেগে ভেসে যাচ্ছিল। যেন নিজের জীবনের সঙ্গে মিল খুঁজে পাচ্ছিল সিনেমার দৃশ্যগুলির। তবে লক্ষণ গুঞ্জনের এই আচরণে ভীষণভাবে অস্বস্তিতে পড়ে। আর এ নিয়েই শুরু হয় তর্ক-বিতর্ক।
রহস্যময় মৃত্যু
তবে পরের দিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার সেই তর্কের অবসান ঘটে ভয়াবহ মৃত্যুর মাধ্যমে। লক্ষণ শুক্লার ঝুলন্ত দেহ পাওয়া যায় তাঁর নিজের ঘরে। আশেপাশের প্রতিবেশীরা জানিয়েছে, তারা কান্নার শব্দ শুনে দরজা খোলার চেষ্টা করেন। কিন্তু গুঞ্জন ভিতর থেকে বলেন, চাবি খুঁজে পাচ্ছে না। এরপর দরজা খোলায় দেখা যায় লক্ষ্মণের নিথর দেহ অর্ধেক বিছানায়, আর অর্ধেক মেঝেতে পড়ে রয়েছে। এমনকি পাখায় ঝোলানো ছিল ছেড়া ফাঁস।
‘सैयारा मूवी’ देखी फिर कर ली आत्महत्या
परिवार ने लगाया तलाकशुदा लिव-इन पार्टनर पर हत्या-शोषण का आरोप
जाँच में जुटी पुलिस, कानपुर का मामलाhttps://t.co/XG6rj6EIwV pic.twitter.com/az591sSU2i
— ऑपइंडिया (@OpIndia_in) July 25, 2025
ভাইরাল ভিডিও
এই ঘটনার পর একটি 4 মিনিট 24 সেকেন্ডের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। সেখানে গুঞ্জনকে কান্নাকাটি করতে দেখা যাচ্ছে। এমনকি গুঞ্জন বলছে, “ভাইয়া, ও কাঁদছিল….শুধু চাকরির চিন্তাতেই ছিল।” তবে প্রতিবেশীদের মনে প্রশ্ন, যখন ঘটনাটি ঘটেছিল, তখনই কেন গুঞ্জন চিৎকার করে সবার সাহায্য চায়নি। গুঞ্জনের বক্তব্য, লক্ষণ ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করেই আত্মহত্যা করে। তবে আশেপাশের মানুষ দাবি করছে, গুঞ্জন বহু সময় ধরে ভিতরেই ছিল এবং কাউকে কিছু জানায়নি। আর এতে সন্দেহ আরো দানা বাঁধছে।
উল্লেখ্য, লক্ষণের বাবা অর্জুন শুক্লা অভিযোগ করেছে, তার ছেলেকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে লক্ষ লক্ষ টাকা আদায় করেছিল গুঞ্জন। তার দাবি, লক্ষণ একটি দোকানে কাজ করত। আর কিছুদিন আগে সে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে যায় মায়ের গয়না আর সমস্ত সঞ্চয় নিয়ে। লক্ষণের পরিবার এখন সরাসরি গুঞ্জনের বিরুদ্ধেই হত্যার অভিযোগ আনছে।
আরও পড়ুনঃ মাধ্যমিক পাসে পরীক্ষা ছাড়াই চাকরি! BSF-এ স্পোর্টস কোটার আওতায় কনস্টেবল নিয়োগ
তদন্ত নেমেছে পুলিশ
ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাওয়তপুর থানার পুলিশ ও ফরেন্সিক দল ঘটনাস্থলে এসে তদন্ত শুরু করেছে। যদিও প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা হিসেবেই মনে করা হচ্ছে, কিন্তু পরিবারের অভিযোগ, এটি কোনো চক্রান্ত। তাই বিষয়টি ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন পর্যায়ে পৌঁছেছে। উল্লেখ্য, দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। এমনকি পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতেই সবদিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এখন দেখার রিপোর্টে কী উঠে আসে।