প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: দিনের পর দিন কলকাতা শহরে ডেঙ্গুর প্রকোপ (Dengue In Kolkata) যেন বেড়েই চলেছে। আর সেই কারণে ব্যাপক চিন্তিত হয়ে পড়েছে কলকাতা পুরসভা। শহরের পরিচ্ছন্নতা এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে দফায় দফায় নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি কলকাতা শহরে ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া রুখতে পুরসভা জোরকদমে কাজ শুরু করেছে। এমতাবস্থায় কলকাতায় ডেঙ্গি প্রতিরোধে সক্রিয় করতে শহরের একাধিক ওয়ার্ডকে ‘হটস্পট জোন’ হিসেবে চিহ্নিত করল কলকাতা পুরসভা।
কোন কোন ওয়ার্ড হটস্পট জোন?
শহরে ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়ার মতো মশাবাহিত রোগ আটকাতে তৎপর হয়ে উঠেছে কলকাতা পুরসভা। অতীতের উদাহরণ থেকে যে এলাকাগুলিতে বেশি সংখ্যায় ডেঙ্গিবাহিত মশার পরিমাণ বেশি পাওয়া গিয়েছে, সেখানে বাড়তি জোর দেওয়ার ক্ষেত্রে কড়া নির্দেশ দিলেন শহরের ডেপুটি মেয়র তথা স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পারিষদের সদস্য অতীন ঘোষ। গতকাল অর্থাৎ সোমবার ওটুন বাবু জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই যে ওয়ার্ডগুলি ডেঙ্গি সংক্রমণের দিক থেকে বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে, সেগুলিকে চিহ্নিত করে হটস্পট জোন ঘোষণা করা হয়েছে। আর সেই ওয়ার্ড নম্বরগুলি হল ৬৬, ৬৭, ৬৯, ৭০, ৭৭, ৯৩ এবং ১০৮-এর মত বেশ কিছু এলাকা। সেই মতোই এবার কাজ শুরু করে দিল কলকাতা পুরসভা।
প্রকাশ্যে এল ডেঙ্গু ম্যালেরিয়ার তালিকা
এদিন সাংবাদিক বৈঠকে স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পারিষদের সদস্য অতীন ঘোষ একটি রিপোর্ট প্রকাশ্যে এনেছেন। যেখানে চলতি বছরের শুরু থেকে কত জন ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন, সেই নিয়ে বিস্তারিত তথ্য উঠে এসেছে। জানা গিয়েছে, চলতি বছরের শুরু থেকে গত ১০ আগস্ট পর্যন্ত মোট ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ঠেকেছে ২৯০ এর ঘরে। সেক্ষেত্রে গতবছর এই সময় সেই সংখ্যা ছিল ২৫৫ তে। অর্থাৎ গতবছরের তুলনায় এর সংখ্যা অনেকটাই বেশি। এদিকে আবার ২০২৩ সালে এখনও পর্যন্ত মোট ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা গিয়ে ঠেকেছে ৬৭২ এ। যার তুলনায় এবছর ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা কম। পাশাপাশি চলতি বছরের শুরু থেকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত ম্যালেরিয়ায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১১৫৬ জন। যা গতবছর এখনও পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছিলেন ১৩৫৮ জন। আবার ২০২৩ সালে এই সংখ্যা ছিল ২৮৮৮ জন।
আরও পড়ুন: ‘ব্রিটিশদের ভয়ে জার্মানি পালিয়েছিলেন নেতাজি!’ দাবি কেরলের পাঠ্যবইয়ে
উল্লেখ্য অতীন ঘোষ এই ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির প্রসঙ্গে জানিয়েছেন যে, ২০২৪ এর তুলনায় ডেঙ্গি অনেকটাই বেড়েছে। তবে আমরা ২০২৩ সালের পরিসংখ্যানকে মাথায় রেখেই কাজ করছি। পরের মাস থেকেই পুজো শুরু, প্রায়ই দেখা গিয়েছে, প্যান্ডেল তৈরির সময় বাঁশের মাথায় জল জমে রয়েছে, যা মশার উৎপাত বাড়াতে যথেষ্ট। তাই আগাম সচেতন হয়ে শহরের প্রতিটি পুজো উদ্যোক্তাদের সঙ্গে বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও তাঁর আরও সংযোজন, “প্রচারকর্মীরা হ্যান্ড মাইক নিয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে পথে পথে নামবেন এবং ৪৫৫, ৪৫৬ ধারায় যদি কোনও বাড়ি বন্ধ অবস্থায় থাকে তাহলে নিয়ম অনুযায়ী বাড়ির তালা ভেঙে পরিষ্কার করা হবে।”