সৌভিক মুখার্জী, জামালপুর: তামিলনাড়ুতে কাজে গিয়েই মৃত্যু হল পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের এক পরিযায়ী শ্রমিকের (Migrant Worker Death)। সূত্রের খবর, শনিবার সন্ধ্যাবেলা তাঁর দেহ এসেছে গ্রামের বাড়িতে। কিন্তু এই অস্বাভাবিক মৃত্যুতে ঘনাচ্ছে ধোঁয়াশা। পরিবার দাবি করছে, ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন বা এসআইআর তাঁর মৃত্যুর জন্য দায়ী। এসআইআর আতঙ্কেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন আর সেখান থেকেই মৃত্যু। আদৌ কি তাই?
অস্বাভাবিক মৃত্যু পরিযায়ী শ্রমিকের
সূত্রের খবর, ওই মৃত ব্যক্তির নাম বিমল সাঁতরা। বয়স ৫১। তিনি পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের নবগ্রামের বাসিন্দা। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, কাজের সূত্রে তামিলনাড়ু গিয়েছিলেন তিনি। গত ২৬ অক্টোবর হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে সেখানকার এক স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি হন। তবে চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর খবর পেয়ে তাঁর ছেলে বাপি সাঁতরা তামিলনাড়ু গিয়েছিলেন। সেখানে থানায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করেছেন তিনি।
ছেলের দাবি, বাবা ধান রোয়ার কাজে তামিলনাড়ু গিয়েছিলেন। দিন কয়েক আগে এসআইআর ঘোষনার আতঙ্কে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। ভোটার তালিকায় নাম থাকবে কিনা, তা নিয়ে আরও আশঙ্কায় ছিলেন। বারবার সে কথা আমাদেরকে বলতেন। সেই আতঙ্কেই বাবার মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার দেহ ময়নাতদন্ত হয়েছে।
দিন কয়েক আগেই মৃত্যু প্রদীপ করের
বলাবাহুল্য, কয়েকদিন আগেই এসআইআর আতঙ্কে আত্মহত্যা করেছেন উত্তর ২৪ পরগনার পানিহাটির বাসিন্দা প্রদীপ কর। এমনকি সেখান থেকে সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়। তাতে লেখা ছিল এসআইআর এবং এনআরসি আতঙ্কেই তাঁর মৃত্যু। যা নিয়ে এখন রাজ্য-রাজনীতিতে শোরগোল। পাশাপাশি বীরভূমে এক ৯৫ বছরের বৃদ্ধ এসআইআর আতঙ্কে আত্মহত্যা করেছেন বলেও খবর। এমনকি কোচবিহারের দিনহাটার বাসিন্দা খায়রুল শেখ বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। তাঁর পরিবার দাবি করেছিল যে, ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নামের বানান ভুল থাকার কারণে আতঙ্কে ছিলেন ওই বছর ষাটের বৃদ্ধ। এসআইআর ঘোষণার পরে আরও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। সেজন্যই বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন।
আরও পড়ুনঃ এবছর মন্নতে থাকছেন না কিং খান! তাহলে কোথায় হবে জন্মদিনের সেলিব্রেশন?
এদিকে বিমলের অস্বাভাবিক মৃত্যুতে গোটা গ্রামে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। শনিবার সন্ধ্যাবেলা তাঁর দেহ গ্রামে এসে পৌঁছয়। খবর পাওয়া মাত্রই তৃণমূল নেতারা এবং জামালপুরের বিধায়ক অলোক মাঝি তাঁর বাড়িতে পৌঁছন। বিধায়ক দাবি করছেন, রাজ্যে প্রায় আড়াই বছর ধরেই ১০০ দিনের কাজ বন্ধ। সে কারণে অনেকেই ভিন রাজ্যে কাজে গিয়েছিল। তবে এসআইআর আতঙ্কে অনেকেই চিন্তিত হয়ে পড়েছিল। সে কারণেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।