তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে খবর করার মাশুল? বর্ধমানে সাংবাদিকের বাড়িতে ভয়াবহ হামলা

Bardhaman

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বর্ধমানে (Bardhaman) সাংবাদিকের বাড়িতে হামলা! বাড়িতে ভাঙচুর দুষ্কৃতীদের। গভীর রাতে পরিবারকে গালিগালাজ ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। আর এই গোটা ঘটনায় নাম জড়িয়েছে বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাসের বিরুদ্ধে। ভাঙচুরের অভিযোগ দায়েরের পরেই তদন্তে নেমেছে পুলিশ প্রশাসন।

ঘটনাটি কী?

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গভীর রাতে বর্ধমানের খাগরাগড় মাঠপাড়ায় শেখ ইমতিয়াজ নামে এক সাংবাদিকের বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। ঘটনায় পরিবারের তরফে আঙুল উঠছে বিধায়ক খোকন দাসের বিরুদ্ধে। জানা গিয়েছে, ইমতিয়াজ মূলত সোশ্যাল মিডিয়ায় সাংবাদিকতা করে থাকেন। বিধায়কের বিরুদ্ধে কিছু খবর প্রকাশ করায় তাই সংবাদিককে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয় দুষ্কৃতীদের তরফ থেকে। শুধু তাই নয় পরিবারকেও গালিগালাজ ও প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। অভিযোগ পেয়েই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বর্ধমান জেলা পুলিশ।

প্রাণনাশের হুমকি সাংবাদিককে

এদিকে বাড়ি ভাঙচুরের গোটা ঘটনায় সাংবাদিক শেখ ইমতিয়াজ জানিয়েছেন যে, “আমার বাড়িটা ভেঙে দিয়েছে। বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাসের বিরুদ্ধে আমার চ্যানেলে খবর হয়। বরাবরই নিরপেক্ষভাবে সত্য খবরটা আমি তুলে ধরি। আর এটাই হয়তো আমার অপরাধ। দিনের পর দিন বর্ধমানের বুকে গুন্ডারাজ চলছে। আমাকে পেলে হয়তো মেরে দিত। পরিবারকে গালিগালাজ ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে প্রতিনিয়ত।” এছাড়াও ওই সাংবাদিকের দাবি ঘটনার পর সকালে তাঁরা যখন বাড়ি দেখতে যান তখনও তাঁদের উপর হামলা হয়।

আরও পড়ুন: ১৪ লক্ষ টাকা দিলে চাকরি! কে এই অরিন্দম পাল? প্রকাশ্যে এল আসল পরিচয়

কী বলছেন বিধায়ক খোকন দাস?

বর্ধমানে সাংবাদিকের বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় এদিন বিধায়ক খোকন দাস তাঁর বিরুদ্ধে আসা সমস্ত অভিযোগ খারিজ করেছেন। তিনি বলছেন, “বিধানসভা নির্বাচন যেহেতু আসছে। তাই কেউ কেউ আমাদের বদনাম করতে চাইছে। আমরা তাঁর নাম বলতে চাই না। আমরা আইসি সাহেবকে বলেছি তদন্ত করুন। যে বা যাঁরা দোষী সাব্যস্ত হবে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ভুলবেন না। দরকার হলে আমি এসপি সাহেবকেও বলব। আর ওটা তো আমার বিধানসভাও নয়। আমি ওখানে কোনওদিনই যাই না। তাহলে আমার নাম কী করে জড়াল? এর মধ্যে গভীর ষড়যন্ত্র আছে।” শেষ পাওয়া খবর অবধি এই হামলার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত তিনজন গ্রেফতার হয়েছে। বাকিরা এখনও অধরা।

এই ঘটনার প্রতিবাদে গর্জে উঠেছে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। নন্দীগ্রামের বিধায়ক টুইট করে লেখেন, ‘পশ্চিমবঙ্গ এখন শাসক দল তৃণমূলের বদান্যতায় দুষ্কৃতীদের স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠেছে। এখানে ভয়ের, ভীতির, ত্রাসের পরিবেশ বিরাজ করে। কেউ শাসকের বিরুদ্ধে সরব হলেই ধর্ম, বর্ণ, সম্প্রদায়, ভাষা, পেশা নির্বিশেষে তার উপর আক্রমণ হচ্ছে। সবচেয়ে বেশী আক্রান্ত হচ্ছেন ছোটো ছোটো ডিজিটাল নিউজ পোর্টালের সঙ্গে যুক্ত সাংবাদিকরা যাঁরা শাসকের অপকর্ম, দুর্নীতির খবর রাজ্যের কোনায় কোনায় ছড়িয়ে দিচ্ছেন। আর এতেই তাঁরা শাসকের রোষানলে পড়ছেন। কখনো আইনি নোটিশ, মিথ্যা মামলা, বা কখনো সরাসরি আক্রমণ বা হিংসাত্মক হামলার শিকার হচ্ছেন।’

Leave a Comment