সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: লোকসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পেশ করা 130তম সংশোধনী বিলকে ঘিরে রাজনীতির পারদ তুঙ্গে। হ্যাঁ, এই বিল অনুযায়ী কোনো জনপ্রতিনিধি, এমনকি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিংবা মুখ্যমন্ত্রী বা প্রধানমন্ত্রী যদি এক মাসের জন্য গ্রেফতার হয়, তাহলে 30 দিন পূর্ণ হওয়ার পর তাকে পদ থেকে সরে দাঁড়াতে হবে। আর এই প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) সরাসরি কটাক্ষ করলেন অমিত শাহকে।
বিরোধীদের ভয় পেয়েই এরকম বিল?
কলকাতার সাংবাদিক বৈঠকে অভিষেক কটাক্ষ করে বলেছেন, জনগণের সমস্যা সমাধানে বিজেপির কোনোরকম আগ্রহ নেই। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম তো আগুন। কৃষকরা ফসলের দাম পাচ্ছে না। সীমান্তে নিরাপত্তা বা বেকারত্ব, সব ক্ষেত্রেই কেন্দ্র সরকার ব্যর্থ। ক্ষমতা ধরে রাখতে বিরোধীদের দমন করতেই এরকম বিল আনা হয়েছে। অভিষেক দাবি করেছে, বিজেপির শক্তি এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যে, 303 থেকে 240-এ নেমে এসেছে। তাই এখন তদন্তকারী সংস্থাকেই অস্ত্র বানানো হচ্ছে।
Abhishek Banerjee on Constitution Amendment Bill:
“This Bill is nothing but a distraction. The ruling party’s real intent is to change the Constitution & divert attention from SIR. It’s a ploy to frame the Opposition. Our MPs were heckled—TMC will raise this matter!” -… pic.twitter.com/ePvignng6y
— Spandan Gain (@GainSpandanLIVE) August 20, 2025
সরাসরি শাহকে চ্যালেঞ্জ
এদিকে এই বিলের বিরোধিতা করতে গিয়ে অভিষেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে প্রকাশ্যে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আপনি যদি সত্যি নিরপেক্ষতার কথা বলেন, তাহলে 30 দিনের জায়গায় 15 দিন করুন। 16 তম দিনে মন্ত্রী নিজেই নিজের পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন। তবে যদি অভিযোগ প্রমাণিত না হয়, তাহলে যে অফিসার গ্রেফতার হয়েছে, তাকেও দ্বিগুণ সময় জেলে থাকতে হবে। তাহলে বুঝব যে, আপনার বুকে দম রয়েছে।
এটিকে অভিষেক পরিসংখ্যান টেনে বলেছেন, ইডি এতদিনে 5892টি মামলা করেছে। আর এর মধ্যে 8টি নিষ্পত্তি হয়েছে। অর্থাৎ সফলতার হার মাত্র 0.3 শতাংশ। তাহলে মূল উদ্দেশ্য দুর্নীতি রোধ করা নয়, বরং বিরোধীদের ধ্বংস করা। তিনি আরো অভিযোগ করেছেন, বিজেপির 28 তম মন্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে, যার মধ্যে 19 জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ। হ্যাঁ, খুন থেকে নারী নির্যাতনের মতো সব অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। আর শুভেন্দু অধিকারী বা হেমন্ত বিশ্ব শর্মার বিরুদ্ধে কোনোরকম পদক্ষেপও নেওয়া হয়নি। তাহলে এই বিল কি শুধুমাত্র বিরোধীদের জন্য?
আরও পড়ুনঃ গুজরাতে স্কুলের মধ্যেই ছাত্রকে কুপিয়ে খুন আরেক পড়ুয়ার! গ্রেফতার নাবালক
এমনকি তিনি এও দাবি করেছেন যে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই বিল পেশ করে এসআইআর থেকে নিজের নজর এড়ানোর চেষ্টা করছে। এই সরকার মানুষের সুরক্ষা নিয়ে কোনোরকম চিন্তাই করে না। যেকোনো মূল্যে ক্ষমতা ধরে রাখার চেষ্টা করছে তারা। কাউকে রাজনৈতিক শত্রুতার কারণে গ্রেফতার করা হলে সে আত্মসমর্পণের সুযোগটুকুও পাবে না।