সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: দিনে ১৫০০ কোটি টাকার ব্যবসা করেন আর রাতে চালান উবের (Uber Driver)! না, আমরা কোনও সিনেমার গল্প বলছি না। বাস্তব জীবনের এক অনন্য উদাহরণ দেবো আজকের প্রতিবেদনে। সম্প্রতি ৮৬ বছর বয়সী এক বৃদ্ধের জীবন কাহিনী তুলে ধরেছেন এক ভারতীয় উদ্যোক্তা, যা দেখে বাহবা জানাচ্ছে নেটিজেনেরা! এত বড় ব্যবসা থাকা সত্ত্বেও কেউ রাতে উবের চালান? জাগছে হাজারও প্রশ্ন।
কোটিপতি হয়েও চালাচ্ছেন উবের
আসলে ওই ৮৬ বছরের বৃদ্ধ একজন ভারতীয় উদ্যোক্তার উবের ড্রাইভার। একদিন ভ্রমণের সময় নাভ শাহ নামের ওই ব্যবসায়ী তাঁর ড্রাইভারকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে, তিনি কীভাবে তাঁর দৈনন্দিন খরচ পরিচালনা করেন। উত্তরে ড্রাইভার বলেন, আমার বিরাট বড় ব্যবসা রয়েছে। এমনকি তাঁর কোম্পানি থেকে বার্ষিক টার্নওভার প্রায় ১৭৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি। এই কথা শুনেই তার চক্ষু চড়কগাছে ওঠে। এত বড় ব্যবসা থাকা সত্ত্বেও কেউ উবের চালাচ্ছে?
তবে ড্রাইভার উত্তর দেয় যে, তিনি তাঁর আয়ের সিংহভাগ মহৎ উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেন। গত কয়েক দশক ধরে প্রতিবছর তিনি ২৪ জন মেয়ের শিক্ষার দায়িত্ব বহন করে আসছেন। এমনকি তাঁর নিজের তিনটি মেয়ে রয়েছে, যারা সকলেই সুশিক্ষিত আর সফল। আর তাদের সাফল্য দেখেই তিনি অন্যান্য মেয়েদের জন্য একইরকম সাহায্য প্রদান করেন। তিনি চান, দেশের আরও বেশি মেয়েরা যাতে উচ্চাকাঙ্ক্ষাগুলি অনুসরণ করতে পারে আর ভবিষ্যতে সুরক্ষিত ভাবে দাঁড়াতে পারে, তার ব্যবস্থা করা।
রয়েছে একাধিক বিলাসবহুল ব্যবসা
ওই ব্যক্তি জানান যে, তাঁর পরিবার জুড়ে একাধিক ব্যবসা ছিল। যার মধ্যে ১৩টি গহনার দোকান, ৬টি রেস্তোরা, ১টি সংবাদপত্রের অফিস, ৪টি সুপার মার্কেট এবং ১টি পাইকারি-খুচরা সুগন্ধির ব্যবসা রয়েছে। তবে নাভ শাহ যখন এই বিশাল সাম্রাজ্যের উত্থান সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে, তখন ড্রাইভার গর্বের সঙ্গে বলেন যে, তাঁর বাবা ১৯২৯ সালে মাত্র ৫ পাউন্ড দিয়েই এই সমস্ত ব্যবসার ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন। এরপর তা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এভাবে চলে আসছে।
আরও পড়ুনঃ এক ক্লিকেই যাচাই হবে পরিচয়, দেশজুড়ে চালু হল e-Passport! কীভাবে বানাবেন জানুন
এমনকি ড্রাইভারের এই কথায় অনুপ্রাণিত হয়ে একটি ভিডিও রেকর্ড করেছিলেন ওই ব্যবসায়ী এবং পরে সেটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেন, যা মুহুর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায়। এমনকি তিনি ওই চালকের নম্রতা আর ভদ্রতা নিয়ে প্রশংসায় পঞ্চমুখ হন। আর সেই ভিডিও হাজার হাজার দর্শকদের মন কাড়ে। কেউ কেউ কমেন্ট করেন যে, চালকের নিঃস্বার্থতা এবং নম্রতার জন্য সত্যিই প্রশংসা করতে হয়। কেউ কেউ বলেন যে, এরকম মানুষ সত্যিই সচরাচর দেখা যায় না।