সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: দুধ উৎপাদনের ক্ষেত্রে এবার বিরাট সাফল্যে এগোচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal Milk Production)। হ্যাঁ, পরিসংখ্যান বলছে, গত এক দশকের বেশি সময়ে রাজ্যে দুধ উৎপাদনের পরিমাণ প্রায় দ্বিগুনের কাছাকাছি পৌঁছেছে। আর এই অগ্রগতির ফলে তেলেঙ্গানা, মেঘালয় থেকে শুরু করে সিকিম, ওড়িশার মতো একাধিক বড় বড় রাজ্যকে পেছনে ফেলেছে বাংলা।
এক দশকে বিরাট বৃদ্ধি
রিপোর্ট বলছে, ২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গে দুধ উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ৪৪৭২ টন। আর বর্তমান তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৬৫০ টন। এদিকে প্রতি বছর ধারাবাহিকভাবে উৎপাদন বৃদ্ধির পিছনে রাজ্যের প্রাণী ও মৎসাবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা, উন্নত প্রজনন প্রযুক্তি, মাঠ পর্যায়ের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি এবং পশুখাদ্য ব্যবস্থাপনা কাজ করছে বলেই দাবি করা হয়েছে ওই রিপোর্টে।
আরও পড়ুন: ২০২৫-এ সবচেয়ে বেশি আয় করেছেন এই ৭ ক্রিকেটার, তালিকার শীর্ষে বিরাট কোহলি
প্রসঙ্গত, রাজ্যের এই সাফল্যের স্বীকৃতি মিলেছে ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অফ ভেটেরিনারি সায়েন্স জাতীয় সম্মেলনে। হ্যাঁ, বিহারের পাটনায় অবস্থিত প্রাণীবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত এই সম্মেলনে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের পশু চিকিৎসক বিজ্ঞানীরা অংশ নিয়েছিলেন। এমনকি সেখানে ভারতীয় কৃষি অনুসন্ধান পরিষদের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল ডক্টর রাঘবেন্দ্র ভট্ট উপস্থিত ছিলেন। যিনি ভেটেরিনারি শিক্ষা এবং গবেষণার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন।
সেই বক্তব্যে উঠে আসে ভেটেরিনারি শিক্ষা ব্যবস্থার এক মারাত্মক সমস্যা। জানা যায়, বর্তমানে দেশে ভেটেরিনারি সায়েন্সে স্নাতক হতে কমপক্ষে সাড়ে পাঁচ বছর সময় লাগে, যার মধ্যে এক বছর আবার ইন্টার্নশিপও বাধ্যতামূলক। ফলত, জাতীয় স্তরে স্নাতকোত্তর প্রবেশিকা পরীক্ষায় বসার সুযোগ পান না পড়ুয়ারা। আর এই সমস্যা সমাধান করতে ভেটেরিনারি কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া পাঠক্রম পাঁচ বছরের মধ্যেই শেষ করার বিষয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন ডক্টর রাঘবেন্দ্র ভট্ট।
দুধ উৎপাদনে বিশ্বে ভারতের বিরাট দাপট
ওই সম্মেলনে দেশের সামগ্রিক দুধ উৎপাদনের পরিসংখ্যান উঠে এসেছে, এবং রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ভারতে দুধ উৎপাদন হয়েছে প্রায় ২৫৭.৮৭ মিলিয়ন টন। আর এই পরিসংখ্যানের কারণে ভারত দুধ উৎপাদনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকেও পিছনে ফেলেছে। এমনকি বিশ্বের মোট উৎপাদিত দুধের ৪৩ শতাংশ আসে মোষের দুধ থেকে। এমনটাই জানা গিয়েছে। আর বিশ্বের মোট মোষের দুধের ৭৬ শতাংশই ভারতীয় মোষ থেকে উৎপন্ন হয় বলে দাবি রিপোর্টে।