দুবাইয়ে বসে কলকাতায় প্রতারণা! ক্রিপ্টোয় বিনিয়োগের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ

Cryptocurrency Scam

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: কলকাতার বুকে চলছিল ভয়ঙ্কর প্রতারণা। হ্যাঁ, ঝাঁ-চকচকে অফিসে বসে এক বিনিয়োগ সংস্থা দাবি করছিল, ক্রিপ্টোকারেন্সিতে (Cryptocurrency Scam) টাকা রাখলে রাতারাতি কোটিপতি হওয়া যাবে। তবে সেই পর্দার আড়ালে ছিল এক বিরাট প্রতারণার চক্র। আর সেই চক্রের মূল কর্ণধার শুভ্রকান্তি নাগ দুবাই থেকেই সব কন্ট্রোল করছিলেন!

ইতিমধ্যে এই প্রতারণা কাণ্ডে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ডিরেক্টর অফ ইকোনমিক অফেন্সেস অর্থাৎ ডিইও তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। আর এই তদন্তে উঠে এসেছে একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য। আর তাঁরা সাধারণ মানুষের টাকা যে কীভাবে ধুলিস্যাত করেছে, তার কোনো হিসাব নেই।

কীভাবে চলছিল এই ভয়ংকর প্রতারণা?

বর্তমানের রিপোর্ট অনুযায়ী জানা গিয়েছে, প্রথমে সোশ্যাল মিডিয়ায় এবং বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে তারা বিজ্ঞাপন দিত। হ্যাঁ, সেখানে দাবি করা হত ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগ করলেই কয়েকগুণ মুনাফা পাওয়া যাবে। অনেকেই সেই লোভে পা দিয়ে বিনিয়োগ করত। তবে টাকা লগ্নির পর কয়েক ঘন্টার মধ্যেই তা দুবাইয়ের ব্যাংকগুলোতে পাচার হয়ে যেত।

এরপর কেউ কেউ তাদের টাকা রিটার্ন না পাওয়াতেই অভিযোগ দায়ের করে। আর তখনই রাজ্যের ডিইও তদন্ত নামে। তদন্তে দেখা যাচ্ছে, ওই অফিসটি দিগন্ত মল্লিক এবং সুভাষ চক্রবর্তী নামে দুই ব্যক্তি খুলেছিল। তবে প্রকৃত মালিক ছিলেন শুভ্রকান্তি নাগ, যিনি এই প্রতারণা চক্রের পর্দার আড়ালে আত্মগোপন করেছিল।

দুবাই থেকেই হত নিয়ন্ত্রণ

তদন্তকারীরা দিগন্ত মল্লিকের মোবাইল ফোনের কল ডিটেইলস এবং মেসেজ খতিয়ে থেকে আতকে ওঠেন। তারা দেখতে পায় যে, নিয়মিত দুবাই থেকে নির্দেশ আসছে। এমনকি একবার দিঘার একটি হোটেলে কনফারেন্স মিটিং-এর পরিকল্পনা করা হয়। আর সেখানে অনলাইনে শুভ্রকান্তি নাগও যুক্ত ছিল।

এরপর ডিইও আধিকারিকরা সেই সূত্র ধরে হানা দেন। সেখানে দিগন্তসহ মোট তিনজনকে গ্রেফতার করেন। জেরা করতে গিয়েই এই পুরো চক্রের আসল রূপ ধরা পড়ে। শুভ্রকান্তি কীভাবে দুবাইতে বসে একাধিক অ্যাকাউন্ট কন্ট্রোল করত, আর অনলাইনে পুরো কোম্পানির বিজ্ঞাপন চালাত, সবকিছু উঠে আসে তদন্তে। এমনকি জানা যায়, এই চক্রের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে তাঁরা।

আরও পড়ুনঃ ১৭০০ টাকা বাড়ল সোনার দাম, ওদিকে ঊর্ধ্বগতি রুপোর বাজারদর! আজকের রেট

জানা গিয়েছে, 2025 সালের মার্চ মাস-জুন মাসের মধ্যেই ওই সংস্থা কয়েক কোটি টাকা পকেটে পুড়ে নিয়েছে। আর যাতে প্রতারণার ছড়িয়ে না পড়ে, তার জন্য কোম্পানির মালিকানা আর পরিচালনার সমস্ত কাগজপত্র দিগন্ত আর সুভাষের নামে রাখা হয়েছিল। ইতিমধ্যেই শুভ্রকান্তি নাগের বিরুদ্ধে ডিইও লুক আউট নোটিশ জারি করেছে। আর তাঁর নামে একাধিক অভিযোগও জমা পড়েছে রাজ্যের বিভিন্ন থানায়। বর্তমানে জোরকদমে তদন্ত চলছে।

Leave a Comment