সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: আর হাতেগোনা কয়েকটা দিন বাকি। আসতে বলেছে বাঙালির সবথেকে বড় উৎসব দুর্গাপুজো (Durga Puja)। আর এই পূজো মানেই প্যান্ডেল, আলোর ঝলকানি, ঢাক-ঢোলের বাজনা আর আনন্দের ভিড়। তবে সবকিছুর জন্যই দরকার পড়ে প্রশাসনিক অনুমতিপত্র। আগে যেখানে একাধিক দপ্তরের দপ্তরের ছোটাছুটি করতে হত, এখন সেই ঝামেলা অনেকটাই সহজ হয়ে গিয়েছে।
সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, একটি বিশেষ অনলাইন পোর্টাল ‘আসান’ (www.aasan.wb.gov.in) চালু করা হয়েছে। আর এ বছর ২৯ আগস্ট থেকে ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই পোর্টালের মাধ্যমে খুব সহজেই দূর্গাপূজার অনুমতির জন্য আবেদন করা যাবে। তবে কীভাবে আবেদন করতে হবে, কীভাবে পারমিশন মিলবে, সমস্তটা জানিয়ে দেবো আজকের প্রতিবেদনে।
নতুন-পুরনো সবার জন্যই রয়েছে ব্যবস্থা
জানা যাচ্ছে, যারা প্রথমবার আবেদন করবেন তাদের নাম, ফোন নম্বর, ইমেল আইডি এবং জেলা দিয়ে সাইন আপ করতে হবে। এরপর ওটিপি ভেরিফিকেশন হলেই রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হয়ে যাবে। তবে যারা গত বছর আবেদন করেছিলেন, তাদের নতুন করে কিছু করতে হবে না। শুধুমাত্র পুরানো ফোন নম্বর দিয়ে লগইন করলেই তথ্য অটো-ফিল হয়ে যাবে। আর যদি সেই নম্বর ব্যবহার না করেন, সেক্ষেত্রে “চেঞ্জ রিকোয়েস্ট’ অপশনে গিয়ে নম্বর বদলে ফেলা যাবে।
আবেদন প্রক্রিয়া
পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, এই আবেদনটি এবার পাঁচটি ধাপে করতে হবে। সেগুলি হল—
১) উৎসবের বিবরণ- প্রথমে পুজোর নাম, ঠিকানা, জেলা, ব্লক, পুলিশ স্টেশন, ফায়ার স্টেশন, উৎসব শুরু এবং শেষের তারিখ, বাজেট, ক্লাবের নাম, থিম, বিদ্যুতের উৎস, সমস্ত তথ্য পূরণ করতে হবে।
২) আয়োজকের বিবরণ- এরপর ক্লাবের প্রেসিডেন্ট বা সেক্রেটারিদের নাম, যোগাযোগ নম্বর, ইমেইল আইডি, মূর্তির উচ্চতা, বোধনের তারিখ, বিসর্জনের দিনক্ষণ সমস্ত তথ্য আপলোড করতে হবে।
৩) জমির তথ্য- এরপর পূজো কোথায় হচ্ছে, ব্যক্তিগত নাকি সরকারি কোনো জমিতে তা জানাতে হবে। ব্যক্তিগত জমি হলে জমির মালিকের সম্মতির কাগজ দরকার হবে।
৪) বিদ্যুতের তথ্য- এরপর আগের বছরের কনজিউমার নম্বর, অনুমতি লোড, বর্তমানে ইলেকট্রিশিয়ানের নাম, লাইসেন্স নম্বর সবকিছু আপলোড করতে হবে।
৫) অগ্নি সম্পর্কিত তথ্য- এরপর প্যান্ডেলের মন্ডপ ব্যবহৃত সামগ্রী, ডেকোরেটর্সের নাম এবং লাইসেন্স নম্বর ও জরুরী গাড়ির প্রবেশপত্র সম্পর্কে তথ্য জানাতে হবে।
কোন কোন ডকুমেন্ট আপলোড করতে হবে?
বলে রাখা ভালো, এখানে আবেদন করার পর কিছু গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট আপলোড করতে হবে। আর সেগুলি অবশ্যই JPG বা PDF ফরম্যাটে দিতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে গত বছরের পুজোর অনুমতিপত্র বা NOC, প্যান্ডেলের সাইট প্ল্যান, এই বছরের জমির NOC, ইলেকট্রিশিয়ানের ডিক্লিয়ারেশন, ডেকোরেটরসের সেফটি ডিক্লিয়ারেশন এবং পিসিবি আন্ডারটেকিং।
আরও পড়ুনঃ এদের থেকে বাংলার বাড়ির টাকা ফেরত নেবে পশ্চিমবঙ্গ সরকার
এরপর আপনাকে WBSEDCL বা পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ দপ্তরে অনলাইনের মাধ্যমে বিল পেমেন্ট করতে হবে। সমস্ত দপ্তরের NOC সবুজ হয়ে গেলেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে আবেদন গ্রহণ করা হবে। তাই আগে যেখানে সপ্তাহের বা সপ্তাহ অনুমতিপত্রের জন্য দৌড়াতে হত, এখানে এখন মাত্র কয়েক ক্লিকেই সম্পূর্ণ ঝামেলা শেষ। তাই এখনই ঝটপট নিয়ে ফেলুন পুজোর অনুমতিপত্র।