সহেলি মিত্র, কলকাতা: দূষণ (Pollution) রুখতে বিরাট পদক্ষেপ নিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। দূষণ মোকাবেলায় একটি উচ্চাভিলাষী পদক্ষেপ হিসেবে, পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র, ঝাড়খণ্ড সীমান্ত বরাবর একটি বায়োশিল্ড তৈরী করার কথা ভাবছে। এটি একটি বনভূমি যা “সবুজ প্রাচীর” হিসেবে কাজ করবে। এই বিষয়ে সম্প্রতি একটি প্রকল্প ঘোষণা করেছেন পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র। এর ফলে দূষণকারী পদার্থ বাংলায় প্রবেশ করতে পারবে না বলে আশাবাদী পরিবেশবিদরা।
বাংলায় গড়ে উঠছে বিশালকারের সবুজ প্রাচীর
জানা গিয়েছে, এই সবুজ প্রাচীরটি ঝাড়খণ্ডের সাথে রাজ্যের প্রায় ৮০০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত বরাবর বনাঞ্চলের একটি সবুজ করিডোর হবে। জৈব শিল্ডটি ঝাড়খণ্ড সীমান্ত থেকে শুরু হয়ে পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম এবং দিনাজপুর জেলা পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। গাছগুলি বড় হতে এক দশকেরও বেশি সময় লাগবে।
আরও পড়ুনঃ মহিলারা পাবেন ১০০০ টাকা পেনশন, বছর শেষের আগে রাজ্য সরকারের নয়া স্কিম
পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র জানান, ‘আমরা পর্যায়ক্রমে এগোচ্ছি। এই বিশেষ প্রাচীরটি বাংলায় প্রবেশকারী বায়ুপ্রবেশ সৃষ্টি করে এমন জিনিস ঢুকতে বাধা দেবে। এটি বৃদ্ধি পেতে প্রায় এক দশক সময় লাগবে, কিন্তু সম্পূর্ণরূপে বৃদ্ধি পেলে খুব উপকার হবে। আমরা যে সবুজ প্রাচীর তৈরি করতে পেরেছি তা দেখতে আসবেন সাধারণ মানুষ।’ প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, পশ্চিম বর্ধমান ও বীরভূম এই চারটি জেলায় প্রায় ৭৯৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে সবুজ প্রাচীর গড়ে তোলা হচ্ছে।
কীভাবে কাজ করবে প্রাচীরটি?
পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রাচীরটি তৈরি হচ্ছে ত্রিস্তরীয় বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে, যাতে দূষণ প্রতিরোধের পাশাপাশি জীববৈচিত্র রক্ষা করা যায় ও পরিবেশের ভারসাম্য বজায় থাকে। প্রথম স্তরে ঝোপজাতীয় উদ্ভিদ, দ্বিতীয় স্তরে মাঝারি উচ্চতার গাছ এবং তৃতীয় স্তরে দীর্ঘায়ু ও বৃহদাকার বৃক্ষ রোপণ করা হচ্ছে। এই সবুজ প্রাচীর প্রকল্পে যে সব গাছ লাগানো হচ্ছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল নিম, অর্জুন, করঞ্জ, জাম, পেয়ারা, কল্কে ও শিশু। এই গাছগুলি বায়ু থেকে ধূলিকণা ও ক্ষতিকর গ্যাস শোষণে বিশেষ ভাবে কার্যকর। পাশাপাশি এই প্রজাতির গাছ মাটির ক্ষয় রোধ করে, জলধারণ ক্ষমতা বাড়ায় এবং স্থানীয় বাস্তুতন্ত্রকে আরও শক্তিশালী করে তোলে।
আরও পড়ুনঃ ৯১ দিনে সুদ থেকেই হবে ৬৭০০ টাকা আয়! দারুণ রিটার্ন দিচ্ছে PNB-র ফিক্সড ডিপোজিট
চলতি বছরে এই প্রকল্পের আওতায় মোট ৩৪০ হেক্টর জমিতে বৃক্ষরোপণ করা হয়েছে। সবুজ প্রাচীর নির্মাণের ফলে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৫৭ হাজার ৭২৩টি কর্মদিবস রূপায়িত হয়েছে, যা গ্রামীণ ও প্রান্তিক এলাকার মানুষের কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে।