সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: হঠাৎ করেই বড়সড় সিদ্ধান্তের পথে হাঁটল নেপাল সরকার (Nepal Government)। ফেসবুক, ইউটিউব, এক্স-সহ একাধিক জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে প্রবেশাধিকার বন্ধ করেছে নেপাল। বৃহস্পতিবার তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে রেজিস্ট্রেশনের শর্ত মানতে ব্যর্থ হওয়ার কারণেই এই কঠোর পদক্ষেপ।
কেন নেওয়া হল এই সিদ্ধান্ত?
সরকার দাবি করছে, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ভুয়ো খবর, গুজব ইত্যাদি ছড়ানো হচ্ছে। পাশাপাশি সাইবার অপরাধ রোধ করার জন্যই এই পদক্ষেপ। নেপালের তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী জানিয়েছেন, আমরা পর্যাপ্ত পরিমাণে সময় দিয়েছিলাম। বারবার অনুরোধ করেছি। তবে বড় বড় কোম্পানিগুলো কোনোরকম গুরুত্ব দেয়নি। তাই বাধ্য হয়েই আমরা এগুলি বন্ধের পথে হাঁটলাম।
সরকারের শর্ত কী ছিল?
উল্লেখ্য, 2023 সালে নেপাল সরকার একটি নির্দেশিকা জারি করে জানিয়েছিল, দেশের সমস্ত সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলিকে স্থানীয়ভাবে রেজিস্টার করতে হবে। এমনকি তার পাশাপাশি একজন স্থানীয় প্রতিনিধি ও অভিযোগ গ্রহণকারী কর্মকর্তা থাকতে হবে। আর এই শর্ত পূরণ না করলে সেই প্ল্যাটফর্ম নেপালে নিষিদ্ধ হবে। বুধবার সেই শর্ত মানার শেষ সময়সীমা ছিল।
সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, টিকটক ও ভাইবার ইতিমধ্যে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করে নিয়েছে। এমনকি আরও দুটি প্ল্যাটফর্ম বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন। তবে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, ইউটিউব, এক্স, লিঙ্কডিন কোম্পানিগুলি কোনোরকম সদুত্তর দেয়নি। ফলে বৃহস্পতিবার থেকেই নেপালে এই অ্যাপগুলোকে ধাপে ধাপে বন্ধ করার নির্দেশ জারি করা হয়েছে।
এদিকে ডিজিটাল রাইটস নেপালের সভাপতি ভোলা নাথ ধুঙ্গানা সরকারের পদক্ষেপে সমালোচনা করে বলেছেন, সোশ্যাল মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করার উদ্যোগ কোনওরকম ভুল নয়। তবে তার জন্য পরিকাঠামোগত আইন জরুরী। হঠাৎ করে এভাবে বন্ধ করে দেওয়া মানুষের মৌলিক অধিকারের ব্যাঘাত ঘটানো হচ্ছে।
এর আগেও জারি হয়েছিল নোটিশ
উল্লেখ্য, নেপাল এর আগেও জনপ্রিয় অ্যাপগুলোর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। গত জুলাই মাসে টেলিগ্রাম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল অনলাইন প্রতারণা এবং মানি লন্ডারিং-এর অভিযোগে। এমনকি 2022 সালে নয় মাস ধরে টিকটক বন্ধ ছিল। পরে কোম্পানি নেপালের নিয়ম মানতে রাজি হলে সেই নিষেধাজ্ঞা তোলা হয়।