সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: ঘুরে গেল এক মর্মান্তিক মামলার মোড়। সম্প্রতি রাজধানী দিল্লিতে 20 বছর বয়সী এক কলেজ ছাত্রী দাবি করেছিল যে, তার উপর অ্যাসিড হামলা (Delhi Student Acid Attack) হয়েছে। তবে তদন্তে জানা গেল, সবটাই ভুয়ো। সে তার বাবার নির্দেশেই মিথ্যা অভিযোগ করেছিল এবং নিজেই নিজেকে টয়লেট ক্লিনার ব্যবহার করে আহত করেছিল। তবে এই ফন্দি আঁটার নেপথ্যে কী কারণ?
কী অভিযোগ করেছিল ওই মহিলা?
গত রবিবার সকালে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের নন কলেজিয়েট উইমেন্স এডুকেশন বোর্ডের পড়ুয়া ওই ছাত্রী দাবি করেছিল, ক্লাসে যাওয়ার সময় তিনজন ব্যক্তি তার উপর অ্যাসিড ছুঁড়ে মারে। এমনকি সে আক্রমণকারীদের নাম জানায়। আর তারা হল তার ভাই জিতেন্দ্র, ঈশান এবং আরমান। এমনকি সকলেই তার আত্মীয়। এরপর হাতে পোড়া ক্ষত নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ওই ছাত্রীকে। প্রথমে পুলিশ বিশ্বাস করেছিল যে ঘটনাটি সত্যি। এমনকি অভিযুক্তদের মধ্যে একজন কয়েক মাস ধরে তাকে তাড়া করে আসছিল, এমনটাও জানানো হয়েছিল। তবে পরে তার ফোন রেকর্ড ও সিসিটিভি ফুটেজে মেলে অসংগতি।
কী ফন্দি আঁটা হয়েছিল?
তদন্ত করে জানা গিয়েছে, জিতেন্দ্র এবং তার আত্মীয়দের ফাঁসানোর জন্য ওই ছাত্রীর বাবা এবং সে এই মিথ্যা ছক কষেছিল। জানা যাচ্ছে, ওদের সাথে তার বাবার দীর্ঘদিনের বিরোধ ছিল। পুলিশের তদন্তে দেখা যায়, সিসিটিভি ফুটেজ এবং কল রেকর্ডে মহিলার দাবির সত্যতা মিলছে না। এরপর পুলিশ অনুমান করে যে ওই মহিলা নিজের বাড়ির টয়লেট ক্লিনার ব্যবহার করেই নিজেকে আহত করেছে এবং গল্পটিকে পুরো সাজানো হয়েছে।
THE ACID ATTACK THAT WASN’T
This girl u saw crying on TV saying a stalker attacked her – in reality took toilet cleaner from house & her brother spilled it neatly on her hands before they played the drama of #AcidAttack
All this to save her father Aqueel Khan accused of rape… pic.twitter.com/JXoKOLj8md
— Deepika Narayan Bhardwaj (@DeepikaBhardwaj) October 27, 2025
এদিকে এই মামলার দু’দিন আগে জিতেন্দ্রের স্ত্রী অভিযোগ দায়ের করেছিল যে, ওই ছাত্রীর বাবা 2021 থেকে 2024 সালের মধ্যে তার কারখানায় কাজ করার সময় তাকে ধর্ষণ করেছিল এবং ব্ল্যাকমেইল করেছিল। এমনকি সে ব্যক্তিগত ছবি এবং ভিডিও ফাঁস করে দেওয়ারও হুমকি দিয়েছিল। তবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হলে লোকটি হাজির হননি এবং তার পরিবর্তে তার আইনজীবী ও একজন ধর্মীয় প্রচারক এসেছিল।
আরও পড়ুনঃ সাইক্লোন মান্থার আতঙ্কে বাতিল বহু ট্রেন! তালিকা দিল রেল
পাশাপাশি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, ছাত্রীটি তার ভাইয়ের সাথে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে। তবে তার ভাই তাকে কলেজে না নামিয়ে দিয়ে অন্য এক জায়গায় নামিয়ে দেয়। তারপরই রিক্সায় চেপে চলে যায়। ফলত পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে, কেন সে কলেজে নামিয়ে দেয়নি এবং কেন সে তখন থেকেই নিখোঁজ। তবে কর্মকর্তারা জানাচ্ছে, ঘটনাস্থলে অ্যাসিডের কোনওরকম চিহ্ন পাওয়া যায়নি এবং ডাক্তাররা এখনও তার হাতের আঘাতের ধরণ পরীক্ষা করছে। কিন্তু এই চক্রান্ত যে সম্পূর্ণ সাজানো, তা পুলিশের জানতে আর বাকি নেই।