প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বছর ঘুরলেই ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচন আর সেই নির্বাচনকে টার্গেট করে ইতিমধ্যেই ভোট প্রচারের প্রস্তুতিতে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বঙ্গের আবহাওয়া। তার উপর চোখ রাঙাচ্ছে SIR, সেই নিয়ে দিন রাত বিজেপির সঙ্গে তরজা চলছে তৃণমূলের। এমতাবস্থায় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে তৃণমূল থেকে আজ সাসপেন্ড করা হল ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীরকে (Suspended Humayun Kabir)। নির্বাচনের মুখে আচমকা এই সাসপেন্ডে সকলে যখন অবাক সেই সময় প্রাথমিক প্রতিক্রিয়াতেই নতুন দল বানিয়ে ১৩৫ আসনে বিধানসভা নির্বাচনে লড়াই করার হুংকার দিল হুমায়ুন। শোরগোল পরে গেল বঙ্গ রাজনীতির অন্দরে।
দলবিরোধী কাজ করার জন্য সাসপেন্ড!
বেশ কিছুদিন ধরেই হুমায়ুন কবীরকে নিয়ে টানাপোড়েন চলছিল শাসকদলের অন্দরে। সংবাদমাধ্যমে দলের বিরুদ্ধে বারবার মুখ খুলছিলেন ভরতপুরের বিধায়ক। পাশাপাশি মুর্শিদাবাদে বাবরি মসজিদ তৈরি করবেন বলেও সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি, যা নিয়ে বিতর্ক চলছিলই। আর সেই বিতর্কের মাঝেই শেষমেষ আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার তৃণমূল ভবন থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে তাঁকে সাসপেন্ড করার কথা ঘোষণা করলেন ফিরহাদ হাকিম৷ তিনি জানান, ‘‘দলবিরোধী কাজ করার জন্য ভরতপুরের বিধায়ককে সাসপেন্ড করছে তৃণমূল৷ ধর্ম নিয়ে যাঁরা ভেদাভেদ করে তার সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক থাকবে না৷’’
১৩৫টি আসনে লড়াই করার হুংকার হুমায়ুনের
রিপোর্ট অনুযায়ী আজ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুর্শিদাবাদের প্রশাসনিক সভায় যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন হুমায়ুন কবীর। কিন্তু মাঝপথে সাসপেন্ডের খবর পাওয়া মাত্রই তৎক্ষণাৎ সভাস্থল ছাড়লেন হুমায়ুন। তিনি সাফ জানিয়েছেন যে, আগামীকাল অর্থাৎ শুক্রবার অথবা সোমবারই ইস্তফা দেবেন তিনি। শুধু তাই নয়, তিনি এও জানান যে, “চলতি মাসের ২২ তারিখ ঘোষণা করব নিজের দলের। তৃণমূল, বিজেপি সবার বিরুদ্ধে লড়ব, ১৩৫টি আসনে প্রার্থী দেব। কে কী করতে পারে দেখে নেব।” অর্থাৎ হুমায়ুন বুঝিয়ে দিলেন যে শাসকদলের কড়া পদক্ষেপের পরও নিজের অবস্থান থেকে তিনি নড়তে নারাজ।
আরও পড়ুন: উচ্চ মাধ্যমিকে অতিরিক্ত ফি নিয়ে রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ শুভেন্দুর!
প্রসঙ্গত, ৬ ডিসেম্বরই মুর্শিদাবাদে বাবরি মসজিদের শিলান্যাস করার কথা ঘোষণা করেছিলেন হুমায়ুন কবীর। এই নিয়ে হইচই তৈরি হওয়ার পরই তৃণমূল হুমায়ুনের থেকে দূরত্ব তৈরি করেছিল। কিন্তু সেই দুরত্ব এবার সাসপেন্ডের ভূমিকা পালন করল। এদিন সাংবাদিক বৈঠকে বেলডাঙায় কেন বাবরি মসজিদ তৈরি করার কথা বলা হল, সেই প্রশ্নও তুলেছেন ফিরহাদ। যদিও এই গোটা ঘটনায় বিজেপিকেই দায়ী করছেন তিনি। ফিরহাদ বলেন, “প্রত্যেকবার ভোটের আগে কোনও না কোনও গদ্দারকে নিয়ে গিয়ে কার্ডটা খেলে। এবার হুমায়ুন ভাইকে ধরেছে। যখন দেখল এসআইআর করে কিছু হচ্ছে না, তখন বিজেপি এই বিভেদ তৈরি করার চেষ্টা করছে।” যদিও বিজেপির তরফে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।