নবম-দশম শ্রেণীতে এক স্কুল থেকে অন্য স্কুলে ইচ্ছে মতো ভর্তির দিন শেষ! নতুন নির্দেশিকা পর্ষদের

West Bengal Board of Secondary Education new guidelines for 9 10 class admission

বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: এতদিন নবম-দশম শ্রেণিতে অন্য স্কুলে ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে খুব একটা সমস্যা হয়নি পড়ুয়াদের। তবে এবার মধ্যশিক্ষা পর্ষদের নতুন নির্দেশিকায় এই কাজ কঠিন হতে চলেছে। সম্প্রতি নবম বা দশম শ্রেণীতে এক বিদ্যালয় থেকে অন্য বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে স্কুলগুলিকে পাঠানো নির্দেশিকায় একেবারে কড়া সিদ্ধান্ত জানিয়েছে পর্ষদ (West Bengal Board of Secondary Education)। ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, একটি স্কুল অন্য আরেক স্কুল থেকে সর্বোচ্চ 10 জন পড়ুয়াকে নবম বা দশম শ্রেণীতে ভর্তি নিতে পারবে। এই সংখ্যার বাইরে যেতে পারবে না কোনও বিদ্যালয়। আর এই সবটাই করতে হবে মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে জানিয়ে।

কেন হঠাৎ এমন কড়া সিদ্ধান্ত নিল পর্ষদ?

বিগত দিনগুলিতে একটি সমস্যা তাড়া করে বেরিয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে। তা হল, অনেক সময় নামি স্কুলের পড়ুয়ারা নবম শ্রেণীতে প্রত্যাশিত ফল করতে না পারলে ওই স্কুলে তাদের পাস করানোই হয় না। আসলে পড়ুয়ারা যাতে মাধ্যমিকে ভাল ফল করতে পারে সেজন্যেই এই কঠোর নীতি গ্রহণ করে থাকে স্কুলগুলি। তবে অনেক সময় অভিভাবকরা সন্তানদের একটা বছর যাতে নষ্ট না হয় সেজন্য পার্শ্ববর্তী কোনও ছোট স্কুলে ভর্তি করিয়ে সেখান থেকেই মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসানোর ব্যবস্থা করেন। এখানেই মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সমস্যা।

এ প্রসঙ্গে পর্ষদ জানিয়েছে, নবম শ্রেণীতে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়ে যাওয়ার পর অনেক সময় তাদের এক স্কুল থেকে অন্য স্কুলে স্থানান্তরিত করা হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পর্ষদকে জানানো হয় না। যার ফলে মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ড পৌঁছে যায় আগের স্কুলে। এতে যেমন স্কুলগুলি সমস্যায় পড়ে তেমনই সমস্যা বাড়ে পড়ুয়ারও। মূলত সে কারণেই নবম বা দশম শ্রেণীতে এক স্কুল থেকে অন্য স্কুলে ভর্তির ক্ষেত্রে নতুন নির্দেশিকা জারি করল পর্ষদ।

West Bengal Board of Secondary Education

অবশ্যই পড়ুন: ভাইরাল করেছিল পুলিশের ঘুষ নেওয়ার ভিডিও, মিথ্যা মামলায় ফাঁদে বীরভূমের লরি ব্যবসায়ী

মধ্যশিক্ষা পর্ষদের নতুন নির্দেশিকায় এও বলা হয়েছে, যদি কোনও পড়ুয়া আচমকা নিজের পড়াশোনা তিন বছরের জন্য বন্ধ রাখেন। পরবর্তীতে যদি তিনি ফের পড়াশোনা চালু করতে চান সেক্ষেত্রে অবশ্যই তাঁকে নতুন নির্দেশিকা মানতেই হবে। একই সাথে, কেন টানা তিন বছর পড়াশোনা থেকে অব্যাহতি নিয়েছিলেন তার কারণও লিখিত ভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে। সেই সাথে ওই ব্যাখ্যা প্রমাণ করে এমন প্রাসঙ্গিক নথিও দেখাতে হবে।

অবশ্যই পড়ুন: বাংলাদেশে সংখ্যালঘু অত্যাচার নিয়ে এবার গর্জে উঠলেন চাহাল

প্রসঙ্গত, নবম বা দশম শ্রেণীতে অন্য স্কুলে ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ 10 জন শিক্ষার্থীর যে নতুন নিয়ম পর্ষদ বেঁধে দিয়েছে তাতে যথেষ্ট আপত্তি রয়েছে শিক্ষা মহলের একটা বড় অংশের। তাদের বক্তব্য, রাজ্যে এমন অনেক স্কুল রয়েছে যেখানে ছাত্র-ছাত্রীদের সংখ্যা অনেকটাই কম। এতদিন অন্য স্কুল থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা নবম বা দশম শ্রেণীতে ভর্তি হলে পড়ুয়াদের সংখ্যা বাড়ানোর কিছুটা সুযোগ থাকতো। তবে পর্ষদের নতুন নিয়মে সর্বোচ্চ 10 জন পড়ুয়াকে ভর্তি নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তাতে এবার স্কুলগুলো যথেষ্ট সমস্যায় পড়বে। সমস্যা হবে পড়ুয়াদেরও!

Leave a Comment