প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: এখনও বাঁধা কাটেনি নতুন বহুতল তৈরির ক্ষেত্রে! নবান্নের (Nabanna) নিরাপত্তার কারণে হাওড়ার ক্ষেত্রমোহন ব্যানার্জি লেনে বহুতল তৈরির স্বপ্ন এখন আদালতের হাতে। জানা গিয়েছে রাজ্য প্রশাসনের সদর দফতর ‘নবান্ন’র দেড়শো মিটার দূরে একটি জমি পড়েছে যেটি ‘হাই সিকিউরিটি জোন’-এর আওতায় অন্তর্ভুক্ত। আর সেই জমিতে এক প্রোমোটার আবাসন নির্মাণের স্বপ্ন দেখছে, সেক্ষেত্রে হাওড়া পুরসভা রাজি হলেও মানতে নারাজ কলকাতা পুরসভা। আর সেই কারণে আবাসন নির্মাণের মামলার জল গড়ালো কলকাতা হাইকোর্টে।
নবান্নের নিরাপত্তার কারণে বন্ধ নির্মাণ
জানা গিয়েছে প্রায় পাঁচ বছর ধরে কলকাতা পুলিশের অনুমোদন পেতে আদালত ও দফতরে ঘুরেই চলেছে প্রোমোটার ও জমির মালিক। নবান্নের নিরাপত্তা নিয়ে রীতিমত যাঁতাকলে ফেঁসে পড়েছেন তাঁরা। হাওড়ার ক্ষেত্রমোহন ব্যানার্জি লেনে প্রোমোটিংয়ের জন্য এবং বহুতল নির্মাণের ক্ষেত্রে পুরসভার অনুমোদন মিললেও, লাল পতাকা দেখাচ্ছে লালবাজার, যার নেপথ্যে অন্যতম কারণ হল নিরাপত্তা। তাই ‘হাই সিকিউরিটি জোন’-এর চক্করে একের পর এক আদালতের দরজায় কড়া নেড়ে চলেছেন প্রোমোটারেরা। এমতাবস্থায় নবান্ন সংলগ্ন এলাকায় বহুতল নির্মাণে মানতে পুলিশ জারি করল ১৭ দফা শর্ত।
১৭ দফা শত পুলিশের
হাওড়ার ক্ষেত্রমোহন ব্যানার্জি লেনে নতুন বহুতল তৈরির ক্ষেত্রে কলকাতা পুলিশের শর্ত দিয়েছিল যে নবান্নর দিকে ওই বিল্ডিংয়ের কোনও ফ্ল্যাটের জানলা বা ব্যালকনি থাকতে পারবে না। নবান্নর দিকে আবাসনের ছাদও অন্তত ১০ ফুট পর্যন্ত পাঁচিলের মতো কাট আউটে ঢেকে দিতে হবে। আবাসনে কাউকে ফ্ল্যাট বিক্রির আগে সেই ব্যক্তির অতীতে কোনও ক্রিমিনাল কেস আছে কিনা সেই সম্পর্কে প্রোমোটারকে খোঁজ নিতে বলা হয়। এছাড়াও ওই আবাসন বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করা যাবে না বলেও নির্দেশ দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, বিল্ডিং তৈরির পরে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানোর শর্ত দেওয়া হয়েছে। যার দরুন প্রোমোটারেরা মামলা করে হাইকোর্টে। এর আগে পুরোনো বিল্ডিং ভাঙা নিয়ে পুলিশের আপত্তিতে দু’বার হাইকোর্টে মামলা হয়। শেষ পর্যন্ত হাইকোর্টের হস্তক্ষেপে পুরোনো বাড়ি ভাঙা হয়।
আরও পড়ুন: ১ কোটি দিলেও নন্দীগ্রামের কোনও হিন্দু ওর দলকে ভোট দেবে না! অভিষেককে নিশানা শুভেন্দুর
পুলিশের শর্ত নিয়ে হাইকোর্টে মামলা
কলকাতা পুলিশের বিরুদ্ধে করা মামলায় প্রোমোটারের আইনজীবী শ্রীজীব চক্রবর্তী ও সুমিতাভ চক্রবর্তী আদালতে অভিযোগ জানায় যে , হাওড়া পুরসভা বিল্ডিং রুলসের ক্ষেত্রে কলকাতা পুরসভার আইন মেনে চলে বলে জানিয়েছে। কলকাতা পুরসভার আইন বলছে, কোনও ঘর হলে সেখানে জানলা থাকা এবং ঘরে হাওয়া চলাচলের ব্যবস্থা থাকা বাধ্যতামূলক। অথচ কলকাতা পুলিশ আজব ফতোয়ায় জানিয়েছে, বিল্ডিংয়ের এক দিকে জানলা করাই যাবে না! এক্ষেত্রে কোনও আইনেই এর মান্যতা নেই।” ইতিমধ্যেই এই নিয়ে চলতি সপ্তাহে বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্তর এজলাসে দু’দিন ধরে শুনানি চলেছে। আদালতে ৪ নভেম্বর কলকাতা পুলিশের তরফে পাল্টা সওয়াল করা হবে।
 
					