প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বছর ঘুরলেই ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচন, আর সেই নির্বাচনকে সামনে রেখেই ভোট উৎসবের তোড়জোড় শুরু গোটা বঙ্গে। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার নির্দেশ দিয়েছেন যে দলের অন্দরে সব গন্ডগোল ভুলে এখন থেকেই একসঙ্গে কাজ করতে হবে। কিন্তু সেই নির্দেশ যেন অতীত হয়ে দাঁড়াল। ফের বীরভূমে কাজল-কেষ্ট দ্বন্দ্বের জেরে খুন হল এক তৃণমূল নেতা (TMC Leader Murdered)। দলীয় কার্যালয় থেকে রাতে বাড়ি ফেরার সময় তাঁর মাথায় শাবল মেরে আঘাত করার অভিযোগ উঠল কয়েক জন দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে।
বীরভূমে খুন তৃণমূল নেতা
স্থানীয় রিপোর্ট অনুযায়ী, গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার রাতে অন্য তৃণমূলকর্মীদের সঙ্গে বাসাপারা পার্টিঅফিস থেকে বাড়ি ফিরছিলেন বছর পঞ্চাশের রাসবিহারী সর্দার। তিনি নানুরের থুপসরার পাতিসরা গ্রামের তৃণমূল বুথ সভাপতি। সেই সময় আচমকাই তাঁদের পথ আটকায় কয়েক জন দুষ্কৃতী। অভিযোগ, বাঁশ, লাঠি, শাবল দিয়ে দুষ্কৃতীরা তাঁদের উপর হামলা চালায়। তখন রাসবিহারী বাবুর মাথায় শাবলের আঘাত করা হয়। আহত হয়েছেন আরও তিন জন তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী। রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয়েরা, এরপর তাঁদের নিয়ে আসেন পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোট ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। সেখানেই রাসবিহারীকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। এইমুহুর্তে মৃতের ছেলে মানব সর্দার, সুকুমার মেটে ও ঢোলা মেটে নামে তিন জন জখম অবস্থায় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি।
কাজল-কেষ্টর দ্বন্দ্বের জেরে খুন!
জানা গিয়েছে, নবান্ন উৎসবের চাঁদা তোলাকে কেন্দ্র করেই অশান্তি শুরু হয়েছিল বীরভূমের নানুর থানার পাতিসাড়া গ্রামের কাজল-কেষ্টর দুই তৃণমূল গোষ্ঠীর মধ্যে। আর তাতেই অকালী প্রাণ হারায় রাসবিহারী সর্দার। আহত মানব সর্দার জানান, তৃণমূল বুথ সভাপতি বুদ্ধদেব মেটের নেতৃত্বে তাঁর বাবাকে খুন করা হয়। সূত্রের খবর, অনুব্রত মণ্ডলের অনুগামী কেরিম খার সঙ্গে দল করেন পাতিসাড়া গ্রামের বুথ সভাপতি বুদ্ধদেব মেটে।এদিকে মৃতের পরিবারেরও দাবি, তাঁরা তৃণমূল জেলা সভাধিপতি কাজল শেখের সঙ্গে দল করেন বলে তাদের উপর পরিকল্পনা করে আক্রমণ করা হয়েছে। যদিও রাজনৈতিক হিংসার কারণে ওই তৃণমূল কর্মী খুনে কে বা কারা যুক্ত, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
আরও পড়ুন: বিয়ের মাসে পুনরায় দাম বাড়ল সোনা, রুপোর! আজকের রেট
তদন্তে নামল পুলিশ
ইতিমধ্যেই নানুরে তৃণমূল নেতার খুনের ঘটনায় মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ বাহিনী। আর এই আবহে ঘটনাকে কেন্দ্র করে তুমুল উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকা জুড়ে। তদন্ত শুরু হয়ে গিয়েছে। বহুদিন রাজনৈতিক হানাহানি থেকে মুক্ত ছিল একদা বীরভূমের সন্ত্রাসের ‘আঁতুড় ঘর’ হিসেবে পরিচিত নানুর ৷ কিন্তু শুক্রবার রাতে সেই নানুর ফের রক্তাক্ত। কিছুদিন আগেই হাওড়ার নিশ্চিন্দা সাপুইপাড়া বসুকাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান দেবব্রত মণ্ডল ও তাঁর সহযোগীর উপর হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। আচমকাই তাঁদের উপর পর পর গুলি চালানো হয়েছিল। পরে সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে এক দুষ্কৃতীর পরিচয় পাওয়া যায়।