কৃশানু ঘোষ, কলকাতাঃ শুক্রবার অর্থাৎ ৫ সেপ্টেম্বর যখন সারা বিশ্বে একদিকে পালন হচ্ছে ঈদ মিলাদ-উন-নবী, তখন বাংলাদেশে (Bangladesh) জুম্মার নামাজের পর হঠাৎ করেই ছড়িয়ে পড়ে অশান্তি। একটি নয়, পরপর দু’টি ঘটনায় দিনভর অশান্ত হয়ে রইল বাংলাদেশ। চলুন জেনে নেওয়া যাক ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত।
প্রথম ঘটনায় কবর থেকে তুলে ধরানো হল আগুন!
শনিবার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত একাধিক খবর অনুযায়ী, ৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের পশ্চিম রাজবাড়ী জেলায় কিছু দুর্বৃত্ত নিষ্ঠুরতার সমস্ত সীমা অতিক্রম করে। প্রথম ঘটনায় এই ইসলাম ধর্মাবলম্বী মৌলবাদীরা সুফি দরবেশ নূরা পাগলার কবরে প্রবেশ করে তা অপবিত্র করে, দরগায় ভাঙচুর চালায়, এবং তারপর সেই কবর থেকে সুফি দরবেশের দেহ বের করে আগুন লাগিয়ে দেয়। এই সময় নূরা পাগলার কিছু অনুসারীদের সাথে দুর্বৃত্তদের সংঘর্ষে লেগে যায়। এই সংঘর্ষে একজন নিহত এবং ১০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
রাজবাড়ী গোয়ালন্দ উপজেলায় নুরুল হক ওরফে নুরা পাগলার লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে পুড়িয়ে দিয়েছে সেখানকার বিক্ষুব্ধ জনতা।বিক্ষুব্ধ জনতার দাবী নুরা পাগলার লাশ মাটি থেকে ২/৩ফুট উঁচু করে বেদি করায় ধর্মীয় অনূভুতিতে আঘাত এনেছে তাই তারা লাশ উত্তোলন করে পুড়িয়ে দিয়েছে। pic.twitter.com/c8YtFTycsV
— 𝗠𝗗 Ziyaul Hoque 🇧🇩🐦 (@MDziyaul7512) September 5, 2025
দ্বিতীয় ঘটনায় আগুন লাগানো হয় জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে
অন্যদিকে আর একদল মৌলবাদীরা ঢাকায় বাংলাদেশের কাকরাইল এলাকায় জাতীয় পার্টির (জেপিএ) কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর চালিয়ে, আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পাশাপাশি ভাঙচুর করা হয়েছে পুলিশ ও প্রশাসনিক যানবাহনেও।
আরও পড়ুনঃ গুরুতর অসুস্থ খগেন মুর্মু, ভর্তি হাসপাতালে! এখন কেমন আছেন বিজেপি সাংসদ?
এর আগে গণ অধিকার পরিষদের নেতারা ঢাকার শাহবাগ এলাকায় একটি সমাবেশ করে, এবং সেখানে জেপিএ নিষিদ্ধ করার দাবি জানায়। যার ফলে এই হামলার দায় গণ অধিকার পরিষদের ওপর দেওয়া হয়েছে, এবং সরকারের কাছে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি তোলা হয়েছে। জেপিএ-র সাধারণ সম্পাদক শামীম হায়দার পাটোয়ারী এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন যে, দল এই ঘটনার জন্য গণ অধিকার পরিষদকে দায়ী করেছে।
তবে, গণ অধিকার পরিষদকে দলের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান এই ধরনের সমস্ত দাবি প্রত্যাখান করে জানিয়ছেন, “বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (জেপিএ) কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ভাঙচুরের ঘটনায় গণ অধিকার পরিষদের কোনও হাত নেই।“
বাংলাদেশের এক কর্মকর্তা রোজিনা আক্তার জানিয়েছেন, “আমরা সন্ধ্যা ৭ টার দিকে খবর পাই যে কিছু লোক জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে ইট ও পাথর ছুঁড়েছে এবং তারপর আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।” রমনা থানার সাব-ইন্সপেক্টরের সাজ্জাদ হোসেন জানিয়েছেন, “হঠাৎ কিছু দুর্বৃত্ত জাতীয় পার্টির অফিসে হামলা চালায়। তারা ভেতরে কিছু আসবাবপত্র ভেঙে আগুন ধরিয়ে দেয়।”
এক্ষেত্রে উল্লেখ্য, গত বছর মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলে বাংলাদেশে রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়েছে। গত এক সপ্তাহের মধ্যে এটি দ্বিতীয়বার হিংসাত্মক হামলা। মৌলবাদীরা দেশের সংখ্যালঘুদের উপর ক্রমাগত আক্রমণ চালাচ্ছে। যার মধ্যে সাম্প্রতিক এই দুই ঘটনা সারা বাংলাদেশকে নাড়িয়ে দিয়েছে।