না এলেই কাটা হবে বেতন! কর্মীদের উদ্দেশ্যে কড়া বিজ্ঞপ্তি নবান্নর

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ধর্মঘট মানলেই কাটা হবে বেতন! এমনকি কোনও সরকারি কর্মী দফতরে অনুপস্থিত থাকলে তাঁকেও শো কজ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে নবান্ন! জানা গিয়েছে আগামী ৯ জুলাই কেন্দ্রীয় সরকারের শ্রম কোড বাতিলের দাবিতে দেশজুড়ে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে ১০টি কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠন ও শিল্প ফেডারেশন। এদিকে ধর্মঘটের প্রতিরোধ করতে তাই সরকারি কর্মীদের উদ্দেশে নবান্নের তরফে জারি কড়া হয়েছে বিজ্ঞপ্তি।

নবান্নের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি

নবান্নের তরফ থেকে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, কোনও সরকারি কর্মচারী ওই দিন ক্যাজ়ুয়াল বা অন্য কোনও লিভ-এর জন্য আবেদন করতে পারবেন না। এমনকি হাফ ডে লিভ-এর জন্যেও কেউ আবেদন করতে পারবে না। তবে বিশেষ কয়েকটি ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে সরকারী কর্মীদের।

বলা হয়েছে, যদি কোনও কর্মী হাসপাতালে ভর্তি থাকেন, পরিবারের মধ্যে হঠাৎ কোনো সদস্যদের যদি বিপদ হয় এছাড়াও ৮ জুলাইয়ের আগে থেকেই কোনও কর্মী যদি অসুস্থ থাকে বা কোনও কর্মী মেটারনিটি লিভ, চাইল্ড কেয়ার লিভ বা মেডিক্যাল লিভ নিয়ে থাকে তাহলে কর্মীদের ছুটি মঞ্জুর করা হবে।

শোকজের হুঁশিয়ারি নবান্নের

কিন্তু এইসব ক্ষেত্র ছাড়া কোনো কর্মী যদি ওইদিন অফিসে উপস্থিত না হয় তাহলে কি কর্মীর বেতন কেটে নেওয়ার পাশাপাশি কোনও অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত পদাধিকারিক তাঁকে শোকজ করতে পারে। অনুপস্থিত থাকলে তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠানো হবে।

কেন তিনি ওই দিন কাজে যোগ দিতে পারেননি, তা জানতে চাওয়া হবে। উত্তর সন্তোষজনক হলে তাঁর ছুটি মঞ্জুর করা যেতে পারে। যদি কেউ কারণ দর্শানোর নোটিসের জবাব না দেয় তাহলে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যেই গোটা প্রক্রিয়াটি হয়ে যাবে।

ক্ষুব্ধ কর্মীরা

এর আগেও একাধিকবার ধর্মঘট ভেঙে দিয়েছিল শাসকদল। এদিনের নবান্নের বিজ্ঞপ্তি প্রসঙ্গে সিপিএমের রাজ্য সরকারি কর্মচারী সংগঠন কো-অর্ডিনেশন কমিটির নেতা বিশ্বজিৎ গুপ্ত চৌধুরী বলেন, “রাজ্য সরকার এর আগেও এই ধরনের হুলিয়া জারি করেছে। কিন্তু যে ভাবে রাজ্য সরকার সরকারি কর্মচারীদের অধিকার বার বার হরণ করছে, সেই অধিকার আদায়ের দাবিতে সরকারি কর্মীরা এই নির্দেশিকা উপেক্ষা করেই বন্‌ধে শামিল হবেন।”

ধর্মঘটের উদ্দেশ্য

এদিকে গত,রবিবার, শ্রমকোড বাতিল সহ একাধিক শ্রমিক সুরক্ষা সংক্রান্ত দাবি নিয়ে কলকাতার সন্তোষপুর পুরবাজার,পাল বাজার,মুকুন্দপুর বাজার ও কালীঘাটের বাস্তুহারা বাজারে সভার আয়োজন করে সিপিএম। বাজারের একাধিক দোকানে লিফলেট বিলি করেন সিপিএম-এর কর্মী সমর্থকেরা।

সুজন চক্রবর্তী বলেন, ৮ ঘণ্টা শ্রমজীবী মানুষের কাজটা ১২ ঘণ্টা করে দেওয়ার অর্ডিন্যান্স হচ্ছে দিল্লি, যেটা অপ্রাসঙ্গিক। এর পাশাপাশি বেসরকারিকরণের বিরোধিতা, ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধি, চুক্তিভিত্তিক কাজের প্রথা বন্ধ করে স্থায়ী নিয়োগ-সহ বেশ কিছু দাবি তুলে ধরেছে ওই শ্রমিক সংগঠনগুলি।

আরও পড়ুন:‘OBC বাতিল, এবার EWS-এ ঢোকানো হচ্ছে মুসলিম!’ বড় সিদ্ধান্ত পশ্চিমবঙ্গ সরকারের

ক্ষুব্ধ বিজেপি

তবে শুধু শাসকদল নয় বামেদের ডাকা ধর্মঘটকে কটাক্ষ করেছে বিজেপিও। ধর্মঘট প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য বলেন, আন্দোলনের অধিকার সবার আছে। কিন্তু ওরা অপ্রাসঙ্গিক ভাবে সেই আন্দোলন করছে। এবারের নির্বাচনেও বামেদের খুঁজে পাওয়া যাবে না। এদিকে মিছিলে যোগদান না করলেও, ধর্মঘটে সমর্থন জানিয়েছে কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন।

Leave a Comment