প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: সময়সীমা বাড়ানো হল আরও ১০ বছর! CAA বা নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে একটি বিশেষ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করল কেন্দ্র। যেখানে জানানো হয়েছে ২০২৫ সালের আগে ধর্মীয় উৎপীড়নের কারণে যে সমস্ত হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি, খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী মানুষ পড়শি দেশ বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান থেকে ভারতে চলে এসেছেন, তাঁরা পাসপোর্ট, ভিসা এবং অন্যান্য নথি ছাড়াই ভারতে থাকতে পারবেন। বিধানসভা নির্বাচনের আগে যেখানে প্রতিটি রাজ্যে SIR নিয়ে এক চরম বিতর্কে সৃষ্টি হয়েছে সেখানে দাঁড়িয়ে CAA নিয়ে কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত বেশ নজর কেড়েছে সকলের।
নয়া সংশোধন CAA আইনে
২০১৫ সালেও সিএএ নিয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল কেন্দ্র। সেই গেজেট বিজ্ঞপ্তিতে নাগরিকত্বের জন্য নির্ধারিত সময়সীমা ছিল ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এবার নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (CAA)-এ নাগরিকত্বের জন্য সেই আবেদন জানানোর সময়সীমা আরও ১০ বছর বাড়িয়ে দিল কেন্দ্র। ANI এর রিপোর্ট অনুযায়ী গত সোমবার অর্থাৎ ১ সেপ্টেম্বর, রাতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। যেখানে জানানো হয়েছে, ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাকিস্তান, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ থেকে যে হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি, খ্রিস্টানরা ভারতে ধর্মীয় কারণে ঢুকেছেন, তাঁরা সবাই CAA-তে নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য আবেদন জমা দিতে পারবেন।
বিজ্ঞপ্তিকে ঘিরে ধন্যবাদ বার্তা বিজেপি নেতাদের
সোমবার কেন্দ্রীয় সরকারের এই CAA সংক্রান্ত গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার পরেই বেশ খুশি গেরুয়া মহল। ইতিমধ্যেই নয়া বিজ্ঞপ্তিকে ঘিরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে ধন্যবাদ জানিয়ে সমাজমাধ্যমে সুখবর পোস্ট করেছেন দুই কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার এবং শান্তনু ঠাকুর। বাদ যায়নি বিজেপি নেতা তরুণজ্যোতি তিওয়ারিও। আজ অর্থাৎ ৩ সেপ্টেম্বর, বিজেপি নেতা তরুণজ্যোতি তিওয়ারি, তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে এদিন কেন্দ্রীয় সরকারের ঘোষণা নিয়ে একটি পোস্ট করেছেন। যেখানে তিনি জানিয়েছেন যে, “ আবারও প্রমাণ করেদিল যে BJP শাসিত কেন্দ্র সরকার সবসময় হিন্দু এবং নির্যাতিত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পাশে রয়েছে। মাটির টান এবং ধর্মের টানে ভারত সবসময় আপনাদের রক্ষা করবে।”
📰 কেন্দ্রীয় সরকারের বড় ঘোষণা 🇮🇳
👉 নতুন গেজেট নোটিফিকেশন অনুযায়ী —
৩১শে ডিসেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত যারা বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান থেকে হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পারসি ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী হিসেবে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন এবং যাদের পাসপোর্ট বা ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে,… pic.twitter.com/pC6mMCt9uL— Tarunjyoti Tewari (@tjt4002) September 3, 2025
আরও পড়ুন: বাঁকুড়ার ছাতনা হাসপাতালে ১ টাকায় খাবার দিতেন বিজেপি নেতা, বন্ধের নোটিশ সুপারের!
উল্লেখ্য, নরেন্দ্র মোদীর সরকার ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বা CAA পাশ করিয়েছিল। ওই আইন অনুযায়ী, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মতো মুসলিম ধর্মাবলম্বী দেশ থেকে যদি সে দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা ধর্মীয় উৎপীড়নের কারণে এ দেশে আশ্রয় চান, তা হলে তা দেবে ভারত। কিন্তু সিএএ-তে হিন্দু, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ, পার্সি এবং খ্রিস্টান শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হলেও সেখানে মুসলিম সম্প্রদায়ভুক্তদের কথা উল্লেখ করা হয়নি। আর তাই নিয়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে এক ভয়ের পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। যদিও কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপির একাধিক নেতা-মন্ত্রী বারংবার আশ্বাস দিয়ে এসেছেন যে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সংখ্যালঘুরা এ দেশে এলে তাঁরা নাগরিকত্ব পাবেন। এই আবহে সিএএ-তে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন জানানোর সময়সীমা আরও ১০ বছর বৃদ্ধি করল কেন্দ্র।