‘নেপাল আমাদের দেশ নয়, কেউ যেন অশান্তিতে না জড়ায়!’ বার্তা মমতার

Nepal

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: উত্তরবঙ্গ সফরের আগে নেপাল (Nepal ) নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের নীতির সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়! এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অবস্থান নিয়ে। গত রবিবার থেকেই অগ্নিগর্ভ অবস্থা নেপালের। এই পরিস্থিতিতে পদত্যাগ করেন সেখানকার প্রধানমন্ত্রী। তারপরও নিয়ন্ত্রণে আসেনি পরিস্থিতি। গোটা দেশ যখন নেপাল পরিস্থিতি নিয়ে নিজেদের মতামত দিচ্ছে , সেক্ষেত্রে দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেপাল নিয়ে খুললেন মুখ।

অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি নেপালে!

এইমুহুর্তে ছাত্র-যুবদের বিক্ষোভে উত্তাল নেপাল। রাজধানী কাঠমান্ডু সহ বিক্ষোভের আঁচ ছড়িয়ে পড়েছে গোটা নেপাল জুড়ে। এ যেন বাংলাদেশের কোটা আন্দোলনের চিত্র। নেপালের এই উত্তাল পরিস্থিতিতে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির গ্রামেও শুরু হয়েছে বিক্ষোভ। তাঁর পৈতৃক বাড়ি লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি করেন বিক্ষোভকারীরা। পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন আন্দোলনকারীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বাধ্য হয়ে গুলি চালায় পুলিশ। গতকাল অর্থাৎ সোমবার রাত পর্যন্ত পুলিশের গুলিতে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯। আহত ২৫০- এর বেশি। যদিও এই সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন একাংশ। আর এই আবহে নেপালের সম্পর্কে নিজের বক্তব্য করলেন মমতা।

নেপাল নিয়ে কী বললেন মমতা?

রিপোর্ট অনুযায়ী, আগামী কয়েক দিন উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা সফর করে সেখানকার সমস্যা নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেক্ষেত্রে উত্তরবঙ্গ সফরে যাচ্ছেন তিনি। তাঁর আগে এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সাংবাদিকরা নেপাল পরিস্থিতি প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “নেপাল আমার দেশ নয়। এটা বিদেশি রাষ্ট্র। তাই নেপাল নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না। এটা ভারত সরকারের বিষয়। নেপাল, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশকে ভালোবাসি। চাই সবাই শান্তিতে থাকুক। প্রতিবেশী ভাল থাকলেই আমরা ভাল থাকব।” অর্থাৎ তাঁর বক্তব্যের মাধ্যমে স্পষ্ট ভাষায় মমতা বুঝিয়ে দিলেন যে, কেন্দ্রীয় সরকারের নীতির সঙ্গে দূরত্ব রাখতে চাইছেন তিনি। তবে নেপালের উত্তেজনার আঁচ যাতে রাজ্যের কোনও অংশে না পৌঁছায়, তার জন্য ইতিমধ্যেই সতর্কতা জারি করেছে প্রশাসন।

SIR নিয়ে কটাক্ষ মমতার!

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন সকল রাজ্যবাসীর উদ্দেশ্যে সতর্কতা স্বরূপ জানিয়েছেন যে, “নেপাল সীমান্ত নিয়ে কেন্দ্র এখনও আমাদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করেনি। তবে আমরা আমাদের পক্ষ থেকে শিলিগুড়ি, কালিম্পং সহ প্রত্যেকটি এলাকায় শান্তি বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছি।” তবে এদিন নেপাল প্রসঙ্গ ছাড়াও নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়েও মুখ খুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন যে, “আমরা স্পেশাল ইন্টেনসিভ রিভিশন বা SIR-এর বিরুদ্ধে। কারণ এটা ২-৩ মাসে হয় না, করতে গেলে ২-৩ বছর সময় লাগে।” এখানেই থেমে থাকেননি তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন যে, “শুধু আমরা নয়, প্রাক্তন কমিশনাররাও এসআইআর প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, যা বর্তমান কমিশনের বিশ্বাসযোগ্যতাকেই চ্যালেঞ্জ করছে।”

আরও পড়ুন: গোঘাট থেকে রেশন পাচার বিহারে! হাতেনাতে ধরল বাসিন্দারা, ফাঁস খাদ্য কর্মাধ্যক্ষের কুকীর্তি

প্রসঙ্গত, আগামীকাল অর্থাৎ বুধবার, উত্তরবঙ্গের প্রশাসনিক সভা থেকে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে উপভোক্তাদের হাতে পরিষেবা তুলে দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা সফর করে সেখানকার সমস্যা নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক করবেন মমতা। এছাড়াও, মুখ্যমন্ত্রীর এই সফরে সমাজকল্যাণ মূলক প্রকল্প বিতরণের কর্মসূচিও রাখা হয়েছে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী বৃহস্পতিবার ফের কলকাতায় ফেরার কথা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।

Leave a Comment