পড়ুয়া ৮২, দেখান ৪১০! পাঁচ বছর ধরে মিড ডে মিলের টাকা খাচ্ছেন কাটোয়ার স্কুলের শিক্ষক

katwa school mid day meal

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ফের খবরের শিরোনামে মিড ডে মিল কারচুপি (Mid Day Meal Scam)! বিপুল টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ উঠল কাটোয়ার কৈথন অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। জানা গিয়েছে, স্কুলের অন্য শিক্ষকরাই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এ নিয়ে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে। কিন্তু মিড–ডে মিলের কারচুপির অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন প্রধান শিক্ষক অসীম কুমার মণ্ডল। ইতিমধ্যেই প্রশাসনের তরফে তদন্ত শুরু হয়েছে এই অভিযোগের ভিত্তিতে।

ঘটনাটি কী?

রিপোর্ট অনুযায়ী, কাটোয়া ১ নম্বর ব্লকের কৈথন প্রাথমিক স্কুলে মিড ডে মিলের টাকা নিয়ে একের পর এক কারচুপির অভিযোগ উঠে এসেছে প্রধান শিক্ষক অসীম কুমার মণ্ডলের বিরুদ্ধে। পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে নাকি লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ হয়ে চলেছে মিড ডে মিলের বরাদ্দ থেকেই। অভিযোগ, ২০১৮ সাল থেকে স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রতিদিনের পড়ুয়া উপস্থিতি সরকারি খাতায় অতিরিক্ত দেখিয়ে বিপুল অঙ্কের টাকা তুলেছেন। যেখানে স্কুলের পড়ুয়ার সংখ্যা ৮২, সেখানে মিড ডে মিলের রেকর্ডে উঠে এসেছে পড়ুয়ার সংখ্যা ৪১০। তাই নিয়ে হুলুস্থুল কাণ্ড স্কুল চত্বরে। ইতিমধ্যেই ঘটনায় স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও স্কুল পরিচালন সমিতির সদস্যরা তাঁর বিরুদ্ধে আলাদা দু’টি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন বিডিও ও স্কুল পরিদর্শকের অফিসে।

নথি দেখাতে নারাজ প্রধান শিক্ষক

বিগত কয়েক বছর ধরেই কাটোয়া ১ নম্বর ব্লকের কৈথন প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক অসীম কুমার মণ্ডলের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলে ধরেছিলেন স্কুলের বাকি শিক্ষকেরা। কিন্তু প্রতিবারই সে সকল অভিযোগ এড়িয়ে এসেছেন ওই প্রধান শিক্ষক। তবে এবার মিড ডে মিলের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠে আসায় বেশ চাপে পড়েছেন অসীম কুমার মণ্ডল। প্রমাণস্বরূপ কোনও নথি দেখাতে চাইছেন না তিনি। এমনকি স্কুল পরিচালন কমিটিকেও নানা অজুহাতে এড়িয়ে যাচ্ছেন। তবে তিনি তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করে চলেছেন যে, কাগজে কিছু ভুল ত্রুটি ছিল। সেটা ঠিক হয়ে গিয়েছে। এক্ষেত্রে কোনও বেনিয়ম হয়নি। কিছুদিন আগেই BDO অফিস থেকে ভিজিট করে গিয়েছে।

আরও পড়ুন: অ্যাডমিটে ছবি বিভ্রাটের জের, পরীক্ষার্থীদের পরিচয়পত্র নিয়ে নয়া নির্দেশিকা SSC-র

উল্লেখ্য, স্কুলের মিড ডে মিলে বরাদ্দ টাকা নিয়ে কারচুপির অভিযোগ উঠতেই বাকি শিক্ষকরা জানিয়েছেন যে, “বারবার হিসাব চেয়েও পাইনি তাঁরা। সবসময় বলতেন, হিসাব দেখাতে বাধ্য নই। তাই প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি।” এই বিষয়ে দাঁইহাট চক্রের স্কুল পরিদর্শক পিনাকী ঘোষ জানিয়েছেন, “লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে দেখা হবে। আমি স্কুল পরিদর্শনে যাব। সম্পূর্ণ বিষয়টি জেলার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। যদি কোন ভুল ধরা হবে শীঘ্রই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

Leave a Comment