সহেলি মিত্র, কলকাতাঃ বাম আমল থেকে বাংলায় এখনও অবধি এমন কয়েক লক্ষ সরকারি জমি (Government Owned Land) রয়েছে যেগুলি অব্যবহৃত হয়ে পড়ে রয়েছে। জমির মালিক থেকে শুরু করে সরকার, কেউই ঠিক বুঝে উঠতে পারছেন না কী করা উচিৎ। এহেন পরিস্থিতিতে এবার সমস্যা মেটাতে খোদ আসরে নামতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। বর্তমানে এমন বহু জমি এমন পড়ে রয়েছে যেগুলি হয় আগাছায় ভরে গিয়েছে নয়তো বড় বড় ঘাস হয়ে গিয়েছে।
এবার দেড় লক্ষ একর খাস জমির স্বত্ব দেবে রাজ্য
মূলত বাম আমলে জমি ‘ভেস্টিং’ অর্থাৎ সিলিংয়ের অতিরিক্ত জমি সরকারি খাতায় তোলা হয়। এরপর এই ঘটনার বহু বছর কেটে গিয়েছে। এখনও বহু জমি নিয়ে মামলা চলছে বিভিন্ন আদালতে। সেগুলির নিষ্পত্তি কবে হবে? উত্তর জানা নেই কারোর। সেই সময়ে ভেস্টিং পদ্ধতিকে জমি মালিকরা অবৈধ বলে দাবি করেন। তাঁরাই সেই মামলা করেন। যাইহোক এহেন পরিস্থিতিতে নবান্ন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, মামলা তুলে নিলে সংশ্লিষ্ট দাবিদারকেই জমির লিজ, কিংবা ফ্রি হোল্ড বা মালিকানা স্বত্ব দেওয়া হবে। গত সোমবারের বৈঠকেই এই নিয়ম চালু করার ব্যাপারে সিলমোহর দিয়েছে রাজ্য মন্ত্রিসভা বলে খবর।
নিয়ম কী বলছে?
আরও জানা যাচ্ছে, শীঘ্রই ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের তরফে এই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি এবং গাইডলাইন জারি করা হবে। বর্তমানে এমন জমির পরিমাণ কত তা খতিয়ে দেখতে পর্যালোচনা শুরু হয়েছে। অভিজ্ঞ আমলাদের মতে, রাজ্যের এই সিদ্ধান্তের জেরে মামলার জট কাটিয়ে অন্তত দেড় লক্ষ একর জমির লিজ বা মালিকানা স্বত্ব দেওয়া সম্ভব হবে। আইন অনুযায়ী, একজন ব্যক্তির মালিকানাধীন জমির সর্বোচ্চ সীমা (ল্যান্ড সিলিং) হল ২৪.২২ একর। আর সেচযুক্ত এলাকা হলে ১৭.৩ একর। এর বেশি হলেই অতিরিক্ত জমির ‘ভেস্টিং অর্ডার’ করে রাজ্য সরকার।
আরও পড়ুনঃ পুলিশের পরীক্ষার প্রশ্ন পাইয়ে দেওয়ার নামে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ! গ্রেপ্তার সিভিক ভলেন্টিয়ার
সেটা ওয়েস্ট বেঙ্গল এস্টেট অ্যাকুইজিশন অ্যাক্ট ১৯৫৩ এবং ওয়েস্ট বেঙ্গল ল্যান্ড রিফর্মস অ্যাক্ট ১৯৫৫ মেনে। যদিও এর বিরুদ্ধে ল্যান্ড ট্রাইবিউনাল সহ বিভিন্ন আদালতের দ্বারস্থ হন জমিহারারা। জানা গিয়েছে, রাজ্যের মোট জমির পরিমাণ ৮৮ হাজার ৭৫২ বর্গ কিলোমিটার বা ২ কোটি ১৯ লক্ষ ৩১ হাজার ৯৭ একর। আর জমি ‘ভেস্টিং’ হয়েছে ৩৩.৫ লক্ষ একর। এর মধ্যে বনাঞ্চল ১০.৭৮ লক্ষ একর, কৃষিজমি ১৪.৬৫ লক্ষ একর এবং অ-কৃষি জমি ৮.০৭ লক্ষ একর। পাট্টা বা অন্যান্যভাবে বিতরণ হয়েছে ১০.৬৫ লক্ষ একর খাস জমি। যদিও এই প্রক্রিয়া কবে শুরু হবে এবং কারা পাবেন, সেই বিষয়ে কিছু জানা সম্ভব হয়নি।