পরনে গাউন, মাথায় টুপি! প্রকাশ্যে -এ নাবালিকা নির্যাতনের সিসিটিভি ফুটেজ

SSKM Hospital

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: চিকিৎসালয়ে ফের যৌন নির্যাতন! নাম উঠে এল SSKM হাসপাতালের (SSKM Hospital)! দিনে দুপুরে ডাক্তারের পরিচয় দিয়ে হেনস্থা করার অভিযোগ উঠল সেই হাসাপাতালেরই অস্থায়ী কর্মীর বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করে ভবানীপুর থানার পুলিশ। পুলিশ আপাতত তদন্ত শুরু করে দিয়েছে। এমতাবস্থায় পুলিশের হাতে ফাঁস হল ওইদিনের হাসপাতালের সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ।

যৌন নির্যাতনের শিকার এক নাবালিকা

রিপোর্ট অনুযায়ী, গত বুধবার এসএসকেএম হাসপাতালে মনোরোগ বিভাগে মা ও দাদুর সঙ্গে ডাক্তার দেখাতে এসেছিল ১৫ বছরের এক নাবালিকা। এরপর দুপুর ১.৫৫ মিনিটে মেয়েকে দাদুর কাছে রেখে কাউন্টারে টিকিট করাতে যান মা। সেই সময়ে চিকিৎসকদের পরনে থাকা গাউন ও হেড ক‍্যাপ পরে দাদুর কাছে যায় অভিযুক্ত অমিত মল্লিক। সে নিজেকে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ বলে পরিচয় দেয়। এবং নাবালিকাকে পরীক্ষা করার নামে ট্রমা কেয়ারের ভেতরে একটি প্রাইভেট শৌচালয়ে নিয়ে যায়। সেখানে দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করে যৌন নির্যাতন শুরু হয় নাবালিকার। এমতাবস্থায় মেয়েটির ফোনে একটি অজ্ঞাত নম্বর থেকে ফোন আসে। সে ফোন রিসিভ করেই বোঝে তার মা ফোন করছেন। সঙ্গে সঙ্গে ওই নাবালিকা বলে, ‘আমার পুলিসের সাহায্য লাগবে।’ আর তখনই দরজা খুলে পালিয়ে যায় অভিযুক্ত।

চিকিৎসকের নাম ভাঙিয়ে নির্যাতন!

এরপর কোনওরকমে মেয়েটি শৌচালয় থেকে বেরিয়ে মা এবং দাদুর সঙ্গে দেখা করে এবং গোটা বিষয়টি জানায়। সময় নস্ট না করে সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি হাসপাতালে কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। অভিযোগমতো সিসিটিভি খতিয়ে দেখতে গিয়ে দেখা যায়, সত্যিই অভিযুক্ত সঙ্গে করে নিয়ে যাচ্ছে ওই নাবালিকাকে। কিন্তু ওই ব‍্যক্তি হাসপাতালের কোনো চিকিৎসক নন। জানা গিয়েছে তাঁকে প্রায়ই SSKM-এর কার্ডিওলজি বিভাগে দেখা যায়। আবার অনেকে বলেছেন তিনি নাকি দালালি করেন হাসপাতালে। তবে পরে জানা যায় সে এনআরএস হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষী। আগে এসএসকেএমে ছিল। সেই সূত্রে এসএসকেএম ও শম্ভুনাথ পন্ডিতে তাঁর অবাধ বিচরণ! এসএসকেএম হাসপাতালের পুরনো ইউনিফর্মও রয়েছে তাঁর কাছে।

পোশাক বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ

অভিযুক্ত অমিত মল্লিক এসএসকেএম হাসপাতালের পুরনো স্টাফ হলেও কেন অভিযুক্তের পরনে চিকিৎসকদের পোশাক রয়েছে তাই নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বারংবার। সেক্ষেত্রে পুলিশের প্রাথমিক ধারণা পোশাকটি জোগাড় করা হয়েছে আগের থেকে কারণ ডাক্তারদের পোশাকে থাকলে ধরা পড়ার আশঙ্কা কম এবং রোগীদের বিশ্বাসও অর্জন করা সম্ভব। সেই কারণেই হয়তো সে ওই পোশাকে ছিল বলে খবর। অভিযোগ পেয়ে তার বাড়ি থেকে সেই পোশাক বাজেয়াপ্তও করেছে পুলিশ। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে এসএসকেএম হাসপাতালের ঘটনায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে বিএসএসের ৩১৯ নম্বর ধারা যুক্ত করেছে পুলিশ।

আরও পড়ুন: ভারতীয়দের ‘ব্রেন ডেড’ পোস্টে সমর্থন মহুয়ার, পরে ভুল স্বীকার করে বিবৃতি সাংসদের

উল্লেখ্য, এর আগে উলুবেড়িয়া হাসপাতালে জুনিয়র চিকিৎসককে যৌন হেনস্থা করার জন্য এক ট্রাফিক হোম গার্ড ও তাঁর প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছিল। এরপর অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অন্যদিকে দুর্গাপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালের মহিলা ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠে আসে। পরে পুলিশ তদন্ত করে জানতে পারে কোনো গণধর্ষণ হয়নি। এই ঘটনায়ও অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এর মধ্যেই SSKM-এ এই ঘটনা ঘটে যায়। এক্ষেত্রেও পুলিশ অভিযুক্তকে আটক করে।

Leave a Comment