প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: জাতীয় সংগীত তো আছেই তার সঙ্গে যুক্ত হবে রাজ্য সংগীত (West Bengal State Anthem)! এমনই নির্দেশিকা জারি করেছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। স্পষ্ট বলা হয়েছে সকালের প্রার্থনায় গাইতে হবে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচনাকরা গান ‘বাংলার মাটি, বাংলার জল’। যদিও এই রাজ্য সঙ্গীত নিয়ে বিতর্ক কম নয়। এমতাবস্থায় রাজ্যের সমস্ত স্কুলে শিক্ষা দফতরের নির্দেশ জারি থাকলেও শুধুমাত্র এই জায়গার স্কুলগুলিতে গাওয়া হবে না ‘বাংলার মাটি, বাংলার জল’।
রাজ্য সঙ্গীত নিয়ে বিতর্ক
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘বাংলার মাটি, বাংলার জল’ গানটি ২০২৩-এ রাজ্য সঙ্গীত হিসাবে নির্ধারণ করা হয়েছিল। বিধানসভায় এ সংক্রান্ত প্রস্তাব পাশ করা হয়। যদিও এই নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি। এরপর চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে রাজ্যের মুখ্যসচিব এক নির্দেশিকা জারি করে জানিয়েছিল যে, রাজ্য সঙ্গীত হিসাবে গাওয়া হবে নির্দিষ্ট একটি অংশ, ‘বাংলার মাটি, বাংলার জল, বাংলার বায়ু, বাংলার ফল—পুণ্য হউক, পুণ্য হউক, পুণ্য হউক হে ভগবান। বাঙালির প্রাণ, বাঙালির মন, বাঙালির ঘরে যত ভাই বোন— এক হউক, এক হউক, এক হউক হে ভগবান।’ অর্থাৎ স্পষ্ট বলা হয়েছিল যে রাজ্য সঙ্গীত সম্পূর্ণ হতে হবে এক মিনিটের মধ্যে। এমতাবস্থায় ফের স্কুলে সকালের প্রার্থনায় রাজ্য সঙ্গীত নিয়ে বড় আপডেট দিল শিক্ষা দফতর।
কোথায় গাওয়া হবে না রাজ্য সঙ্গীত?
রাজ্যের নয়া নির্দেশিকায় সমস্ত স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের সকালের প্রার্থনায় রাজ্য সঙ্গীত গাওয়ার কথা বলা হয়েছে। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সেক্রেটারি সুব্রত ঘোষ এ প্রসঙ্গে বলেন, “এ বার থেকে স্কুলগুলিতে প্রার্থনাসভায় এই গান বাধ্যতামূলক।” আগে রাজ্যের সমস্ত সরকার ও সরকার পোষিত স্কুলগুলিতে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার পর স্কুলগুলি তাদের ঠিক করা প্রার্থনাসঙ্গীত গাইত। কিন্তু এবার সেই রাজ্য সঙ্গীতকেই রাজ্যের প্রায় সব স্কুলে বাধ্যতামূলক করে দিল শিক্ষা দফতর। তবে একটি জায়গা বাদে এবার সেই নির্দেশিকা কড়াকড়ি করা হল। স্পষ্ট জানানো হয়েছে দার্জিলিং ও গোর্খাল্যান্ডের অধীনস্থ অঞ্চলগুলিতে গাওয়া হবে না রাজ্য সঙ্গীত।
আরও পড়ুন: ২৮ বছর পর মৃত ব্যক্তি ফিরল ঘরে! SIR আবহে অবাক কাণ্ড বাগদায়
উল্লেখ্য, রাজ্যের শিক্ষা দফতরের তরফে সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে একটি নির্দেশিকা। যেখানে স্পষ্ট জানানো হয়েছে যে, গোর্খাল্যান্ডের অধীনস্থ কোনও স্কুলে রাজ্য সঙ্গীত গাইবার নিয়ম লাগু হবে না। অর্থাৎ, সেখানকার প্রার্থনাসভায় গাওয়া হবে না ‘বাংলার মাটি, বাংলার জল’। এই প্রসঙ্গে জেলা স্কুল পরিদর্শকের কাছে একটি চিঠিও পাঠিয়েছেন জিটিএ-র সচিব পিডি প্রধান। তিনি জানিয়েছেন, ‘পাহাড়ের মানুষের ভিন্ন সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং ভাষা। সুতরাং, এখানে এই নিয়ম প্রযোজ্য হয় না।’ তাই সেই কারণে এই বড় সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য শিক্ষা পর্ষদ।