বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: সম্প্রতি ভারতের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে সন্ত্রাসবাদের আশ্রয়দাতা পাকিস্তানকে একের পর এক যুদ্ধাস্ত্র দিয়েছিল তুরস্ক। বন্ধু তুর্কির তরফে উন্নত ড্রোনের পাশাপাশি একাধিক সমরাস্ত্র পেয়েছিল ইসলামাবাদ। এবার সেই পথ ধরেই আরেক ভারত বিরোধীকে অস্ত্রশস্ত্র সরবরাহ করতে চলেছে আঙ্কারা।
আপাতত যা খবর, ভারতের তরফে পাওয়া সব রকম সাহায্য ভুলে গিয়ে পাকিস্তানের পর এবার বাংলাদেশকেও তাঁতাচ্ছে অকৃতজ্ঞ তুর্কি! সূত্রের খবর, উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ড্রোন থেকে শুরু করে অন্যান্য সামরিক অস্ত্র বাংলাদেশেও বিক্রি করতে চাইছে তুরস্ক। শোনা যাচ্ছে, মূলত সেই কারণেই দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা সমঝোতা চূড়ান্ত করতে আগামী মঙ্গলবার বাংলাদেশ সফরে আসছেন তুরস্কের বিশেষ প্রতিনিধিদল।
বাংলাদেশে আসছে তুরস্কের প্রতিনিধিরা
মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, আগামী মঙ্গলবার বাংলাদেশের সাথে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত সমঝোতা চুক্তি নিয়ে কথা বলতে বাংলাদেশে আসছে তুরস্কের প্রতিরক্ষা শিল্প সংস্থার প্রধান হালুক গর্গুনের নেতৃত্বাধীন 8 সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, মঙ্গলবারই ওপার বাংলার মাটিতে পা পড়বে তাঁদের। বিশেষজ্ঞদের মতে, এদিনই বাংলাদেশের সাথে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি সই করতে পারে তুরস্ক।
বাংলাদেশের সাথে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি হবে তুরস্কের!
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার তুরস্কের ওই প্রতিনিধি দলটি বাংলাদেশের সাথে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করবে। যার মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও তুর্কি প্রতিরক্ষা সংস্থাগুলির যৌথ উদ্যোগে চট্টগ্রাম ও নারায়ণগঞ্জ প্রতিরক্ষা শিল্প কমপ্লেক্স স্থাপন। জানা যাচ্ছে, দুদেশের মধ্যে বড় চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার আগে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জামানের সাথে বৈঠকে বসতে পারেন তুরস্কের শিল্প সংস্থার প্রধান হালুক।
ভারতের বিরুদ্ধে কৌশলগত পদক্ষেপ তুরস্কের
পাকিস্তানের পর এবার বাংলাদেশকে নানান যুদ্ধাস্ত্র দিয়ে সহায়তা করার মাধ্যমে ভারতের বিরুদ্ধে একেবারে ফুলেফেঁপে উঠতে চাইছে তুরস্ক, এমনটাই মত বিশেষজ্ঞ মহলের। আন্তর্জাতিক কূটনীতিকদের একাংশ মনে করছেন, পাকিস্তানে ভারতের সিঁদুর অভিযানের পরই ভারতের কাছের পড়শিদের হাত করতে চাইছে তুর্কি! ধারণা করা হচ্ছে, পাকিস্তানের পর এবার বাংলাদেশকে ড্রোন সহ অন্যান্য যুদ্ধাস্ত্র বিক্রি করে ভারতের বিরুদ্ধে বড়সড় কৌশলগত পদক্ষেপ নিয়ে রাখতে চাইছেন এরদোয়ান। তবে শেষ পর্যন্ত তুরস্কের এমন পদক্ষেপের পাল্টা প্রত্যাঘাত ভারত করবে কিনা সেটাই এখন দেখার!
অবশ্যই পড়ুন: জোড়া ঘূর্ণাবর্তের দাপটে দক্ষিণবঙ্গের ৭ জেলায় ভারী বৃষ্টি, ঝড়! আগামীকালের আবহাওয়া
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের সাথে তুরস্কের সখ্যতার ঘটনা এটাই প্রথম নয়। আসলে শেখ হাসিনার শাসনকাল থেকেই এরদোগানের দেশের তরফে একাধিক যুদ্ধাস্ত্র, TRG-300 মাল্টিপল লঞ্চ রকেট সিস্টেম সহ অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম পেয়ে আসছে বাংলাদেশ। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশ নৌসেনার সাথেও ARIS-150 দ্রুতগতির নৌযান নিয়েও চুক্তি করেছিল তুরস্ক। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে তুর্কির সাথে ওপারের সম্পর্ক ক্রমশ বেড়েছে। আসলে, ইউনূসের জামানায় পাকিস্তানের সাথে পদ্মা পাড়ের ঘনিষ্ঠতা যত গভীর হয়েছে, ততই বাংলাদেশের কাছাকাছি ঘেঁষেছে তুরস্ক।