সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: গত শুক্রবার ফিনল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বড়সড় ঘোষণা করে বসল। হ্যাঁ, স্পষ্ট জানানো হল, ২০২৬ সাল থেকে ইসলামাবাদ, কাবুল ও ইয়াঙ্গুনে দূতাবাস বন্ধ করবে ফিনল্যান্ড (Finland Embassy Closure)। এর জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে। মূলত তিন দেশের রাজনৈতিক উন্নয়ন এবং ফিনল্যান্ডের সঙ্গে তাদের সীমিত বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের জেরেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। তবে আদৌ কি এটাই কারণ?
বিবৃতিতে কী বলা হল?
এদিন ফিনল্যান্ডের দূতাবাস জানিয়েছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিদেশে তাদের মিশনের নেটওয়ার্ক সংস্কার করছে। সেই কারণে পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং মায়ানমারে দূতাবাস বন্ধ করবে ফিনল্যান্ড। ২০২৬ সালের মধ্যেই এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। বলাবাহুল্য, দেশটির কূটনৈতিক পরিস্থিতি, সমসাময়িক বৈদেশিক নীতির চাহিদা আর রপ্তানি প্রচারণার উদ্যোগের উদ্দেশ্যে পূরণ করার জন্যই এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলিনা ভালটোনেন বলেছেন, সংস্কারগুলি ফিনল্যান্ডের ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে সাহায্য করবে।
তবে এখানেই থেমে থাকেননি ভালটোনেন। তিনি আরও জানিয়েছেন, ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য আমরা ফিনল্যান্ডের বিদেশী মিশনের নেটওয়ার্ক পদ্ধতিগুলিকে উন্নত করব। পাশাপাশি আমাদের অপারেটিং পরিবেশ দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। আর এবার যে পরিবর্তনগুলো করা হবে তা আমাদের শক্তিশালী আর প্রতিযোগিতামূলক ফিনল্যান্ড গড়ে তুলতে সাহায্য করবে। এমনকি আন্তর্জাতিক খাতেও আমরা আধিপত্য বিস্তার করব।
পাকিস্তান-আফগানিস্তান সংঘাতও কি নেপথ্যে কাজ করছে?
উল্লেখ্য, এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে ইসলামাবাদ, কাবুল এবং ইয়াঙ্গুনে দূতাবাস বন্ধ করার কারণ সামনে আসেনি। তবে পাকিস্তান-আফগানিস্তান উত্তেজনা তীব্র আকার ধারণ করার পর এই ঘোষণা এসেছে। কারণ, সাম্প্রতিক সময়ে কাবুল ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে বারবার আকাশ সীমা লঙ্ঘনের অভিযোগ আনছে। এমনকি পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছে যে, আফগান তালেবানরা তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানকে আশ্রয় দিচ্ছে। যার ফলে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ লেগেই রয়েছে।
আরও পড়ুন: মেলে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত! একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণী পাসেই স্কলারশিপ দিচ্ছে টাটা
উল্লেখ্য, আগের সপ্তাহের শুরুতেই পূর্ব আফগানিস্তানে রাতভর পাকিস্তানের বিমান হামলায় ১০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। আর কাবুল সঠিক সময়ে প্রতিশোধ নেওয়ারও প্রস্তুতি নিয়েছে। যদিও ইসলামাবাদ এই হামলা চালানোর কথা অস্বীকার করেছে। তাই এই যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি এবং টালমাটাল কূটনৈতিক অবস্থার জেরেই হয়তো ফিনল্যান্ড এই বড়সড় সিদ্ধান্তের পথে হেঁটেছে বলে মত কিছু কিছু বিশেষজ্ঞদের। এখন শুধু আগামী ২০২৬ সালের অপেক্ষা।