পারমাণবিক খাতে বেসরকারি বিনিয়োগ, সম্মতি দিলেন খোদ রাষ্ট্রপতি! কী এই SHANTI বিল?

SHANTI Bill

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: ভারতের পারমাণবিক শক্তি খাতে এবার আমূল বদলাবে। সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে পাশ হয়েছে শান্তি বিল (SHANTI Bill)। যার মাধ্যমে প্রথমবারের মতো দেশের বেসামরিক পরমাণু বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষেত্রে বেসরকারি সংস্থাগুলির জন্য দরজা খুলল। হ্যাঁ, বৃহস্পতিবার রাজ্য সভায় এবং তার আগের দিন লোকসভায় রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু নিজেই এই বিলে সম্মতি দিয়েছেন। ফলত, আনুষ্ঠানিকভাবে তা এখন আইনে পরিণত হয়েছে।

কী এই SHANTI বিল?

SHANTI বিলের সম্পূর্ণরূপ হল Sustainable Harnessing and Advancement of Nuclear Energy for Transforming India। সরকার দাবি করছে, এই বিলের আওতায় ভারতের পারমাণবিক শক্তি খাতে বিনিয়োগ বাড়বে, এবং 2047 সালের মধ্যে প্রায় 100 গিগাওয়াট পারমাণবিক শক্তি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে। এতদিন পর্যন্ত শুধুমাত্র রাষ্ট্রায়াত্ত সংস্থাগুলি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনা করতে পারত। সেখানে বেসরকারি সংস্থার ভূমিকা ছিল সীমিত। তবে নতুন এই বিলের আওতায় বেসরকারি সংস্থাগুলি এবার সুযোগ পাবে।

হ্যাঁ, নতুন আইনের আওতায় বেসরকারি কোম্পানিগুলি সরাসরি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বা চুল্লি নির্মাণ করতে পারবে। এমনকি মালিকানা, পরিচালনা বা প্রয়োজনে বাতিলও করতে পারবে। কিন্তু এর জন্য সরকারি নিরাপত্তার ছাড়পত্র বা লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

কোন কোন আইনে বদল আনা হল?

জানা গিয়েছে, এই বিলে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে। প্রথমত, 2010 সালের সিভিল লাইয়াবিলিটি ফর নিউক্লিয়ার ড্যামেজ (CLND) অ্যাক্ট বাতিল করা হয়েছে। এমনকি দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে অপারেটরের উপর অতিরিক্ত আর্থিক দায় কমিয়ে বাস্তবসম্মত কাঠামো তৈরি করতে হবে। আর জ্বালানি এবং প্রযুক্তি সরবরাহকারীদের উপর বিতর্কিত দায়বদ্ধতার ধারা তুলে নিতে হবে। সরকার মনে করছে, এই কঠোর দায়বদ্ধতা আইন এতদিন বিদেশী এবং দেশীয় বিনিয়োগের সবথেকে বড় বাধা ছিল।

আরও পড়ুন: সিগারেট কিনতে মালগাড়ি থামায় চালক, ভিডিও ভাইরাল হতেই কড়া পদক্ষেপের পথে রেল

এদিকে শান্তি বিলে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, পরমাণু জ্বালানি চক্রের কৌশলগত ও সংবেদনশীল অংশ সম্পূর্ণ সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এর মধ্যে ইউরেনিয়াম ও থোরিয়াম খনন, সমৃদ্ধকরণ, ভারী জল উৎপাদন, ব্যবহৃত জ্বালানির পুনঃপ্রক্রিয়াকরণ, উচ্চ মাত্রার তেজস্ক্রিয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং আইসোটোপ পৃথকীকরণ রয়েছে। এই কাজগুলির কেন্দ্র সরকার বা সরকারি সংস্থাগুলি শুধুমাত্র করতে পারবে। বেসরকারি সংস্থাগুলি এতে হাত লাগাতে পারবে না।

Leave a Comment