প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত বছর অর্থাৎ ২০২৪ এ প্রত্যেক পুজো কমিটিকে রাজ্য সরকার ৮৫ হাজার টাকা করে অনুদান দিয়েছিল। যা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে একাধিক বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। এমনকি অনুদান নিয়ে গতবছরও মামলা উঠেছিল কলকাতা হাইকোর্টে। কিন্তু সেই সকল বিতর্ককে তুড়ি মেরে চলতি বছর অনুদানের পরিমাণ একধাক্কায় অনেকটাই বাড়িয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একবারে ২৫ হাজার টাকা বাড়িয়ে ২০২৫ এর পুজো অনুদানের পরিমাণ রাখা হল ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা। এমতাবস্থায় ফের এই নিয়ে উঠল হাইকোর্টে মামলা।
অনুদান নিয়ে ফের হাইকোর্টে মামলা
উল্লেখ্য, বিগত কয়েক বছর ধরে সরকারি কর্মীরা DA নিয়ে একধিক আন্দোলন করে আসছে কিন্তু সেক্ষেত্রে রাজ্য সরকার বারবার আর্থিক সঙ্কটের অজুহাত দিয়ে আসছে। এমন পরিস্থিতিতে উল্টো পিঠে অনুদানের খরচও তরতরিয়ে বাড়িয়ে চলেছে সরকার। তখন সেক্ষেত্রে প্রশ্নের মুখে পড়ছে এই অনুদান প্রসঙ্গ। এমতাবস্থায় নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চলতি বছরের অনুদান পর্ব ঘোষণার এক সপ্তাহ কাটতে না কাটতেই এই নিয়ে ফের মামলা উঠল কলকাতা হাইকোর্টে। আনন্দবাজারের রিপোর্ট অনুযায়ী, নতুন করে আবেদন দাখিল করলেন দুর্গাপুরের বাসিন্দা সৌরভ দত্ত। গতবারও সৌরভ একই মামলা করেছিল। তবে এখনও এই মামলার শুনানি কবে হবে, তা নিয়ে কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।
অনুদান বেড়েছে ৯০০ শতাংশ
২০১৮ সাল থেকে শুরু হয়ে আসছে অনুদান পর্ব। পুজোর সময় একাধিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা, মণ্ডপের সাজসজ্জা, বিদ্যুতের খরচের কথা মাথায় রেখে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছিলেন মমতা। শুরুটা হয়েছিল ১০ হাজার টাকা দিয়ে। প্রতিবছরই অনুদানের অঙ্ক বাড়তে থাকছে। রাজ্য জুড়ে হাজার হাজার ক্লাবকে দেওয়া হচ্ছে অনুদান। বর্তমানে সেই অনুদান গিয়ে ঠেকেছে ১ লক্ষ ১০ হাজারে, অর্থাৎ প্রায় ৯০০ শতাংশ। যদিও এই অনুদান পুজো কমিটির কাচ্ছে বেশ আনন্দের বিষয় হলেও অনেকেই এই অনুদান মেনে নিতে পারেনি। গত বছর এই অনুদানের চক্করে রাজ্যের কোষাগার থেকে ৩৬৫ কোটি টাকা খরচ হয়েছিল এবার হিসেব করলে দেখা যাচ্ছে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা খরচ হবে।
আরও পড়ুন: শুভেন্দু অধিকারীর গাড়ি, কনভয়ে ভয়ানক হামলা! কোচবিহারে তুলকালাম কাণ্ড
উল্লেখ্য অনেকেই রাজ্য সরকারের এই দুর্গাপুজো অনুদানকে ভোট আদায়ের একটি স্টান্ট বলে মনে করছেন। কারণ বছর পেরোলেই ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচন। সেক্ষেত্রে নিজেদের ক্ষমতা শক্ত করে ধরে রাখতে দুর্গাপুজোর অনুদানকেই অস্ত্র হিসেবে দেখছে শাসকদল। আইনজীবীদের একাংশের পর্যবেক্ষণ, গোড়া থেকেই সরকারি কোষাগার থেকে পুজো কমিটিকে অনুদান দেওয়া এবং সেই টাকা খরচ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। মামলাও হয়েছে। কিন্তু কোনও নির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত এখনও বেরিয়ে আসেনি। তাই এই মামলা নিয়েও নানা সংকোচে রয়েছেন সকলে।