প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ২০২২ সালের ৩ ডিসেম্বর রাতের নাড়ুয়াভিলায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়েছিল। সেই ঘটনায় তৃণমূলের বুথ সভাপতিসহ মত তিনজনের মৃত্যু হয়েছিল। তদন্তের নানা টানাপোড়েনের পর অবশেষে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্তের দায়ভার NIA এর হাতে পৌঁছয়। আর এবার সেই NIA এর তদন্তে অভিযুক্তদের তালিকায় উঠে এল স্থানীয় তৃণমূল নেতা সুবীর মাইতির নাম। আটক করল ভূপতিনগর থানার পুলিশ
উদ্ধার বোমা তৈরির মশলা
টিভি ৯ বাংলার রিপোর্ট অনুযায়ী, পুলিশ তদন্তের মাধ্যমে জানতে পেরেছে যে, পূর্ব মেদিনীপুরের অর্জুন নগরের কমনানবাড় এলাকায় একটি দশকর্মার দোকান রয়েছে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা সুবীর মাইতির। সেই দোকানের আড়ালেই দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বোমা তৈরির মশলা ও বারুদ মজুত রাখা হত এবং বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হতো। সেই খবর পুলিশের কানে পৌঁছতেই গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার পুলিশ দোকানে হানা দেয়। আর সেখান থেকেই প্রচুর টাকার বোমা তৈরির মশলা উদ্ধার করা হয়। এমনকি, গাড়ি করে অন্যত্র মশলা পাচারের পরিকল্পনাও ব্যর্থ করে দেয় পুলিশ। জানা গিয়েছে আজ অর্থাৎ শনিবার, ধৃতকে কাঁথি মহকুমা আদালতে তোলা হবে।
তবে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে এটি নাকি রং মশলা এবং বাজি তৈরির সরঞ্জাম। আর সেই বাজির ৬০ কেজির মতো মশলা উদ্ধার হয়েছে। আর এর সঙ্গে নাকি নাড়ুয়াবিলা বোমা বিস্ফোরণ-কাণ্ডের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই
ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়
এদিকে, তৃণমূল নেতা সুবীর মাইতিকে আটক করার প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছে শাসক দল। কিন্তু তদন্ত ব্যবস্থা একেবারে অনড়। আপাতত বিস্ফোরক ও বোমা তৈরির সরঞ্জামের ফরেনসিক পরীক্ষা করা হবে এবং এর উৎস ও গন্তব্য খতিয়ে দেখা হবে। শুধু তাই নয় তৃণমূল নেতা সুবীর মাইতির অতীত রেকর্ড ও রাজনৈতিক যোগসূত্রের উপরেও নজরদারি চলছে। তার উপর বিস্ফোরক উদ্ধারের ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। সাধারণ মানুষও বেশ আতঙ্কিত। আপাতত সেখানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: কলকাতা মেডিক্যালে আপত্তি পরিবারের, সিঙ্গুরে মৃত নার্সের ময়নাতদন্ত হবে কল্যাণী AIIMS-এ
প্রসঙ্গত, তৃণমূল নেতার গ্রেফতারিতে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। শাসকদলকে রীতিমত তুলোধোনা করে ছাড়ল গেরুয়া শিবির। এই প্রসঙ্গে ভগবানপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতি বলেন, “২০২৬-এর নির্বাচনকে সামনে রেখে তৃণমূল বোমা তৈরির জন্য ঘর গোছাতে শুরু করেছে।” তিনি তৃণমূলকে বিঁধে আরও বলেন, “সুবীর গ্রেফতার হওয়ার পর তৃণমূলের নেতাকর্মীরা তাকে ছাড়ানোর জন্য থানায় রীতিমতো তদারকি করছেন।” যদিও বিরোধী দলের কথা উড়িয়ে তৃণমূলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলার মুখপাত্র অপরেশ সাঁতরা বলেন, “বিষয়টি আমার জানা নেই, জেনে বলব।”