প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: দীর্ঘ ৪ বছর পর ভারত-রাশিয়া বার্ষিক সম্মেলন উপলক্ষে দু’দিনের ভারত সফরে এসেছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (Vladimir Putin)। গত বৃহস্পতিবার রাতে বিমানবন্দরে অবতরণ করেন তিনি, আর প্রাণের চেয়েও প্রিয় বন্ধুকে দেখবার জন্য রীতিমত প্রোটোকল ভেঙেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি নিজে বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানাতে যান। আর সেখানেই ভারত ও রাশিয়ার সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতার বার্তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। আর এবার বন্ধুর জন্য মোদি বাছাই করে নিলেন ৬ টি বিশেষ উপহার।
পুতিনকে বিশেষ উপহার মোদির
জানা গিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রাণের বন্ধু রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে মোট ছ’টি উপহার দিয়েছেন। আসলে ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার বন্ধুত্বপ্রীতি আরও মজবুত এবং সুমধুর গড়ে তোলার জন্য ভারতীয় আধ্যাত্মিকতা, কারুশিল্প এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মিশ্রণে তৈরি কিছু বিশেষ উপহার তুলে দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। আর সেই উপহারগুলির মধ্যে যেমন রয়েছে অসমের জগৎবিখ্যাত চা রুশ ঠিক তেমনই রয়েছে কাশ্মীরের বিখ্যাত জাফরান। চমক দেওয়া বিষয় হল সেই উপহারের মধ্যেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতিকেও তুলে ধরেছেন।
দেওয়া হয়েছে মার্বেলের দাবার সেট
ভারত ও রাশিয়ার সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতার বার্তা স্পষ্ট করতেই পুতিনের হাতে এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তুলে দিয়েছেন গীতার একটি রাশিয়ান সংস্করণ। যেখানে মহাভারতের যুদ্ধ শুরুর আগে অর্জুন এবং কৃষ্ণের মধ্যে যে কথোপকথন হয়েছিল, তা এই গ্রন্থে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে লিপিবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। গতকালই সেই উপহার দেওয়ার মিষ্টি মুহূর্ত তিনি তুলে ধরেছিলেন। এছাড়াও উপহারস্বরূপ মোদী উত্তরপ্রদেশের ‘এক জেলা এক পণ্য’ উদ্যোগের অধীনে আগ্রার বিখ্যাত স্টোন ইনলে কারুকার্যের নিদর্শন হিসেবে হাতে তৈরি একটি মার্বেলের দাবার সেটও উপহার দেন। এই সেটে রয়েছে বিপরীত রঙের পাথরের ঘুঁটি আর প্রতিটি ঘুঁটিতে আলাদা নকশা করা।
আরও পড়ুন: সকাল থেকেই বিপুল তোড়জোড়! হুমায়ুনের বাবরি মসজিদের শিলান্যাস ঘিরে চরম নজরদারি
উপহারে ফুটে উঠেছে পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি
এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী মহারাষ্ট্রে তৈরি একটি রুপোর ঘোড়াও উপহার দিয়েছেন, যা সূক্ষ্ম ধাতুর মাধ্যমে নির্মাণ করা হয়েছে। জানা গিয়েছে ভারতীয় এবং রুশ উভয় সংস্কৃতিতেই ঘোড়া মর্যাদা ও বীরত্বের প্রতীক। পাশাপাশি অন্যান্য উপহারের মধ্যে রয়েছে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার উর্বর জমিতে চাষ করা আসামের ব্ল্যাক টি। এছাড়াও চায়ের সঙ্গে মোদী মুর্শিদাবাদের একটি রুপোর টি-সেটও উপহার দেন, যা পশ্চিমবঙ্গের ধাতব শিল্পের নিদর্শন হিসেবে বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য। আর সবথেকে উল্লেখযোগ্য হল কাশ্মীরি জাফরান, যা স্থানীয়ভাবে কং বা জাফ্রান নামে পরিচিত। তার গভীর রঙ, সুগন্ধ এবং স্বাদের জন্য এটি বেশ মূল্যবান।