সৌভিক মুখার্জী, সামসেরগঞ্জ: গতকাল মুর্শিদাবাদের সামসেরগঞ্জে পিতা-পুত্র হত্যাকাণ্ডে বড় রায় দিয়েছে আদালত। ওয়াকফ আইনি বিক্ষোভ চলাকালীন হরগোবিন্দ দাস এবং তাঁর ছেলে চন্দন দাসের খুন হওয়ার ঘটনায় ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে জঙ্গিপুর মহকুমা আদালত। তবে এই রায়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari on Samserganj Murder)। সাংবাদিক বৈঠকে তিনি স্পষ্ট জানান, এই রায়ের বিরোধিতা করে হাইকোর্টে যাবেন তিনি। পুলিশের উপরেই মূলত তাঁর ক্ষোভ এবং তিনি বলেছেন, তাঁদের জন্যই দোষীদের সর্বোচ্চ সাজা হয়নি।
প্রসঙ্গত, গত ১২ এপ্রিল সংশোধিত ওয়াকফ আইনের বিরোধিতা চলাকালীন মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর মহকুমা থেকে শুরু করে সামশেরগঞ্জ, সুতি, ধুলিয়ানের মতো একাধিক এলাকায় পরিস্থিতি রণক্ষেত্রে রূপ নিয়েছিল। আর সেই সময় হরগোবিন্দ দাস এবং তাঁর ছেলে সামসেরগঞ্জে খুন হন। অভিযোগ, বাবা এবং ছেলেকে ঘর থেকে টেনে বার করে এনে কুপিয়ে খুন করা হয়, যা নিয়ে গোটা রাজ্যে শুরু হয় তোলপাড়। তবে দীর্ঘ টালবাহানার পর অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়। ডিসেম্বর ১৬ তারিখে চলে শুনানি। সেই সূত্রে, বিচারক সোমবার ১৩ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে।
ক্ষোভ প্রকাশ শুভেন্দু অধিকারীর
এদিকে এই রায় নিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী স্পষ্ট বলেছেন, এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে গেলে তিনি আইনি সাহায্য করবেন। এমনকি কলকাতা হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী দিয়ে সাহায্য করা হবে। শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে হরগোবিন্দ দাসের স্ত্রী তথা চন্দন দাসের মা পারুল দাস উপস্থিত ছিলেন। সেখানে তাঁর বক্তব্য রাখেন, বাড়িতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং পুলিশ আধিকারিকরা বলে এসেছিলেন, দোষীদের ফাঁসি হবে। কিন্তু তা হয়নি। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই শুভেন্দু বলেন, পুলিশের চার্জশিট সবাইকে একই দোষ দেখিয়েছিল। তাদের আসল লক্ষ্য একটাই, বাড়ির ভেতরে ভাত খাওয়ানোর বদলে জেলের ভাত খাওয়ানো, এবং এদেরকে বাঁচিয়ে রাখা।
আরও পড়ুন: শিল্পী লগ্নজিতার পাশে দাঁড়ানোই হল কাল, শাসকের চাপে বাতিল গায়ক পল্লব কীর্তনিয়ার শো
প্রসঙ্গত, এই খুনের পর থেকে গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এবং অভিযোগ ওঠে, তাদেরকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবেই খুন করা হয়েছে। ব্যক্তিগত শত্রুতার নিরিখেই এই খুন। ঘটনার পরপরই পুলিশ তদন্ত শুরু করে এবং অভিযুক্তদেরকে গ্রেফতার করে। এমনকি একাধিক সাক্ষী, ফরেনসিক রিপোর্ট, পুলিশি তদন্তের রিপোর্ট আর তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে আদালত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করেছে বলে খবর।